মধ্য এশিয়া–চীন বাণিজ্য বাড়ানোর বড় স্বপ্ন দেখছে কাজাখস্তান। কিন্তু ইলি নদীপথ পুনরুজ্জীবনের এই উচ্চাভিলাষী প্রকল্পটি এখন পুরোপুরি আটকে আছে এক বাস্তব সংকটে—প্রবাহ কমে যাওয়া পানি।
ব্যস্ত নদীপথের পতন
সোভিয়েত যুগে ইলি নদী ছিল পণ্য পরিবহনের গুরুত্বপূর্ণ রুট। ১৯৬০ সালে এই পথ দিয়ে ৩৭,৪০০ টন মালামাল পরিবহন হয়। কিন্তু সোভিয়েত–চীন সম্পর্ক খারাপ হওয়া এবং নদীর পানি কমে যাওয়ার ফলে ১৯৯৮ সাল নাগাদ নদীপথ কার্যত অচল হয়ে পড়ে।
পানি কমার পেছনে ছিল দুটি বড় কারণ—কাপচাগাই বাঁধ নির্মাণ ও শিনজিয়াংয়ে চীনের ব্যাপক সেচব্যবস্থা, যেখানে তুলা উৎপাদনের জন্য নদীর পানি বিপুল পরিমাণে সরিয়ে নেওয়া হয়। এর প্রভাবে ইলি নদীর ওপর নির্ভরশীল বালখাশ হ্রদ দ্রুত সংকুচিত হতে থাকে।
চীনের পানিবণ্টন নিয়ন্ত্রণের চাপ
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড বিনিয়োগে সবচেয়ে বড় গ্রহণকারী দেশ হওয়ায় কাজাখস্তান সরাসরি চাপ দিতে পারছে না। যদিও পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে প্রথম সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে, তবু কত পানি ছাড়বে—সেটি নির্ধারণের ক্ষমতা এখনও বেইজিংয়ের হাতে।

অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও অনিশ্চয়তা
ইলি নদীপথ চালু হলে উভয় দেশের বাণিজ্য বাড়বে এবং ভারী যন্ত্রাংশ পরিবহন সস্তা হবে বলে আশা করছে কাজাখস্তান। পারমাণবিক শক্তিকেন্দ্র নির্মাণের সরঞ্জামও নদীপথে আনা সম্ভব হবে।
চীন মেকং নদী প্রকল্পে সমর্থন দিয়েছে এবং পানি-সাশ্রয়ী প্রযুক্তির উন্নয়ন করছে—এসব কারণে কিছু আশাবাদ থাকলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নদীর সাম্প্রতিক বাড়তি প্রবাহ মূলত গলিত হিমবাহের কারণে এসেছে, স্থায়ী সমাধান থেকে নয়।
আশার পাশাপাশি হতাশা
জুলায়েভ আগামী বছর বেইজিংয়ে গিয়ে আলোচনা এগিয়ে নিতে চান। তবে সাবেক নাবিক সোতনিকভ দৃঢ় মতে বলেন, বাস্তবতা কঠিন—“পানি নেই, কিছুই হবে না।”
ইলি_নদী কাজাখস্তান_চীন জলসংকট বাণিজ্য_রুট বালখাশ_হ্রদ
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















