দীর্ঘ বিরতির পর অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চবকসু) নির্বাচনে ইসলামী ছাত্র শিবির-সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল ভাইস-প্রেসিডেন্ট (ভিপি) ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) দুই পদেই নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। অন্যদিকে সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে জয়ী হয়েছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল-সমর্থিত প্রার্থী। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন এই নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল উৎসবমুখর।
শিবির-সমর্থিত প্যানেলের জয়জয়কার
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চবকসু) নির্বাচনে ইসলামী ছাত্র শিবির-সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল ভাইস-প্রেসিডেন্ট (ভিপি) ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। অন্যদিকে সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে জয়ী হয়েছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল-সমর্থিত প্রার্থী।
বৃহস্পতিবার ভোররাত সাড়ে তিনটা পর্যন্ত প্রাপ্ত ফল অনুযায়ী, শিবির-সমর্থিত ইব্রাহিম হোসাইন রনি ভিপি পদে ৭,৯৮৩ ভোটে বিজয়ী হন এবং সাঈদ বিন হাবিব জিএস পদে ৮,০৩১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। ছাত্রদল-সমর্থিত প্রার্থী আয়ুব রহমান এজিএস পদে ৫,২৫৪ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন।
শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ
বুধবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার অভিযোগ এলেও সামগ্রিকভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু ছিল।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন জানিয়েছেন, ভোট গণনা সম্পন্ন হয়েছে এবং বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল প্রকাশের প্রস্তুতি চলছে।
ভোটগ্রহণের কাঠামো ও অংশগ্রহণ
চবকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদে, যেখানে ১৫টি আবাসিক হলের জন্য ১৫টি কেন্দ্র নির্ধারিত ছিল। মোট ৬০টি কক্ষে ৬৮৯টি বুথ স্থাপন করা হয়। বিকেল ৪টার মধ্যে ভোটার উপস্থিতি ছিল প্রায় ৬০ শতাংশ।
ভোটগ্রহণ ও গণনার পুরো প্রক্রিয়া ক্যাম্পাসজুড়ে স্থাপিত ১৪টি বড় এলইডি-স্ক্রিনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
প্রযুক্তি ও ভোটের ধরন
এই নির্বাচনে প্রচলিত ব্যালট পেপার ব্যবহার করা হয় এবং ফলাফল গণনার জন্য ব্যবহৃত হয় অপটিক্যাল মার্ক রিডার (ওএমআর) মেশিন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদে ২৪ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ২২ জন এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে ২১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
অন্যান্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা
খেলাধুলা, সংস্কৃতি, প্রকাশনা, কল্যাণ, গবেষণা ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন পদেও প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি হল ও হোস্টেল সমিতিতে ১৪টি করে পদ ছিল, যেখানে মোট প্রার্থী সংখ্যা ছিল ৯০৮ জন।
নির্বাচনী উৎসব ও প্রত্যাশা
দীর্ঘ বিরতির পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচন শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচনী কর্মকর্তারা আশা করছেন, নতুন নেতৃত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতিকে ইতিবাচক পথে পরিচালিত করবে।
#
চাকসু_নির্বাচন চট্টগ্রাম_বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী_ছাত্র_শিবির ছাত্রদল শিক্ষার্থী_রাজনীতি