গরম দিনের হিসাব, অসম ভার ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন ও ক্লাইমেট সেন্ট্রালের নতুন বিশ্লেষণ বলছে—২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে গড়ে বছরে ৫৭টি করে অতিরিক্ত ‘সুপারহট’ দিন দেখা যেতে পারে; ১৯৯১–২০২০ সময়কার অনুরূপ দিনের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশের চেয়েও বেশি গরম থাকলে তাকে ‘সুপারহট’ ধরা হয়েছে। ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির মতো নীতি না থাকলে সংখ্যাটি নাকি প্রায় দ্বিগুণ হতো। ভারসাম্যহীনতা স্পষ্ট—ছোট দ্বীপরাষ্ট্র ও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশগুলো সবচেয়ে বেশি বাড়তি তাপদিবসের চাপ নেবে, অথচ তাদের কার্বন নিঃসরণ সামান্য। উদাহরণস্বরূপ, পানামায় চার মাসের বেশি অতিরিক্ত ‘সুপারহট’ দিনের আশঙ্কা। বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারত—বড় নির্গমনকারী দেশগুলো—গড়ে কম দিন পেলেও জনসংখ্যা বেশি হওয়ায় ঝুঁকিতে পড়বে বিপুল মানুষ। গবেষকেরা মনে করিয়ে দেন, রেকর্ড ভাঙার আগেই স্বাস্থ্যঝুঁকি শুরু হয়—হিট স্ট্রেস, পানিশূন্যতা, এমনকি গ্রিড ব্যর্থতার হার বাড়ে যখন স্যাঁতসেঁতে গরম (ওয়েট-বাল্ব) দীর্ঘস্থায়ী হয়।
খাপ খাওয়ানো বনাম নির্গমন কমানো
বার্তাটি দ্বিমাত্রিক—অ্যাডাপটেশন এখনই প্রাণ বাঁচাতে পারে, কিন্তু শতকের ‘বাসযোগ্যতা’ নির্ধারণ করবে নিঃসরণ কমানো। শহরগুলো কুল-রুফ, ছায়াযুক্ত ট্রানজিট স্টপ ও বাইরের শ্রমিকদের লক্ষ্য করে সতর্কবার্তা চালু করছে। বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো পিক ক্যাপাসিটি ও ডিমান্ড-রেসপন্স যোগ করছে, কর্মসংস্থান নীতিতে বিশ্রাম-বিরতির নিয়ম হালনাগাদ হচ্ছে। কিন্তু বেসলাইন যত উষ্ণ হয়, খাপ খাওয়ানোর খরচ তত বাড়ে। লেখকদের পরামর্শ—পরিষ্কার বিদ্যুৎ, দক্ষ ভবন ও বৈদ্যুতিক কুলিং দ্রুত স্কেলে আনলে বিপজ্জনক দোরগোড়ায় পৌঁছানোর হার কমবে। একই সঙ্গে স্মরণ করিয়ে দেন—প্রজেকশন মডেলভিত্তিক; ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য, নগর-নকশা ও সামাজিক বাস্তবতা স্থানীয় ফল বদলে দিতে পারে। তবু সারকথা এক—সবচেয়ে খারাপ পথ অনেকটাই এড়িয়ে যাওয়া গেছে, কিন্তু বছরে ডজন ডজন অতিরিক্ত তাপদিবসের ভবিষ্যৎ ঠেকাতে এখনই দ্রুত পদক্ষেপ দরকার।