০৭:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫
বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের দল উদ্ভাবন করেছে নমনীয় ও টেকসই রাডার-শোষণকারী আবরণ; ১,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপেও টিকে থাকে উত্তর আটলান্টিক রাইট তিমির সংখ্যা বাড়ছে—বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীটির পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত উপ-সাহারার ক্ষেতে উড়ে বেড়ানো ছোট বুননপাখি ‘রেড-বিল্ড কুয়েলিয়া’—এক প্রজাতির কৃষিনাশক বিস্ময়, যার সংখ্যা ১৫০ কোটিরও বেশি অডিবলে ‘হ্যারি পটার’ নতুন কণ্ঠে—হ্যারি, হারমায়োনি, রনের ভূমিকায় তরুণ ত্রয়ী বিশ্বের স্মার্টতম নগরীগুলোতে বসবাস কেমন — প্রযুক্তিনির্ভর জীবনের নতুন সংজ্ঞা মঞ্চে বুকে টেপ—কেন করছেন লর্ড, জানালেন ‘আল্ট্রাসাউন্ড’ ট্যুরে ম্যাচা চায়ের বিশ্বজোড়া উন্মাদনা—জাপানি ঐতিহ্যের মাঝে নকল পণ্য, সংকট ও সংস্কৃতির বিকৃতি প্রথমবারের মতো ডাইনোসরের পায়ে খুর দেখা গেল পেনএআইয়ের ‘অ্যাটলাস’ ব্রাউজার: গুগল ক্রোমের আধিপত্যে নতুন চ্যালেঞ্জ দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

বিশ্বের স্মার্টতম নগরীগুলোতে বসবাস কেমন — প্রযুক্তিনির্ভর জীবনের নতুন সংজ্ঞা

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, স্বয়ংচালিত যান, নগদবিহীন অর্থনীতি ও সবুজ জ্বালানির দ্রুত বিকাশ বিশ্বজুড়ে শহরগুলোকে রূপ দিচ্ছে ভবিষ্যতের “স্মার্ট সিটি” হিসেবে। বিশ্ব মেধাস্বত্ব সংস্থার (WIPO) প্রকাশিত ২০২৫ সালের গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স (GII) অনুযায়ী, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে পাঁচটি নগরী — শেনজেন–হংকং–গুয়াংজু, টোকিও–ইয়োকোহামা, সান হোসে–সান ফ্রান্সিসকো, বেইজিং ও সিউল।


প্রযুক্তির ছোঁয়ায় নতুন জীবনধারা

বিশ্বের শীর্ষ ১০০ উদ্ভাবনী নগরী বর্তমানে মোট বৈশ্বিক পেটেন্ট ও ভেঞ্চার ক্যাপিটালের ৭০ শতাংশেরও বেশি অবদান রাখছে। এই তালিকার শীর্ষ পাঁচ শহরেই দেখা যায়, কীভাবে প্রযুক্তি দৈনন্দিন জীবন ও নাগরিক সংস্কৃতিকে বদলে দিচ্ছে।

Alamy Visitors to Tokyo's team Lab Planets step into immersive rooms of light, colour and motion (Credit: Alamy)

১. শেনজেন–হংকং–গুয়াংজু: চীনের প্রযুক্তি ত্রিভুজ

প্রথমবারের মতো চীন এবার GII সূচকে শীর্ষ ১০-এ উঠে এসেছে। ২৪টি উদ্ভাবনী নগরীর মধ্যে শেনজেন–হংকং–গুয়াংজু অঞ্চল সবচেয়ে এগিয়ে।

এখানে প্রযুক্তি জীবনের প্রতিটি স্তরে মিশে আছে। হংকংয়ের বাসিন্দা জেমি রিভার বলেন, “এখানে একদিকে হস্তলিখিত দামের বোর্ড, অন্যদিকে দোকানদার কিউআর কোডে পেমেন্ট নিচ্ছেন — পুরোনো আর নতুনের মিশ্রণে তৈরি এক উচ্ছ্বাসপূর্ণ শহর।”

হংকংয়ের অক্টোপাস কার্ড ১৯৯৭ সালে যাত্রা শুরু করেছিল, পরিবহন ভাড়ার কার্ড হিসেবে; এখন তা দিয়ে পার্কিং মিটার থেকে শুরু করে খাবার পর্যন্ত কেনা যায়।

পর্যটকদের জন্য হংকংয়ের সিম্ফনি অব লাইটস — ৪৩টি ভবনে আলোক ও সংগীতের সমন্বয়ে গড়া চমকপ্রদ রাতের শো — প্রযুক্তি ও শিল্পের নিখুঁত উদাহরণ।

শেনজেনের সাফল্যের গল্প শুরু, ১৯৮০ সালে; যখন এটি চীনের প্রথম বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (SEZ) হিসেবে ঘোষিত হয়। সরকার করছাড় ও উদ্ভাবনী নীতির মাধ্যমে এটি আজ হুয়াওয়ে ও টেনসেন্টের মতো প্রযুক্তি দানবদের কেন্দ্রস্থলে পরিণত করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা লিয়ন হুয়াং বলেন, “এখানকার মেকারস্পেসগুলো — যেমন OCT লফট বা শেকো ডিজাইন সোসাইটি — সবাইকে উন্মুক্তভাবে কাজের সুযোগ দেয়। ছাত্র, শৌখিন উদ্ভাবক, পেশাদার — সবাই মিলে একসঙ্গে তৈরি করছে নতুন ভাবনা।”

শেনজেন এখন বিশ্বের বৃহত্তম ড্রোন শোর রেকর্ডধারী — ১২ হাজার ড্রোন একসঙ্গে উড়ে তৈরি করে আলোর নকশা।

Getty Images Hong Kong dazzles during the nightly Symphony of Lights, which transforms Victoria Harbour into a choreographed display of technology and art (Credit: Getty Images)

২. টোকিও–ইয়োকোহামা: ব্যবহারিক প্রযুক্তির উৎকর্ষ

জাপানের টোকিও–ইয়োকোহামা ক্লাস্টার বিশ্বের মোট আন্তর্জাতিক পেটেন্টের ১০ শতাংশের বেশি জমা দেয়। এখানকার প্রযুক্তি চকচকে নয় — বরং ব্যবহারিক ও মানবিক।

স্থানীয় বাসিন্দা ডানা ইয়াও বলেন, “এখানে প্রযুক্তি মানে উড়ন্ত গাড়ি নয়, বরং এমন একটি কার্ড যা ট্রেন, বাস ও ভেন্ডিং মেশিনে ব্যবহার করা যায়।”

টোকিওর হেন না হোটেল পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয়, যেখানে রোবট স্টাফ ও স্মার্ট বেড ঘুমের তাপমাত্রা সামঞ্জস্য করে। আর ইউরিকামোমে লাইন ট্রেনে যাত্রা মানে চালকবিহীন প্রযুক্তির সরাসরি অভিজ্ঞতা।

শিল্পপ্রেমীদের জন্য teamLab Planets প্রদর্শনীতে, দর্শকের নড়াচড়ার সঙ্গে আলো ও শব্দের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে — এক অনন্য ডিজিটাল অভিজ্ঞতা।


৩. সান হোসে–সান ফ্রান্সিসকো: উদ্ভাবনের বৈশ্বিক রাজধানী

সিলিকন ভ্যালি নামে পরিচিত এই অঞ্চল বিশ্ব ভেঞ্চার ক্যাপিটালের প্রায় ৭ শতাংশের উৎস। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) যুগে উদ্যোক্তাদের ভিড় এখানেই সবচেয়ে ঘন।

স্টার্টআপ উদ্যোক্তা ঋতেশ প্যাটেল বলেন, “এখানে আপনি ডিনারে বসে, সমস্যার কথা বললে পাশের কেউই হয়তো সমাধানের পথ জানে — এক মুহূর্তে সংযোগ ঘটে যায়।”

এই অঞ্চলে প্রযুক্তি মূলধারায় আসার আগেই পরীক্ষা হয়ে যায় — যেমন স্বয়ংচালিত Waymo গাড়ি বা Uber ও Lyft-এর প্রথম যাত্রা এখানেই শুরু।

Getty Images Cheongyecheon Stream in central Seoul offers a glimpse of the city's smart, sustainable design (Credit: Getty Images)

৪. বেইজিং: বিজ্ঞান ও সংস্কৃতির সমন্বিত শহর

চীনের রাজধানী বেইজিং এখন বিশ্বের বৈজ্ঞানিক গবেষণায় শীর্ষে, মোট বৈশ্বিক প্রবন্ধের ৪ শতাংশ এখান থেকেই প্রকাশিত, তবে শহরের আসল বৈশিষ্ট্য — উচ্চ প্রযুক্তির সঙ্গে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ভারসাম্য।

এআই বিশেষজ্ঞ এল ফারেল-কিংসলে বলেন, “বেইজিং এমন এক শহর যেখানে আলিপে ও উইচ্যাটের মতো সুপার অ্যাপ দৈনন্দিন জীবন চালায়, অনুবাদ থেকে খাবার অর্ডার — সব কিছুতেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ছোঁয়া।”

পর্যটকরা চাইলে বাইডুর অ্যাপোলো-রোবোট্যাক্সিতে উঠেই ভবিষ্যতের স্বাদ নিতে পারেন — চালকবিহীন এই ট্যাক্সিতে স্টিয়ারিং হুইল পর্যন্ত নেই।


৫. সিউল: সীমিত সম্পদের দেশ থেকে প্রযুক্তি পরাশক্তি

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউল ৫.৪ শতাংশ বৈশ্বিক পেটেন্টের উৎস, এবং এশিয়ার সবচেয়ে সক্রিয় ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বাজার। দেশের সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদই উদ্ভাবনের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।

বাসিন্দা ক্রিস ওবারম্যান বলেন, “আমাদের প্রজন্মের পূর্বপুরুষরা দারিদ্র্যের মধ্যে বেড়ে উঠেছেন — তাই সমাজে এখনো নতুন কিছু করার ক্ষুধা প্রবল।”

এখানকার দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তি এতটাই অন্তর্ভুক্ত যে ঘরের দরজা খুলতে লাগে, শুধু কোড; আর নগদ অর্থ প্রায় বিলুপ্ত।

Getty Images Beijing seamlessly blends high-tech convenience with deep cultural tradition (Credit: Getty Images)

সিউলের কেন্দ্রের চিয়ংগেচন স্ট্রিম এলাকায় স্বয়ংচালিত বৈদ্যুতিক বাস চলাচল করে, আর শহরজুড়ে ২৪ ঘণ্টার ক্যাশিয়ারবিহীন দোকানগুলো, এআই-নিয়ন্ত্রিত নিরাপত্তায় চলে।

এই নগরীগুলো দেখিয়ে দিচ্ছে — প্রযুক্তি শুধু উদ্ভাবন নয়, বরং এক নতুন জীবনধারার প্রতিচ্ছবি। যেখানে মানুষের সৃজনশীলতা, সংস্কৃতি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একত্রে গড়ছে, ভবিষ্যতের নগর সভ্যতা।


#স্মার্টসিটি #প্রযুক্তি #গ্লোবালইনোভেশনইনডেক্স #চীন #জাপান #দক্ষিণকোরিয়া #যুক্তরাষ্ট্র #সারাক্ষণ_রিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের দল উদ্ভাবন করেছে নমনীয় ও টেকসই রাডার-শোষণকারী আবরণ; ১,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপেও টিকে থাকে

বিশ্বের স্মার্টতম নগরীগুলোতে বসবাস কেমন — প্রযুক্তিনির্ভর জীবনের নতুন সংজ্ঞা

০২:০০:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, স্বয়ংচালিত যান, নগদবিহীন অর্থনীতি ও সবুজ জ্বালানির দ্রুত বিকাশ বিশ্বজুড়ে শহরগুলোকে রূপ দিচ্ছে ভবিষ্যতের “স্মার্ট সিটি” হিসেবে। বিশ্ব মেধাস্বত্ব সংস্থার (WIPO) প্রকাশিত ২০২৫ সালের গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স (GII) অনুযায়ী, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে পাঁচটি নগরী — শেনজেন–হংকং–গুয়াংজু, টোকিও–ইয়োকোহামা, সান হোসে–সান ফ্রান্সিসকো, বেইজিং ও সিউল।


প্রযুক্তির ছোঁয়ায় নতুন জীবনধারা

বিশ্বের শীর্ষ ১০০ উদ্ভাবনী নগরী বর্তমানে মোট বৈশ্বিক পেটেন্ট ও ভেঞ্চার ক্যাপিটালের ৭০ শতাংশেরও বেশি অবদান রাখছে। এই তালিকার শীর্ষ পাঁচ শহরেই দেখা যায়, কীভাবে প্রযুক্তি দৈনন্দিন জীবন ও নাগরিক সংস্কৃতিকে বদলে দিচ্ছে।

Alamy Visitors to Tokyo's team Lab Planets step into immersive rooms of light, colour and motion (Credit: Alamy)

১. শেনজেন–হংকং–গুয়াংজু: চীনের প্রযুক্তি ত্রিভুজ

প্রথমবারের মতো চীন এবার GII সূচকে শীর্ষ ১০-এ উঠে এসেছে। ২৪টি উদ্ভাবনী নগরীর মধ্যে শেনজেন–হংকং–গুয়াংজু অঞ্চল সবচেয়ে এগিয়ে।

এখানে প্রযুক্তি জীবনের প্রতিটি স্তরে মিশে আছে। হংকংয়ের বাসিন্দা জেমি রিভার বলেন, “এখানে একদিকে হস্তলিখিত দামের বোর্ড, অন্যদিকে দোকানদার কিউআর কোডে পেমেন্ট নিচ্ছেন — পুরোনো আর নতুনের মিশ্রণে তৈরি এক উচ্ছ্বাসপূর্ণ শহর।”

হংকংয়ের অক্টোপাস কার্ড ১৯৯৭ সালে যাত্রা শুরু করেছিল, পরিবহন ভাড়ার কার্ড হিসেবে; এখন তা দিয়ে পার্কিং মিটার থেকে শুরু করে খাবার পর্যন্ত কেনা যায়।

পর্যটকদের জন্য হংকংয়ের সিম্ফনি অব লাইটস — ৪৩টি ভবনে আলোক ও সংগীতের সমন্বয়ে গড়া চমকপ্রদ রাতের শো — প্রযুক্তি ও শিল্পের নিখুঁত উদাহরণ।

শেনজেনের সাফল্যের গল্প শুরু, ১৯৮০ সালে; যখন এটি চীনের প্রথম বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (SEZ) হিসেবে ঘোষিত হয়। সরকার করছাড় ও উদ্ভাবনী নীতির মাধ্যমে এটি আজ হুয়াওয়ে ও টেনসেন্টের মতো প্রযুক্তি দানবদের কেন্দ্রস্থলে পরিণত করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা লিয়ন হুয়াং বলেন, “এখানকার মেকারস্পেসগুলো — যেমন OCT লফট বা শেকো ডিজাইন সোসাইটি — সবাইকে উন্মুক্তভাবে কাজের সুযোগ দেয়। ছাত্র, শৌখিন উদ্ভাবক, পেশাদার — সবাই মিলে একসঙ্গে তৈরি করছে নতুন ভাবনা।”

শেনজেন এখন বিশ্বের বৃহত্তম ড্রোন শোর রেকর্ডধারী — ১২ হাজার ড্রোন একসঙ্গে উড়ে তৈরি করে আলোর নকশা।

Getty Images Hong Kong dazzles during the nightly Symphony of Lights, which transforms Victoria Harbour into a choreographed display of technology and art (Credit: Getty Images)

২. টোকিও–ইয়োকোহামা: ব্যবহারিক প্রযুক্তির উৎকর্ষ

জাপানের টোকিও–ইয়োকোহামা ক্লাস্টার বিশ্বের মোট আন্তর্জাতিক পেটেন্টের ১০ শতাংশের বেশি জমা দেয়। এখানকার প্রযুক্তি চকচকে নয় — বরং ব্যবহারিক ও মানবিক।

স্থানীয় বাসিন্দা ডানা ইয়াও বলেন, “এখানে প্রযুক্তি মানে উড়ন্ত গাড়ি নয়, বরং এমন একটি কার্ড যা ট্রেন, বাস ও ভেন্ডিং মেশিনে ব্যবহার করা যায়।”

টোকিওর হেন না হোটেল পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয়, যেখানে রোবট স্টাফ ও স্মার্ট বেড ঘুমের তাপমাত্রা সামঞ্জস্য করে। আর ইউরিকামোমে লাইন ট্রেনে যাত্রা মানে চালকবিহীন প্রযুক্তির সরাসরি অভিজ্ঞতা।

শিল্পপ্রেমীদের জন্য teamLab Planets প্রদর্শনীতে, দর্শকের নড়াচড়ার সঙ্গে আলো ও শব্দের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে — এক অনন্য ডিজিটাল অভিজ্ঞতা।


৩. সান হোসে–সান ফ্রান্সিসকো: উদ্ভাবনের বৈশ্বিক রাজধানী

সিলিকন ভ্যালি নামে পরিচিত এই অঞ্চল বিশ্ব ভেঞ্চার ক্যাপিটালের প্রায় ৭ শতাংশের উৎস। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) যুগে উদ্যোক্তাদের ভিড় এখানেই সবচেয়ে ঘন।

স্টার্টআপ উদ্যোক্তা ঋতেশ প্যাটেল বলেন, “এখানে আপনি ডিনারে বসে, সমস্যার কথা বললে পাশের কেউই হয়তো সমাধানের পথ জানে — এক মুহূর্তে সংযোগ ঘটে যায়।”

এই অঞ্চলে প্রযুক্তি মূলধারায় আসার আগেই পরীক্ষা হয়ে যায় — যেমন স্বয়ংচালিত Waymo গাড়ি বা Uber ও Lyft-এর প্রথম যাত্রা এখানেই শুরু।

Getty Images Cheongyecheon Stream in central Seoul offers a glimpse of the city's smart, sustainable design (Credit: Getty Images)

৪. বেইজিং: বিজ্ঞান ও সংস্কৃতির সমন্বিত শহর

চীনের রাজধানী বেইজিং এখন বিশ্বের বৈজ্ঞানিক গবেষণায় শীর্ষে, মোট বৈশ্বিক প্রবন্ধের ৪ শতাংশ এখান থেকেই প্রকাশিত, তবে শহরের আসল বৈশিষ্ট্য — উচ্চ প্রযুক্তির সঙ্গে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ভারসাম্য।

এআই বিশেষজ্ঞ এল ফারেল-কিংসলে বলেন, “বেইজিং এমন এক শহর যেখানে আলিপে ও উইচ্যাটের মতো সুপার অ্যাপ দৈনন্দিন জীবন চালায়, অনুবাদ থেকে খাবার অর্ডার — সব কিছুতেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ছোঁয়া।”

পর্যটকরা চাইলে বাইডুর অ্যাপোলো-রোবোট্যাক্সিতে উঠেই ভবিষ্যতের স্বাদ নিতে পারেন — চালকবিহীন এই ট্যাক্সিতে স্টিয়ারিং হুইল পর্যন্ত নেই।


৫. সিউল: সীমিত সম্পদের দেশ থেকে প্রযুক্তি পরাশক্তি

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউল ৫.৪ শতাংশ বৈশ্বিক পেটেন্টের উৎস, এবং এশিয়ার সবচেয়ে সক্রিয় ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বাজার। দেশের সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদই উদ্ভাবনের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।

বাসিন্দা ক্রিস ওবারম্যান বলেন, “আমাদের প্রজন্মের পূর্বপুরুষরা দারিদ্র্যের মধ্যে বেড়ে উঠেছেন — তাই সমাজে এখনো নতুন কিছু করার ক্ষুধা প্রবল।”

এখানকার দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তি এতটাই অন্তর্ভুক্ত যে ঘরের দরজা খুলতে লাগে, শুধু কোড; আর নগদ অর্থ প্রায় বিলুপ্ত।

Getty Images Beijing seamlessly blends high-tech convenience with deep cultural tradition (Credit: Getty Images)

সিউলের কেন্দ্রের চিয়ংগেচন স্ট্রিম এলাকায় স্বয়ংচালিত বৈদ্যুতিক বাস চলাচল করে, আর শহরজুড়ে ২৪ ঘণ্টার ক্যাশিয়ারবিহীন দোকানগুলো, এআই-নিয়ন্ত্রিত নিরাপত্তায় চলে।

এই নগরীগুলো দেখিয়ে দিচ্ছে — প্রযুক্তি শুধু উদ্ভাবন নয়, বরং এক নতুন জীবনধারার প্রতিচ্ছবি। যেখানে মানুষের সৃজনশীলতা, সংস্কৃতি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একত্রে গড়ছে, ভবিষ্যতের নগর সভ্যতা।


#স্মার্টসিটি #প্রযুক্তি #গ্লোবালইনোভেশনইনডেক্স #চীন #জাপান #দক্ষিণকোরিয়া #যুক্তরাষ্ট্র #সারাক্ষণ_রিপোর্ট