০২:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
মিশরে সূচালো দাঁতওয়ালা ৮ কোটি বছর আগের সামুদ্রিক কুমিরের জীবাশ্ম আবিষ্কার আমেরিকার জন্মকথা—ইতিহাসের দ্বন্দ্ব, স্বাধীনতার গল্প ও মানবতার প্রতিচ্ছবি প্রযুক্তির অবক্ষয় ও পুনর্জাগরণের প্রশ্নে কোরি ডাক্টরোর নতুন দৃষ্টিভঙ্গি মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৫৫) দক্ষিণ চীন সাগর ইস্যুতে আসিয়ান ঐক্যবদ্ধ কিস্তিতে কেনাকাটার নতুন যুগে তরুণ প্রজন্মের সহজ ঋণে গভীর ফাঁদ শ্রদ্ধাঞ্জলি: বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ হামিদুর রহমান এর ৫৪তম শাহাদাত বার্ষিকী সিরাজগঞ্জ কারাগারে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু সেনাপ্রধানের সাথে পাকিস্তানের এর জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান এর সৌজন্য সাক্ষাৎ ছয়তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে শিশুর মৃত্যু

আদালতে চতুর্থ দিনের শুনানি শেষে জামায়াতের দাবি—তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে এবারের নির্বাচন সম্ভব নয়

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা শুনানি চলছে

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন থেকে সৃষ্ট আপিল শুনানি অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ বেঞ্চে টানা চতুর্থ দিনের মতো শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আদালত আজ বুধবার পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করেছেন।


ত্রয়োদশ সংশোধনী থেকে শুরু করে পঞ্চদশ সংশোধনী পর্যন্ত পটভূমি

১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী পাস হয়। এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।

এরপর ২০১১ সালের ১০ মে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রায় দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করে। ওই রায়ের পর ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন, যেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপ করা হয়। একই বছরের ৩ জুলাই প্রকাশিত হয় গেজেট।


পুনর্বিবেচনার আবেদন ও আপিল শুনানির ধারাবাহিকতা

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি, পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক ও একজন ব্যক্তি আবেদন করেন। এসব রিভিউ আবেদন থেকে আপিল শুনানির অনুমতি (লিভ টু আপিল) মঞ্জুর করে গত ২৭ আগস্ট আপিল বিভাগ ২১ অক্টোবর শুনানির দিন নির্ধারণ করে।

এদিকে, গত ১৭ ডিসেম্বর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনীর ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করে তা বাতিলের রায় দেন।


জামায়াতের অবস্থান: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়

জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে শুনানি শেষ করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের বলেন, “সর্বোচ্চ আদালত যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে দেন, তবুও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আয়োজন করা সম্ভব নয়।”

তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী সংসদ ভেঙে যাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের কথা রয়েছে। কিন্তু এখন কোনো সংসদ কার্যকর নেই—এটি ভেঙে গেছে এক বছরেরও বেশি সময় আগে, এবং বর্তমানে একটি অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। এসব বাস্তব কারণে আদালতের রায় আসলেও আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।


সমাপ্তি ভাবনা

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে এই দীর্ঘ আইনি লড়াই বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। আপিল বিভাগে চলমান এই শুনানি ভবিষ্যতের নির্বাচনী কাঠামো নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো।

#তত্ত্বাবধায়ক_সরকার, সুপ্রিম_কোর্ট, ত্রয়োদশ_সংশোধনী, পঞ্চদশ_সংশোধনী, জামায়াতে_ইসলামী, আপিল_বিভাগ, নির্বাচন_২০২৫, সংবিধান_বিতর্ক, সারাক্ষণ_রিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

মিশরে সূচালো দাঁতওয়ালা ৮ কোটি বছর আগের সামুদ্রিক কুমিরের জীবাশ্ম আবিষ্কার

আদালতে চতুর্থ দিনের শুনানি শেষে জামায়াতের দাবি—তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে এবারের নির্বাচন সম্ভব নয়

০৭:৫৬:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা শুনানি চলছে

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন থেকে সৃষ্ট আপিল শুনানি অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ বেঞ্চে টানা চতুর্থ দিনের মতো শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আদালত আজ বুধবার পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করেছেন।


ত্রয়োদশ সংশোধনী থেকে শুরু করে পঞ্চদশ সংশোধনী পর্যন্ত পটভূমি

১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী পাস হয়। এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।

এরপর ২০১১ সালের ১০ মে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রায় দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করে। ওই রায়ের পর ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন, যেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপ করা হয়। একই বছরের ৩ জুলাই প্রকাশিত হয় গেজেট।


পুনর্বিবেচনার আবেদন ও আপিল শুনানির ধারাবাহিকতা

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি, পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক ও একজন ব্যক্তি আবেদন করেন। এসব রিভিউ আবেদন থেকে আপিল শুনানির অনুমতি (লিভ টু আপিল) মঞ্জুর করে গত ২৭ আগস্ট আপিল বিভাগ ২১ অক্টোবর শুনানির দিন নির্ধারণ করে।

এদিকে, গত ১৭ ডিসেম্বর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনীর ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করে তা বাতিলের রায় দেন।


জামায়াতের অবস্থান: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়

জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে শুনানি শেষ করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের বলেন, “সর্বোচ্চ আদালত যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে দেন, তবুও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আয়োজন করা সম্ভব নয়।”

তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী সংসদ ভেঙে যাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের কথা রয়েছে। কিন্তু এখন কোনো সংসদ কার্যকর নেই—এটি ভেঙে গেছে এক বছরেরও বেশি সময় আগে, এবং বর্তমানে একটি অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। এসব বাস্তব কারণে আদালতের রায় আসলেও আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।


সমাপ্তি ভাবনা

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে এই দীর্ঘ আইনি লড়াই বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। আপিল বিভাগে চলমান এই শুনানি ভবিষ্যতের নির্বাচনী কাঠামো নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো।

#তত্ত্বাবধায়ক_সরকার, সুপ্রিম_কোর্ট, ত্রয়োদশ_সংশোধনী, পঞ্চদশ_সংশোধনী, জামায়াতে_ইসলামী, আপিল_বিভাগ, নির্বাচন_২০২৫, সংবিধান_বিতর্ক, সারাক্ষণ_রিপোর্ট