দেশের হাজারো মাদ্রাসার জন্য গ্রামীণফোনের করপোরেট সিম ব্যবহার এখন বাধ্যতামূলক করেছে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড। বোর্ডের দাবি, এই সিমের মাধ্যমে যোগাযোগ আরও দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য হবে। তবে অনেক মাদ্রাসা বলছে, নতুন নম্বর চালু করলে প্রশাসনিক ও অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগে জটিলতা তৈরি হচ্ছে।
বোর্ডের নির্দেশনা: করপোরেট সিম ব্যবহারে বাধ্যবাধকতা
বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড দেশের ৯ হাজার ৪৩৬টি দাখিল, আলিম ও কামিল মাদ্রাসায় গ্রামীণফোন লিমিটেডের করপোরেট মোবাইল সিম সরবরাহ করেছিল। এই সিমের মাধ্যমে বোর্ডের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র গ্রহণ ও প্রেরণ, ওটিপি যাচাইসহ সব সরকারি কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়।
কিন্তু দেখা গেছে, এসব মাদ্রাসার মধ্যে ৫ হাজার ১১৫টি প্রতিষ্ঠান নিয়মিতভাবে সিম ব্যবহার করছে না। এতে বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগে সমস্যা হচ্ছে। এ কারণে ২৯ জুলাই নতুন অফিস আদেশ দিয়ে গ্রামীণফোনের করপোরেট সিম ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে শিক্ষা অধিদফতর।
কেন অনেক মাদ্রাসা ব্যবহার করছে না
অনেক মাদ্রাসা জানিয়েছে, তারা আগে থেকেই নির্দিষ্ট একটি নম্বর ব্যবহার করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাদ্রাসা বোর্ড, ব্যানবেইস ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। নতুন সিম চালু করলে পুরনো নম্বর পরিবর্তনের কারণে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।
একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসা প্রধান বলেন, “আগের নম্বরেই আমরা প্রশাসন ও অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি। নতুন নম্বর চালু করলে অনেকে বিভ্রান্ত হয়। তবে বোর্ডের নির্দেশ মেনে শিগগির গ্রামীণের সিম চালু করব।”
বোর্ডের ব্যাখ্যা ও উদ্দেশ্য
বোর্ডের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ছালেহ আহমাদের স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়েছে, “মাদ্রাসাগুলোর সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ রক্ষার জন্য গ্রামীণফোনের করপোরেট প্রি-পেইড সিম দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠান এটি ব্যবহার করছে না, ফলে জরুরি সময় যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটছে।”
তিনি আরও বলেন, “গ্রামীণফোনের সঙ্গে একটি চুক্তি থাকার কারণেই এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
চেয়ারম্যানের বক্তব্য: খরচ কম, সেবা ভালো
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিঞা মো. নূরুল হক বলেন, “করপোরেট সিম ব্যবহারে খরচ কম, সেবার মানও ভালো। বিভিন্ন অপারেটর ব্যবহারে নেটওয়ার্ক সমস্যা হয়, তাই বোর্ড এককভাবে গ্রামীণফোনের সিম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
তবে কেন সরকারি টেলিটকের বদলে বেসরকারি অপারেটর গ্রামীণফোনকে বেছে নেওয়া হয়েছে—জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এই সিদ্ধান্ত আমার আগেই নেওয়া হয়েছিল।”
বিতর্ক ও স্বচ্ছতার প্রশ্ন
অধ্যাপক ছালেহ আহমাদের স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে আইন–শৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের ১০ম সভার কার্যবিবরণীর উল্লেখ থাকলেও তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়নি বা আদেশের সঙ্গে সংযুক্তও করা হয়নি। ফলে এই সিদ্ধান্তের স্বচ্ছতা ও চুক্তির বিস্তারিত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
#মাদ্রাসা #গ্রামীণফোন #করপোরেটসিম #শিক্ষাবোর্ড #বাংলাদেশমাদ্রাসাশিক্ষাবোর্ড #শিক্ষাসংবাদ #সারাক্ষণরিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















