হিন্দুদের ওপর হামলা, মন্দির ভাঙচুর ও ইসকনের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ জানিয়েছে সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা। সংগঠনটি বলছে, নির্বাচনের আগে দেশে সাম্প্রদায়িক শক্তি আবার সক্রিয় হয়ে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে সহিংসতা উসকে দিচ্ছে।
সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চার বিবৃতি
২৮ অক্টোবর, ২০২৫—অস্ত্র উঁচিয়ে হিন্দুদের হত্যা, মন্দির ভাঙচুর এবং সারা দেশব্যাপী ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিশেষত ইসকনের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচারণার প্রতিবাদে সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
গাজীপুরের টঙ্গির টিএনটি বিটিসিএল কলোনি জামে মসজিদের খতিব মুফতি মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ মিয়াজিকে পঞ্চগড় শহরের হ্যালিপ্যাড বাজার এলাকায় গাছের সাথে হাত-পা বাঁধা, বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক মহলবিশেষ, আন্তর্জাতিক হিন্দু ধর্মীয় সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধের আওয়াজ তোলার পাশাপাশি ধর্মীয় সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে হত্যা এবং তাদের মন্দির ও বিগ্রহ ধ্বংসের হুমকির মাধ্যমে সারা দেশব্যাপী পরিকল্পিত অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এতে সংখ্যালঘু জনমনে গভীর উদ্বেগ ও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ধর্মীয় বৈষম্যবিরোধী মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ে সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা এই কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
মিথ্যা প্রচারণায় সাম্প্রদায়িক উসকানি
বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রদায়িক বৈষম্য সৃষ্টিকারী অশুভ মহল বাংলাদেশকে সংখ্যালঘুশূন্য করার জন্য নির্বাচনের আগে-পরে সহিংসতার তৎপরতা বাড়িয়েছে। তারা সাধারণ ধর্মপ্রাণ জনগণের মাঝে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে ও প্রচারণা চালিয়ে উসকানি দিয়ে চলেছে।
বিবৃতিতে গভীর দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলা হয়, এই জঘন্য তৎপরতা সরকার ও প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘটলেও তারা রহস্যজনক নীরবতা পালন করছে এবং অনেক সময় ঘটনাসমূহ অস্বীকার করছে।

ঐক্যমোর্চার আহ্বান
সংগঠনটি অভিযোগ করে বলেছে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক দলগুলো ও সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।
সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা অনতিবিলম্বে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সারা দেশব্যাপী সহিংসতা বন্ধ, হিন্দুদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচার এবং আন্তর্জাতিক ধর্মীয় সংগঠন ইসকনের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার রোধে সরকারের আশু পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।
এছাড়া, সংগঠনটি দেশের সর্বস্তরের গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক জনগণ, গণমাধ্যম কর্মী এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে সাম্প্রদায়িক শক্তির মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানায়।
সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চার সদস্য সংগঠনসমূহ
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ; বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ; বাংলাদেশ বৌদ্ধ ফেডারেশন; বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন; আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন); মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি; বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট (প্রভাষ-পলাশ); বাংলাদেশ ঋষি পঞ্চায়েত ফোরাম; বাংলাদেশ সনাতন পার্টি; বাংলাদেশ রবিদাস ফোরাম; শ্রীশ্রী ভোলানন্দগিরি আশ্রম ট্রাস্ট; বাংলাদেশ রবিদাস উন্নয়ন পরিষদ; বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম; মাইনোরিটি রাইটস ফোরাম (বাংলাদেশ); সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন; বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ; বাংলাদেশ মতুয়া মহাসংঘ; জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ; বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতি; বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি; বাংলাদেশ হিন্দু লীগ; বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ, শাহজাহানপুর; জাতীয় আদিবাসী পরিষদ; বাংলাদেশ সনাতন কল্যাণ জোট; বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাসংঘ; বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশন; তেলেগু সমাজ উন্নয়ন সংঘ, ওয়ারী; শ্রীশ্রী মহানামযজ্ঞ পরিচালনা পরিষদ, দিনাজপুর; তেলেগু কলোনি, ধলপুর, যাত্রাবাড়ী; জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন; স্বজন (সাংবাদিক সংগঠন); বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট; অনুভব, বাংলাদেশ; শারদাঞ্জলি ফোরাম; বাংলাদেশ হিন্দু সেবক সংঘ; শ্রীকৃষ্ণ ভক্তসেবা সংঘ; বাংলাদেশ সনাতন সম্প্রীতি পরিষদ; ভক্ত সংঘ বাংলাদেশ, কেন্দ্রীয় কমিটি; সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ; সনাতন সংগঠন, বাংলাদেশ; রিসার্চ অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট (রিও); উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরাম ও বাংলাদেশ হিন্দু ঐক্য ফোরাম।
#সংখ্যালঘু_ঐক্যমোর্চা #ইসকন #ধর্মীয়_সহিংসতা #বাংলাদেশ #মানবাধিকার #অসাম্প্রদায়িকতা
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















