প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস সতর্ক করে বলেছেন, আসন্ন ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে। দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন প্রভাবশালী শক্তি নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “হঠাৎ আক্রমণও হতে পারে, তবে যত বাধাই আসুক, তা অতিক্রম করেই সফল করতে হবে নির্বাচন।”
নির্বাচন ঘিরে অধ্যাপক ইউনুসের সতর্কবার্তা
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস বুধবার এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বলেন, দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে অনেক শক্তি নির্বাচন নষ্ট করার চেষ্টা করবে। এগুলো ছোট কোনো শক্তি নয়, বরং বেশ প্রভাবশালী বলেই তাদের তৎপরতা উদ্বেগের কারণ হতে পারে। “এটি একটি কঠিন নির্বাচন হবে, কিন্তু যত বাধাই আসুক, আমাদের তা অতিক্রম করতে হবে,”—বলেন ইউনুস।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন জামুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকেই অধ্যাপক ইউনুস এসব কথা বলেন।
নির্বাচন প্রস্তুতি বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক
বুধবার সকালে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্যালোচনা করা হয়। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা সভাপতিত্ব করেন। পরে বিকেলে পররাষ্ট্র সেবা একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বৈঠকে মূলত চারটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়—
১. নির্বাচনকালীন সময়ে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি ও দায়িত্ব বণ্টন,
২. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য ও বিভ্রান্তি মোকাবিলা,
৩. নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ,
৪. সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিকল্পিত প্রচারণার আশঙ্কা
অধ্যাপক ইউনুস বলেন, নির্বাচনের সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য ও বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালানো হতে পারে। তিনি সতর্ক করে বলেন, “দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা চালিয়ে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা হবে।”
তিনি আরও জানান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি ছবি ও ভিডিওও অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়া হতে পারে। এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়বস্তু দ্রুত শনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
জনগণের সচেতনতা ও অংশগ্রহণ বৃদ্ধির ওপর জোর
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর করতে হলে জনগণের সচেতনতা বাড়াতে হবে। মানুষকে জানতে হবে ভোটকেন্দ্রে আচরণবিধি, ভোট প্রদানের নিয়ম এবং কোনো গোলযোগ দেখা দিলে করণীয় কী।
তিনি উল্লেখ করেন, নাগরিকদের সক্রিয় অংশগ্রহণই নির্বাচনকে সফল করতে পারে। এজন্য শিক্ষা ও প্রচারণার মাধ্যমে ভোটারদের প্রস্তুত করাই এখন সবচেয়ে জরুরি।
প্রচার উপকরণ তৈরির আহ্বান
এই প্রেক্ষিতে অধ্যাপক ইউনুস প্রস্তাব দেন—নির্বাচন কমিশন ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে আরও বেশি টেলিভিশন বিজ্ঞাপন, প্রামাণ্যচিত্র ও সংক্ষিপ্ত ভিডিও তৈরি করতে হবে। এসব প্রচার উপকরণ ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে দিতে হবে, যাতে ভোটাররা আগেভাগে নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন ও প্রস্তুত হতে পারেন।
#নির্বাচন২০২৫ #মুহাম্মদইউনুস #বাংলাদেশনির্বাচন #ভুয়াপ্রচার #নির্বাচনপ্রস্তুতি
সারাক্ষণ রিপোর্ট 

















