০১:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫
মাস্টারের কন্যার অজানা গল্প: জন চিভারের পরিবার ও সাহিত্যিক জীবনের অন্তর্দৃষ্টি ম্যাগা যুগের ভাবনার উৎস খোঁজে—‘ফিউরিয়াস মাইন্ডস’-এর গভীর বিশ্লেষণ মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৬২) ৩০০ ডলারের ‘স্মার্ট’ পানির বোতল বলছে, সুস্থতা এখন বিলাসের অংশ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫১) মৃতদের আহ্বান: মেক্সিকোর মৃত্যু সংস্কৃতির পুনর্মূল্যায়ন সীতাকুণ্ডে প্রার্থী ঘোষণাকে ঘিরে সহিংসতার অভিযোগে বিএনপির চার নেতাকে বহিষ্কার ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশের প্রশাসনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে শেয়ারবাজারে টানা পতন: ডিএসই ও সিএসই-তে লেনদেন কমেছে অনলাইন জুয়া লেনদেন বন্ধে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসকে কঠোর নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫১)

  • নাঈম হক
  • ০৯:০০:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫
  • 8

এমন এই মুহূর্তে কয়েকজনের একটি দল অফিসারদেরকে ধাওয়া করতে শুরু করলে

ফ্রিপোর্টে নোঙরের পর পরই মার্কিন সেনারা জাহাজে বিদ্রোহ করে বসে। জাহাজের যাত্রীদের মধ্যে সামরিক অফিসার ও রেডক্রসের কয়েকজন কর্মচারি ছিলেন, তারা সবাই মহিলা, জাহাজে তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা ছিল। যেমন: তারা জাহাজের ডেকে থাকতের, তাদের খাদ্যও ছিল উন্নতমানের। তারা ডেকের নিচেয় “জিআই”-য়ের বাসিন্দাদের সঙ্গে মেলামেশা করতেন না।

একদিন, সন্ধ্যার পরে, উপরের ডেকের অতিথিরা আনন্দ ফুর্তিতে মেতে ওঠেন, চলে পানাহার, নাচ। সাধারণ সেনাদেরকে এই পার্টিতে ডাকা হয়নি। ফলে ডেকের নিচের হতাশাগ্রস্ত সেনারা পার্টিকে উদ্দেশ্য করে চীৎকার, তীক্ষ্মস্বরে চেঁচিয়ে ওঠা, উচ্চস্বরে মুণ্ডুপাত ইত্যাদি শুরু করে দেয়। বিশেষ করে সেইদিন তাদের মানসিক অবস্থা আরো বেশি বিপর্যন্ত হওয়ার প্রধান কারণ ছিল যে উপরের ডেকের ‘যাত্রীরা’ নিয়মিতভাবে আইসক্রীম খায়, কিন্তু সাধারণ সেনাদের ভাগ্যে কালেভদ্রেও আইসক্রীম খাওয়ার সৌভাগ্য হয় না।

ইতো আত্মাজীবনীতে এই ঘটনার কথা বলতে গিয়ে লেখেন যে। “একজন সামরিক অফিসার সামনের উচ্চতর ডেকে উঠে দাঁড়ান এবং চীৎকার করে আমাদেরকে চীৎকার চেঁচামেচি বন্ধ করে শান্তশিষ্ট হতে বলেন; আর যদি মা মান্য কবি তো আমাদেরকে কোর্ট মার্শালের সামনে হাজির করা হবে।

অসামরিক সেনারা, তারা তো এই ধরনের আদেশনির্দেশ পালনে অভ্যস্ত নয়, অফিসারের ‘দাবি’ শুনে তারা বরং পাল্টা আরো চীৎকার চেঁচামেচি শুরু করে। এবারে, আমাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলার জন্য ঘটনাস্থলে জাহাজের ক্যাপ্টেন আসেন।

কিন্তু তিনি তো “মার্চেন্ট মেরিন”, নৌবাহিনী বা সেনাবাহিনীর কেউ মন। কাজেই কেউ তাঁকে পাত্তা দেয় না। সেনাদলের এক অফিসার, তাঁর ব্যাঙ্ক। মেজর, তিনি আমাদের দিকে এগিয়ে এলেন, বললেন যে আমরা বিদ্রোহ করেছি এবং তাই তিনি তাৎক্ষণিক ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর বিধিব্যবস্থা মতো আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। প্রায় একই সময়ে তিনজন কি চারজন অফিসার জাহাজের পেছন দিক থেকে আমাদের ডেকে চলে এলেন এবং আমাদের নাম জিজ্ঞেস করতে লাগলেন।

সেনারা তখন অফিসারদেরকে আচ্ছামতো বিদ্রূপ উপহাস করতে থাকে। অফিসারের দল তখন সেনাদেরকে যার যেখানে স্থান সেখানে ফিরে যেতে বলেন। এমন এই মুহূর্তে কয়েকজনের একটি দল অফিসারদেরকে ধাওয়া করতে শুরু করলে, অফিসাররা তড়িঘড়ি নিজেদের ডেকের নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে যান। তা যাবেনই তো। কারণ, ক্ষুব্ধ ক্রুদ্ধ ধাওয়াকারিরা প্রচুর গালিগালাজ তো করছিলই, কেউ কেউ হাতের কাছে যা পেয়েছে তা-ই ছুড়ে মারতে দ্বিধা করেনি।”

(চলবে)

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫০)

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫০)

জনপ্রিয় সংবাদ

মাস্টারের কন্যার অজানা গল্প: জন চিভারের পরিবার ও সাহিত্যিক জীবনের অন্তর্দৃষ্টি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫১)

০৯:০০:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫

এমন এই মুহূর্তে কয়েকজনের একটি দল অফিসারদেরকে ধাওয়া করতে শুরু করলে

ফ্রিপোর্টে নোঙরের পর পরই মার্কিন সেনারা জাহাজে বিদ্রোহ করে বসে। জাহাজের যাত্রীদের মধ্যে সামরিক অফিসার ও রেডক্রসের কয়েকজন কর্মচারি ছিলেন, তারা সবাই মহিলা, জাহাজে তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা ছিল। যেমন: তারা জাহাজের ডেকে থাকতের, তাদের খাদ্যও ছিল উন্নতমানের। তারা ডেকের নিচেয় “জিআই”-য়ের বাসিন্দাদের সঙ্গে মেলামেশা করতেন না।

একদিন, সন্ধ্যার পরে, উপরের ডেকের অতিথিরা আনন্দ ফুর্তিতে মেতে ওঠেন, চলে পানাহার, নাচ। সাধারণ সেনাদেরকে এই পার্টিতে ডাকা হয়নি। ফলে ডেকের নিচের হতাশাগ্রস্ত সেনারা পার্টিকে উদ্দেশ্য করে চীৎকার, তীক্ষ্মস্বরে চেঁচিয়ে ওঠা, উচ্চস্বরে মুণ্ডুপাত ইত্যাদি শুরু করে দেয়। বিশেষ করে সেইদিন তাদের মানসিক অবস্থা আরো বেশি বিপর্যন্ত হওয়ার প্রধান কারণ ছিল যে উপরের ডেকের ‘যাত্রীরা’ নিয়মিতভাবে আইসক্রীম খায়, কিন্তু সাধারণ সেনাদের ভাগ্যে কালেভদ্রেও আইসক্রীম খাওয়ার সৌভাগ্য হয় না।

ইতো আত্মাজীবনীতে এই ঘটনার কথা বলতে গিয়ে লেখেন যে। “একজন সামরিক অফিসার সামনের উচ্চতর ডেকে উঠে দাঁড়ান এবং চীৎকার করে আমাদেরকে চীৎকার চেঁচামেচি বন্ধ করে শান্তশিষ্ট হতে বলেন; আর যদি মা মান্য কবি তো আমাদেরকে কোর্ট মার্শালের সামনে হাজির করা হবে।

অসামরিক সেনারা, তারা তো এই ধরনের আদেশনির্দেশ পালনে অভ্যস্ত নয়, অফিসারের ‘দাবি’ শুনে তারা বরং পাল্টা আরো চীৎকার চেঁচামেচি শুরু করে। এবারে, আমাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলার জন্য ঘটনাস্থলে জাহাজের ক্যাপ্টেন আসেন।

কিন্তু তিনি তো “মার্চেন্ট মেরিন”, নৌবাহিনী বা সেনাবাহিনীর কেউ মন। কাজেই কেউ তাঁকে পাত্তা দেয় না। সেনাদলের এক অফিসার, তাঁর ব্যাঙ্ক। মেজর, তিনি আমাদের দিকে এগিয়ে এলেন, বললেন যে আমরা বিদ্রোহ করেছি এবং তাই তিনি তাৎক্ষণিক ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর বিধিব্যবস্থা মতো আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। প্রায় একই সময়ে তিনজন কি চারজন অফিসার জাহাজের পেছন দিক থেকে আমাদের ডেকে চলে এলেন এবং আমাদের নাম জিজ্ঞেস করতে লাগলেন।

সেনারা তখন অফিসারদেরকে আচ্ছামতো বিদ্রূপ উপহাস করতে থাকে। অফিসারের দল তখন সেনাদেরকে যার যেখানে স্থান সেখানে ফিরে যেতে বলেন। এমন এই মুহূর্তে কয়েকজনের একটি দল অফিসারদেরকে ধাওয়া করতে শুরু করলে, অফিসাররা তড়িঘড়ি নিজেদের ডেকের নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে যান। তা যাবেনই তো। কারণ, ক্ষুব্ধ ক্রুদ্ধ ধাওয়াকারিরা প্রচুর গালিগালাজ তো করছিলই, কেউ কেউ হাতের কাছে যা পেয়েছে তা-ই ছুড়ে মারতে দ্বিধা করেনি।”

(চলবে)

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫০)

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫০)