জাপানের বিমানযাত্রার খাদ্য সংস্কৃতির উন্নতি
জাপানজুড়ে বিমান পরিবহন কোম্পানিগুলো, যেমন জাপান এয়ারলাইনস (JAL) এবং অল নিপ্পন এয়ারওয়েজ (ANA), তাদের বিমানের খাবারের মান উন্নত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বিশেষ করে, প্রিমিয়াম শ্রেণীর যাত্রীদের জন্য খাবারের অভিজ্ঞতা নতুন দিগন্তে পৌঁছেছে। এই পরিবর্তনগুলো এমনভাবে আনা হয়েছে যাতে যাত্রীরা সিজনাল উপাদান এবং শেফদের বিশেষজ্ঞদের সুপারিশের মাধ্যমে একটি আরও সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন।
ANA এবং JAL এর খাবারের উৎকর্ষতা
ANA-এর ‘দ্য কনোসিওর’ প্রোগ্রাম, যা ২০১৩ সালে প্রিমিয়াম শ্রেণীর জন্য চালু করা হয়েছিল, এটি অত্যন্ত সিজনাল উপাদান এবং সুপরিচিত শেফদের দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে। এটির লক্ষ্য জাপানের শান (শরৎকালীন উপাদান) ধারণাকে তুলে ধরা এবং এই প্রোগ্রামে বেশ কয়েকজন মিশেলিন তারকা শেফ যুক্ত হয়েছেন, যেমন কেঞ্চিরো সেকিয়া এবং ইউহেই কুরিতা। শেফরা রান্নার মাধ্যমে জাপানী সিজনাল ফ্লেভারের সাথে যাত্রীদের অভিজ্ঞতা আরও উন্নত করেন।
একইভাবে, জাপান এয়ারলাইনস প্রিমিয়াম শ্রেণীর যাত্রীদের জন্য উচ্চমানের খাবার সরবরাহ করছে, যেখানে সিজনাল উপাদান ও শেফদের সঙ্গে অংশীদারিত্বে তৈরি মেনু থাকে। যেমন, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের কিয়ো-কাইসেকি মেনু যাত্রীদের জন্য একটি বিশেষ অভিজ্ঞতা তৈরি করে, যা সম্রাটের ভোজবিলাস থেকে অনুপ্রাণিত।

বেকামোয় শেফদের সাথে সহযোগিতা
এয়ারলাইন্সগুলো আরও উন্নত করার জন্য বেকামোয় শেফদের সাথে সহযোগিতা করছে। ANA-এর ‘দ্য কনোসিওর’ প্রোগ্রামে নতুন শেফদের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে আরো বিশেষ মেনু তৈরি করা হয়েছে, যার মধ্যে সেকিয়া’র তৈরি সুন্দর খাবারের তালিকা রয়েছে। এখানে, কিয়ো-ইকুই মেনুতে রয়েছে তাজা তেল এবং ছয়ধরণের মশলা দিয়ে তৈরি খাবার, যা যাত্রিদের খুব ভালো অভিজ্ঞতা দেয়।
প্ল্যান্ট-বেসড খাদ্য এবং পরিবেশগত উদ্যোগ
বিমান সংস্থাগুলো আন্তর্জাতিকভাবে পরিবেশগত পরিবর্তনের দিকে নজর দিচ্ছে। ANA তাদের প্ল্যান্ট-বেসড মেনুতে তিনটি ভেগান বিকল্প সরবরাহ করছে, যেগুলি স্বাস্থ্যকর এবং পরিবেশবান্ধব। এই মেনুতে রয়েছে টনকোটসু-স্টাইল রামেন, যা সম্পূর্ণভাবে উদ্ভিজ্জ উপাদান থেকে তৈরি এবং তার উন্নতির জন্য এক বছর কাজ করা হয়েছে।
এছাড়া, JAL তাদের ব্যবসায়িক শ্রেণীর যাত্রীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভেজিটারিয়ান খাবার প্রদান করছে, যেমন মাশরুম এবং সবজি মাংস বার্গার এবং অলিভ অয়েল ম্যাশড পটেটো।

চূড়ান্ত অভিজ্ঞতা
এয়ারলাইন্সগুলো শুধু খাবারের উন্নতির জন্যই নয়, বরং একাডেমিক এবং সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটেও মান বজায় রাখতে প্রতিনিয়ত কাজ করছে। ANA তাদের কর্মীদের মধ্যে ‘এয়ার সোমেলিয়ার’ নিয়ে এসেছে, যারা সঠিক মদ এবং খাবারের মধ্যে সঠিক মিল নির্ধারণ করে দেয়।
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সেও মদ এবং খাবারের মধ্যে বিশেষ সঠিক মিল রয়েছে, যেখানে তাদের সেবা প্রদানের প্রক্রিয়া অত্যন্ত মেধাবী এবং অভিজ্ঞান প্রদর্শন করে।
বিমানের খাবার এখন শুধুমাত্র বিমানযাত্রার অংশ নয়, বরং এটি একটি অভিজ্ঞান, যা যাত্রীদের জাপানি খাদ্য সংস্কৃতি এবং বিমানভ্রমণের একটি বিশেষ অংশে নিয়ে যায়।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















