১০:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
বিআরটিএতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি, আইনশৃঙ্খলা ও পাসপোর্ট দপ্তরও শীর্ষে মগবাজার ফ্লাইওভার থেকে বোমা নিক্ষেপ, নিহত এক পথচারী অসম ভিআইপি সুবিধা নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন: নির্বাচন কমিশনকে জানাল জামায়াত বড়দিন ও সাপ্তাহিক ছুটিতে টানা তিন দিন বন্ধ ব্যাংক ও শেয়ারবাজার বৃহস্পতিবার দেশে পালিত হবে বড়দিন, উৎসব ঘিরে শুভেচ্ছা ও বাড়তি নিরাপত্তা উপেক্ষিত রুমিন ফারহানা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কর্মসংস্থানে বিশ্বব্যাংকের নতুন অর্থায়ন, বাংলাদেশে অনুমোদন ১৫০ কোটি ডলার তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে সরকারের স্বাগত, পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস গাজীপুরে জাসাস নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা টাকা-ডলার বিনিময় হারে বাড়ছে ফাঁক, বৈদেশিক প্রতিযোগিতায় ঝুঁকির সতর্কতা

সম্পর্কের উষ্ণতা ধরে রাখা উচিৎ, পারিবারিক সীমারেখা রক্ষা করে উৎসব উদযাপনের জ্ঞান

সম্পর্কের বাস্তবতা: ‘ভালো অন পেপার’, কিন্তু মন ছোঁয় না

এক তরুণী জানতে চেয়েছেন, কাউকে সঙ্গে সম্পর্কে যাওয়ার সময় যদি তিনি অনুভব করেন যে সেই মানুষটি ‘অন পেপার’ খুব ভালো — অর্থাৎ স্থিতিশীল, শিক্ষিত, শালীন — কিন্তু তার সঙ্গে গভীর সংযোগ বা উত্তেজনা অনুভব করেন না, তাহলে কতদিন সম্পর্কটি এগিয়ে নেওয়া উচিত?

তিনি আরও বলেন, প্রথম ডেটের নার্ভাসনেস বা দ্বিতীয়বার দেখা করার পর পরিবর্তনের সুযোগ তিনি বুঝতে পারেন, কিন্তু ‘ক্রাশ’ বা তীব্র আকর্ষণ তেমন নেই। বয়স বাড়লে কি সেই উত্তেজনা কমে যায়?


উত্তরের মূল কথা: সবকিছুই সময়ের সঙ্গে বদলায়

কলামিস্ট ক্যারোলিন হ্যাক্সের মতে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জীবনের সব অনুভূতিই পরিবর্তিত হয় — ভালোবাসাও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রথমদিকে যে রোমাঞ্চ থাকে, তা স্থায়ী নয়। কিন্তু ভয়ও ধীরে ধীরে কেটে যায়, যদি মানুষ নিজেকে সময় দেয়।

তিনি বলেন, “সবচেয়ে ভালো উপায় হলো জীবনের মধ্যেই মানুষকে চিনে নেওয়া — স্কুল, কর্মক্ষেত্র বা সাধারণ আগ্রহের মাধ্যমে। এতে করে সম্পর্ক তৈরি হয় স্বাভাবিকভাবে, কোনো চাপ ছাড়াই।”


বাস্তবতার পরামর্শ: কাগজে নয়, কথায় উষ্ণতা খুঁজুন

ক্যারোলিন পরামর্শ দেন,
“যদি ডেটিং-ই হয় নতুন মানুষ চেনার একমাত্র পথ, তাহলে সেটাকে কাজের মতোই নিন। তবে মনে রাখবেন, তুলনা করবেন না কৈশোরের ক্রাশের সঙ্গে। কারণ সেই সময়ের তীব্র অনুভূতি দীর্ঘমেয়াদে টিকে না। পরিণত বয়সে সম্পর্ক টেকে সততা, সামঞ্জস্য, সম্মান এবং আপনার ব্যক্তিগত অগ্রাধিকারের উপর — যেমন হাস্যরস, কৌতূহল বা বিনয়।”

তিনি আরও বলেন,
“যদি আলাপচারিতা আকর্ষণীয় না হয়, তাহলে ‘লুকওয়ার্ম’ সম্পর্কটিকে গরম হওয়ার আশায় টেনে নেওয়া অর্থহীন। আর কোনো বিষয় যদি এখনই আপনাকে ‘খুব একটা খারাপ নয়’ মনে হয়, সেটাই হবে ভবিষ্যতের বিচ্ছেদের মূল কারণ। সময় যত যাবে, তত জটিল হবে।”

শেষে হ্যাক্স বলেন, নিজের জীবনে নতুন কোনো কার্যকলাপ যোগ করা সবসময়ই ভালো — যেখানে সমমনাদের সঙ্গে নিয়মিত মেলামেশা সম্ভব। এতে জীবন যেমন সমৃদ্ধ হয়, সম্পর্ক নিয়েও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি আসে।


পারিবারিক উৎসব ও সীমারেখা: ‘না’ বলাও একধরনের সদয়তা

অন্য এক পাঠক লিখেছেন,
তিনি ও তাঁর স্বামী ছোট একটি অ্যাপার্টমেন্টে উঠেছেন, কিন্তু পরিবার নিয়ে থ্যাঙ্কসগিভিং আয়োজন করতে চান। সমস্যা হলো, তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মা তাঁদের দুটি বড় ও অশান্ত কুকুর নিয়ে আসতে চান, কারণ তাঁদের জন্য সিটার খুঁজে পাচ্ছেন না।
স্থান সংকুলান না হওয়ায় পরিবারের বাকিরা এতে অস্বস্তি বোধ করছেন। তিনি জানতে চেয়েছেন, কিভাবে বিষয়টি ভদ্রভাবে সামলানো যায় যাতে কারও মন না খারাপ হয়।


হ্যাক্সের জবাব: ‘না’ মানেই অমায়িকতা নয়

ক্যারোলিন বলেন,
“প্রথমেই ‘তারা কুকুরদের আমাদের চেয়ে বেশি ভালোবাসে’ এমন ব্যাখ্যা বাদ দিন। বিষয়টি যেমন, তেমনভাবে দেখুন — অতিরিক্ত মানসিক বিশ্লেষণে জট বেঁধে ফেলবেন না। দ্বিতীয়ত, ‘না’ বলা অমার্জিত নয়। আতিথেয়তা মানে সব দাবি মেনে নেওয়া নয়।”

তিনি বলেন,
“আপনি সম্পূর্ণ ভদ্রভাবে বলতে পারেন, ‘না, কুকুরগুলোকে এখানে আনা যাবে না।’ কারণ জায়গা ছোট, বাচ্চারা অস্বস্তি বোধ করবে, বা শুধু আপনি সেটি চান না — যেকোনো কারণই যথেষ্ট। আপনার ‘না’ মানে পরবর্তী সিদ্ধান্তটা আপনার বাবা-মায়ের হাতে — তাঁরা কুকুর ছাড়া আসবেন কি না, সেটি তাঁদের ব্যাপার।”

হ্যাক্স মনে করেন, এটিই ‘দয়ালুভাবে’ বিষয়টি সামলানোর সেরা উপায়। প্রয়োজনে আপনি তাঁদের সাহায্য করতে পারেন অন্য কোনো সমাধান খুঁজে দিতে — যেমন বড় কুকুরের উপযোগী হোটেল বা ক্যানেল। তবে এটি অতিরিক্ত সহানুভূতি, বাধ্যবাধকতা নয়।

সম্পর্কে হোক বা পারিবারিক পরিস্থিতিতে, ক্যারোলিন হ্যাক্সের বার্তা স্পষ্ট — আন্তরিকতা, সীমা ও বাস্তবতা একসঙ্গে মিশে থাকলে জীবন সহজ হয়। উত্তেজনা আসে যায়, কিন্তু সততা ও পারস্পরিক সম্মানই সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখে। আর ‘না’ বলাটাও একধরনের ভালোবাসা, যদি সেটি বলা হয় শান্তভাবে ও সত্যতা থেকে।

#সম্পর্ক #ভালোবাসা #মনস্তত্ত্ব #ক্যারোলিন_হ্যাক্স #পারিবারিক_সীমারেখা #উৎসব #জীবনশিক্ষা #সারাক্ষণ_রিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

বিআরটিএতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি, আইনশৃঙ্খলা ও পাসপোর্ট দপ্তরও শীর্ষে

সম্পর্কের উষ্ণতা ধরে রাখা উচিৎ, পারিবারিক সীমারেখা রক্ষা করে উৎসব উদযাপনের জ্ঞান

০১:০০:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কের বাস্তবতা: ‘ভালো অন পেপার’, কিন্তু মন ছোঁয় না

এক তরুণী জানতে চেয়েছেন, কাউকে সঙ্গে সম্পর্কে যাওয়ার সময় যদি তিনি অনুভব করেন যে সেই মানুষটি ‘অন পেপার’ খুব ভালো — অর্থাৎ স্থিতিশীল, শিক্ষিত, শালীন — কিন্তু তার সঙ্গে গভীর সংযোগ বা উত্তেজনা অনুভব করেন না, তাহলে কতদিন সম্পর্কটি এগিয়ে নেওয়া উচিত?

তিনি আরও বলেন, প্রথম ডেটের নার্ভাসনেস বা দ্বিতীয়বার দেখা করার পর পরিবর্তনের সুযোগ তিনি বুঝতে পারেন, কিন্তু ‘ক্রাশ’ বা তীব্র আকর্ষণ তেমন নেই। বয়স বাড়লে কি সেই উত্তেজনা কমে যায়?


উত্তরের মূল কথা: সবকিছুই সময়ের সঙ্গে বদলায়

কলামিস্ট ক্যারোলিন হ্যাক্সের মতে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জীবনের সব অনুভূতিই পরিবর্তিত হয় — ভালোবাসাও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রথমদিকে যে রোমাঞ্চ থাকে, তা স্থায়ী নয়। কিন্তু ভয়ও ধীরে ধীরে কেটে যায়, যদি মানুষ নিজেকে সময় দেয়।

তিনি বলেন, “সবচেয়ে ভালো উপায় হলো জীবনের মধ্যেই মানুষকে চিনে নেওয়া — স্কুল, কর্মক্ষেত্র বা সাধারণ আগ্রহের মাধ্যমে। এতে করে সম্পর্ক তৈরি হয় স্বাভাবিকভাবে, কোনো চাপ ছাড়াই।”


বাস্তবতার পরামর্শ: কাগজে নয়, কথায় উষ্ণতা খুঁজুন

ক্যারোলিন পরামর্শ দেন,
“যদি ডেটিং-ই হয় নতুন মানুষ চেনার একমাত্র পথ, তাহলে সেটাকে কাজের মতোই নিন। তবে মনে রাখবেন, তুলনা করবেন না কৈশোরের ক্রাশের সঙ্গে। কারণ সেই সময়ের তীব্র অনুভূতি দীর্ঘমেয়াদে টিকে না। পরিণত বয়সে সম্পর্ক টেকে সততা, সামঞ্জস্য, সম্মান এবং আপনার ব্যক্তিগত অগ্রাধিকারের উপর — যেমন হাস্যরস, কৌতূহল বা বিনয়।”

তিনি আরও বলেন,
“যদি আলাপচারিতা আকর্ষণীয় না হয়, তাহলে ‘লুকওয়ার্ম’ সম্পর্কটিকে গরম হওয়ার আশায় টেনে নেওয়া অর্থহীন। আর কোনো বিষয় যদি এখনই আপনাকে ‘খুব একটা খারাপ নয়’ মনে হয়, সেটাই হবে ভবিষ্যতের বিচ্ছেদের মূল কারণ। সময় যত যাবে, তত জটিল হবে।”

শেষে হ্যাক্স বলেন, নিজের জীবনে নতুন কোনো কার্যকলাপ যোগ করা সবসময়ই ভালো — যেখানে সমমনাদের সঙ্গে নিয়মিত মেলামেশা সম্ভব। এতে জীবন যেমন সমৃদ্ধ হয়, সম্পর্ক নিয়েও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি আসে।


পারিবারিক উৎসব ও সীমারেখা: ‘না’ বলাও একধরনের সদয়তা

অন্য এক পাঠক লিখেছেন,
তিনি ও তাঁর স্বামী ছোট একটি অ্যাপার্টমেন্টে উঠেছেন, কিন্তু পরিবার নিয়ে থ্যাঙ্কসগিভিং আয়োজন করতে চান। সমস্যা হলো, তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মা তাঁদের দুটি বড় ও অশান্ত কুকুর নিয়ে আসতে চান, কারণ তাঁদের জন্য সিটার খুঁজে পাচ্ছেন না।
স্থান সংকুলান না হওয়ায় পরিবারের বাকিরা এতে অস্বস্তি বোধ করছেন। তিনি জানতে চেয়েছেন, কিভাবে বিষয়টি ভদ্রভাবে সামলানো যায় যাতে কারও মন না খারাপ হয়।


হ্যাক্সের জবাব: ‘না’ মানেই অমায়িকতা নয়

ক্যারোলিন বলেন,
“প্রথমেই ‘তারা কুকুরদের আমাদের চেয়ে বেশি ভালোবাসে’ এমন ব্যাখ্যা বাদ দিন। বিষয়টি যেমন, তেমনভাবে দেখুন — অতিরিক্ত মানসিক বিশ্লেষণে জট বেঁধে ফেলবেন না। দ্বিতীয়ত, ‘না’ বলা অমার্জিত নয়। আতিথেয়তা মানে সব দাবি মেনে নেওয়া নয়।”

তিনি বলেন,
“আপনি সম্পূর্ণ ভদ্রভাবে বলতে পারেন, ‘না, কুকুরগুলোকে এখানে আনা যাবে না।’ কারণ জায়গা ছোট, বাচ্চারা অস্বস্তি বোধ করবে, বা শুধু আপনি সেটি চান না — যেকোনো কারণই যথেষ্ট। আপনার ‘না’ মানে পরবর্তী সিদ্ধান্তটা আপনার বাবা-মায়ের হাতে — তাঁরা কুকুর ছাড়া আসবেন কি না, সেটি তাঁদের ব্যাপার।”

হ্যাক্স মনে করেন, এটিই ‘দয়ালুভাবে’ বিষয়টি সামলানোর সেরা উপায়। প্রয়োজনে আপনি তাঁদের সাহায্য করতে পারেন অন্য কোনো সমাধান খুঁজে দিতে — যেমন বড় কুকুরের উপযোগী হোটেল বা ক্যানেল। তবে এটি অতিরিক্ত সহানুভূতি, বাধ্যবাধকতা নয়।

সম্পর্কে হোক বা পারিবারিক পরিস্থিতিতে, ক্যারোলিন হ্যাক্সের বার্তা স্পষ্ট — আন্তরিকতা, সীমা ও বাস্তবতা একসঙ্গে মিশে থাকলে জীবন সহজ হয়। উত্তেজনা আসে যায়, কিন্তু সততা ও পারস্পরিক সম্মানই সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখে। আর ‘না’ বলাটাও একধরনের ভালোবাসা, যদি সেটি বলা হয় শান্তভাবে ও সত্যতা থেকে।

#সম্পর্ক #ভালোবাসা #মনস্তত্ত্ব #ক্যারোলিন_হ্যাক্স #পারিবারিক_সীমারেখা #উৎসব #জীবনশিক্ষা #সারাক্ষণ_রিপোর্ট