০২:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫
২০২৫ সালের ১০০ প্রভাবশালী জলবায়ু-অভিযান নেতা: বিশ্বের ভবিষ্যৎ বাঁচাতে ব্যবসার নতুন অঙ্গীকার আনিসিমোভার দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন: রিবাকিনা সেমিফাইনালে জায়গা পেলেন বেসামরিক যুদ্ধে ভেটেরানদের জন্য বিক্রিত শিল্পের উত্থান ইউপিএস ফ্লাইট ২৯৭৬ দুর্ঘটনা: তদন্ত ও উদ্ধার কার্যক্রম মেক্সিকো: রাষ্ট্রপতি শেইনবাউমের প্রতি শারীরিক নির্যাতন, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে লুলার ‘সত্যের COP’ প্রতিশ্রুতি: জাতিসংঘের প্রতিবেদন থেকে উদ্বেগ সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের শুল্কনীতি বিপদে — কংগ্রেসের রাজস্ব ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের দাবি জোরালো ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার বড় অগ্রগতি: পোকরোভস্ক দখলের দ্বারপ্রান্তে কুইন্স: প্রবাসী নারীদের জীবনের টানাপোড়েন ও আত্মসংগ্রামের নাটক মার্কিন ধনী বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন দিগন্ত: ব্যক্তিগত শেয়ার ব্যবসায় প্রবেশ করল চার্লস শোয়াব

কঠিন আবহাওয়া পেরিয়ে মেরা পিক জয় করলেন বাংলাদেশি অভিযাত্রী আহসানুল হক

নেপালের হিমালয়ের কঠিন আবহাওয়া ও প্রবল তুষারঝড়কে উপেক্ষা করে বাংলাদেশের পর্বতারোহী আহসানুল হক খান্দকার সফলভাবে জয় করেছেন মেরা পিক সেন্ট্রাল (৬,৪৬১ মিটার) শৃঙ্গ। এই সাফল্য বাংলাদেশের উচ্চতর পর্বত অভিযাত্রার ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায় রচনা করেছে।


অভিযাত্রার শুরু ও পথচলা

কর্পোরেট পেশাজীবী থেকে পূর্ণকালীন পর্বতারোহীতে পরিণত হওয়া আহসানুল গত ২৭ অক্টোবর কাঠমান্ডু থেকে তার অভিযান শুরু করেন। তিনি ঐতিহ্যবাহী রুটে লুকলা, কোটে ও খারে পেরিয়ে ৫ নভেম্বর সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে মেরা হাই ক্যাম্প থেকে চূড়ান্ত আরোহণ সম্পন্ন করেন। শীর্ষে ওঠার মুহূর্তে প্রবল বাতাস ও তুষারঝড়ের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে তাকে।

“এটা ছিল নিষ্ঠুর এক অভিজ্ঞতা,” বলেন আহসানুল। “কিন্তু শীর্ষে দাঁড়িয়ে চারপাশের দৃশ্য দেখার পর সব কষ্টই সার্থক মনে হয়েছে।”


হিমালয়ের বিপজ্জনক পরিস্থিতি

এই মৌসুমে হিমালয়ের আবহাওয়া ছিল বিশেষভাবে অনিশ্চিত। সম্প্রতি এক তুষারধসে অন্তত সাতজন পর্বতারোহীর মৃত্যু হয়েছে, যা এ বছরের শরৎকালীন অভিযাত্রীদের জন্য বড় সতর্কবার্তা হিসেবে এসেছে।


পর্বতারোহণের সূচনা ও সাফল্যের ধারা

আহসানুলের অভিযাত্রা শুরু হয়েছিল পাঁচ বছর আগে, বাংলাদেশের বান্দরবানের সর্বোচ্চ চূড়াগুলোতে পদচারণার মধ্য দিয়ে। পরে তিনি নেপালে আরও উচ্চতর অভিযানে অংশ নেন। ২০২০ সালে তিনি সম্পন্ন করেন অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প, মার্দি হিমাল ও অন্নপূর্ণা সার্কিট ট্রেক।

২০২৩ সালে তিনি শীতকালে ইয়ালা পিক (৫,৫২০ মিটার) জয় করে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সেই কৃতিত্ব অর্জন করেন। মেরা পিক এখন পর্যন্ত তার সর্বোচ্চ ও সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অর্জন।


পর্বতের শিক্ষা ও দর্শন

“পর্বত আপনাকে বিনয় শেখায়,” বলেন আহসানুল। “এখানে আপনি জানতে পারেন মানবদেহ ও মন আসলে কতটা সহনশীল।”

৩৬ বছর বয়সী আহসানুল কর্পোরেট জীবন ছেড়ে দিয়েছেন এই অভিযাত্রার টানে। তার ভাষায়, “কর্পোরেট জীবনটা ছিল দমবন্ধ করা। কিন্তু পর্বতে আপনি সত্যিকারের জীবন্ত অনুভব করেন।”


ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: এভারেস্ট জয়ের স্বপ্ন

আহসানুল আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে ঢাকায় ফেরার পরিকল্পনা করেছেন। তার ব্যাকপ্যাকে থাকবে বাংলাদেশের পতাকা ও নতুন স্বপ্ন—একদিন বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করা।

তিনি বলেন, “যদি পর্যাপ্ত অর্থায়ন ও শারীরিক সক্ষমতা পাই, আমি আরও উঁচুতে উঠব। পর্বতারোহণ কেবল শীর্ষে পৌঁছানোর বিষয় নয়; এটি আত্ম-আবিষ্কারের এক যাত্রা—প্রতি পদক্ষেপে।”


#বাংলাদেশি_অভিযাত্রী #মেরা_পিক #হিমালয়_অভিযান #আহসানুল_হক #পর্বতারোহণ

জনপ্রিয় সংবাদ

২০২৫ সালের ১০০ প্রভাবশালী জলবায়ু-অভিযান নেতা: বিশ্বের ভবিষ্যৎ বাঁচাতে ব্যবসার নতুন অঙ্গীকার

কঠিন আবহাওয়া পেরিয়ে মেরা পিক জয় করলেন বাংলাদেশি অভিযাত্রী আহসানুল হক

১১:২২:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫

নেপালের হিমালয়ের কঠিন আবহাওয়া ও প্রবল তুষারঝড়কে উপেক্ষা করে বাংলাদেশের পর্বতারোহী আহসানুল হক খান্দকার সফলভাবে জয় করেছেন মেরা পিক সেন্ট্রাল (৬,৪৬১ মিটার) শৃঙ্গ। এই সাফল্য বাংলাদেশের উচ্চতর পর্বত অভিযাত্রার ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায় রচনা করেছে।


অভিযাত্রার শুরু ও পথচলা

কর্পোরেট পেশাজীবী থেকে পূর্ণকালীন পর্বতারোহীতে পরিণত হওয়া আহসানুল গত ২৭ অক্টোবর কাঠমান্ডু থেকে তার অভিযান শুরু করেন। তিনি ঐতিহ্যবাহী রুটে লুকলা, কোটে ও খারে পেরিয়ে ৫ নভেম্বর সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে মেরা হাই ক্যাম্প থেকে চূড়ান্ত আরোহণ সম্পন্ন করেন। শীর্ষে ওঠার মুহূর্তে প্রবল বাতাস ও তুষারঝড়ের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে তাকে।

“এটা ছিল নিষ্ঠুর এক অভিজ্ঞতা,” বলেন আহসানুল। “কিন্তু শীর্ষে দাঁড়িয়ে চারপাশের দৃশ্য দেখার পর সব কষ্টই সার্থক মনে হয়েছে।”


হিমালয়ের বিপজ্জনক পরিস্থিতি

এই মৌসুমে হিমালয়ের আবহাওয়া ছিল বিশেষভাবে অনিশ্চিত। সম্প্রতি এক তুষারধসে অন্তত সাতজন পর্বতারোহীর মৃত্যু হয়েছে, যা এ বছরের শরৎকালীন অভিযাত্রীদের জন্য বড় সতর্কবার্তা হিসেবে এসেছে।


পর্বতারোহণের সূচনা ও সাফল্যের ধারা

আহসানুলের অভিযাত্রা শুরু হয়েছিল পাঁচ বছর আগে, বাংলাদেশের বান্দরবানের সর্বোচ্চ চূড়াগুলোতে পদচারণার মধ্য দিয়ে। পরে তিনি নেপালে আরও উচ্চতর অভিযানে অংশ নেন। ২০২০ সালে তিনি সম্পন্ন করেন অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প, মার্দি হিমাল ও অন্নপূর্ণা সার্কিট ট্রেক।

২০২৩ সালে তিনি শীতকালে ইয়ালা পিক (৫,৫২০ মিটার) জয় করে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সেই কৃতিত্ব অর্জন করেন। মেরা পিক এখন পর্যন্ত তার সর্বোচ্চ ও সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অর্জন।


পর্বতের শিক্ষা ও দর্শন

“পর্বত আপনাকে বিনয় শেখায়,” বলেন আহসানুল। “এখানে আপনি জানতে পারেন মানবদেহ ও মন আসলে কতটা সহনশীল।”

৩৬ বছর বয়সী আহসানুল কর্পোরেট জীবন ছেড়ে দিয়েছেন এই অভিযাত্রার টানে। তার ভাষায়, “কর্পোরেট জীবনটা ছিল দমবন্ধ করা। কিন্তু পর্বতে আপনি সত্যিকারের জীবন্ত অনুভব করেন।”


ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: এভারেস্ট জয়ের স্বপ্ন

আহসানুল আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে ঢাকায় ফেরার পরিকল্পনা করেছেন। তার ব্যাকপ্যাকে থাকবে বাংলাদেশের পতাকা ও নতুন স্বপ্ন—একদিন বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করা।

তিনি বলেন, “যদি পর্যাপ্ত অর্থায়ন ও শারীরিক সক্ষমতা পাই, আমি আরও উঁচুতে উঠব। পর্বতারোহণ কেবল শীর্ষে পৌঁছানোর বিষয় নয়; এটি আত্ম-আবিষ্কারের এক যাত্রা—প্রতি পদক্ষেপে।”


#বাংলাদেশি_অভিযাত্রী #মেরা_পিক #হিমালয়_অভিযান #আহসানুল_হক #পর্বতারোহণ