ফেডারেল মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর পাকিস্তানের সিনেটে ২৭তম সংবিধান সংশোধনী বিল উপস্থাপন করা হয়েছে। এই বিলের মাধ্যমে সংবিধানে কয়েকটি বড় পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে — যার মধ্যে রয়েছে একটি ফেডারেল সাংবিধানিক আদালত গঠন, উচ্চ আদালতের বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়ায় সংশোধন, প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যার সীমা পরিবর্তন এবং সংবিধানের ২৪৩ অনুচ্ছেদে সংশোধন।
প্রধান পরিবর্তনের প্রস্তাব
১. ফেডারেল সাংবিধানিক আদালত গঠন:
বিলটি একটি নতুন আদালত প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করছে, যা সাংবিধানিক বিষয়সমূহে সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব হিসেবে কাজ করবে। এই আদালত বিদ্যমান বিচারব্যবস্থার ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২. উচ্চ আদালতের বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন:
বর্তমানে বিচারপতি নিয়োগে বিচার বিভাগীয় কমিশনের প্রভাব রয়েছে। নতুন প্রস্তাবে এই প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও ভারসাম্যপূর্ণ করার জন্য পরিবর্তন আনা হচ্ছে, যাতে রাজনৈতিক প্রভাব কমানো যায়।

৩. প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যা সংশোধন:
প্রদেশভেদে মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যার সীমা পুনঃনির্ধারণ করা হচ্ছে। লক্ষ্য হলো প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি এবং অপ্রয়োজনীয় ব্যয় হ্রাস করা।
৪. সংবিধানের ২৪৩ অনুচ্ছেদে সংশোধন:
২৪৩ অনুচ্ছেদ সংশোধনের মাধ্যমে দেশের শীর্ষ সামরিক নেতৃত্বকে আরও বিস্তৃত সাংবিধানিক ক্ষমতা ও সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই পরিবর্তন সামরিক কাঠামোয় প্রাতিষ্ঠানিক প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক ও বিচারিক প্রতিক্রিয়া
বিলটি সংসদে উপস্থাপনের পর থেকেই রাজনৈতিক মহল ও বিচার বিভাগে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, এই পরিবর্তনগুলো বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সামরিক প্রভাবের ভারসাম্যে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট
পাকিস্তানে সংবিধান সংশোধন নিয়ে আলোচনা নতুন নয়, তবে এবারকার উদ্যোগকে অনেকেই “সাংবিধানিক কাঠামো পুনর্গঠনের প্রচেষ্টা” হিসেবে দেখছেন। বিশেষত ২৪৩ অনুচ্ছেদের সংশোধন সামরিক নেতৃত্বের ক্ষমতার পরিধি বাড়িয়ে দিতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের আশঙ্কা।
২৭তম সংবিধান সংশোধনী বিল পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও বিচারিক কাঠামোয় একটি বড় মোড় পরিবর্তন আনতে পারে। এটি একদিকে বিচার বিভাগের কাঠামো ও সামরিক নেতৃত্বের ভূমিকা পুনর্নির্ধারণ করছে, অন্যদিকে প্রশাসনিক ভারসাম্য স্থাপনে নতুন বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে।
#সংবিধানসংশোধন #পাকিস্তানসিনেট #রাজনৈতিকপরিবর্তন #সারাক্ষণরিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















