০৫:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

জাপানের ট্রেডিং হাউসগুলো ট্রাম্পের শুল্ক চুক্তি অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধির কথা বলছে

জাপানের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রে তাদের বিনিয়োগ বৃদ্ধি করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে, যা দুটি দেশের মধ্যে $৫৫০ বিলিয়ন বিনিয়োগ পরিকল্পনার সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি ট্রাম্পের শুল্ক চুক্তির অংশ হিসেবে গৃহীত একটি পদক্ষেপ।


মার্কিন বাজারে বাড়ানো বিনিয়োগ

জাপানের পাঁচটি প্রধান ট্রেডিং হাউস, যেগুলোর কিছু অংশ মার্কিন বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেটের মালিকানাধীন, তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের উপস্থিতি আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। এই পাঁচটি প্রতিষ্ঠান হলো মিতসুবিশি, সুমিতোমো, ইতোচু, মারুবেনি, এবং মিৎসুই।

মার্কিন বাজার ইতোমধ্যে মিতসুবিশি, সুমিতোমো, ইতোচু, এবং মারুবেনির জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাজার হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং মিৎসুইয়ের জন্য এটি দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় বাজার। তবে তারা মার্কিন বাজারে আরও বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করছে।


বাফেটের বিনিয়োগ ও কোম্পানির বক্তব্য

ওয়ারেন বাফেটের প্রতিষ্ঠান বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে মিতসুই ও মিতসুবিশির ১০ শতাংশেরও বেশি শেয়ার ধারণ করে, এবং অন্য তিনটি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। বাফেট বলেছেন, তারা এই শেয়ারগুলি পরবর্তী ৫০ বছরের জন্য বিক্রি করবে না।

সুমিতোমোর সিইও শিংগো উয়েনো গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে এক ডিনার পার্টিতে কথা বলেন। তিনি ট্রাম্পকে জানিয়েছেন, সুমিতোমো সবসময়ই যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগে আগ্রহী এবং ভবিষ্যতে সুযোগ পেলেই তারা বিনিয়োগ বাড়াতে চায়।

ইতোচুর সিওও কিটা ইশী বলেন, তাদের ইতোমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কিছু বিনিয়োগ পরিকল্পনা রয়েছে এবং তারা ভবিষ্যতে আরও সুযোগ খুঁজবে।


জাপানের প্রধানমন্ত্রী তাকািইচির জন্য আশাবাদী মন্তব্য

এই মন্তব্যগুলো জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানাই তাকািইচির জন্য আশাবাদী একটি সংকেত, যিনি ট্রাম্পের সাথে সফল প্রথম সাক্ষাৎকারের পর দুদেশের মধ্যে একটি “নতুন সোনালি যুগ” প্রতিষ্ঠা করতে চান।


যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ পরিকল্পনা ২০২৯ সালের জানুয়ারির মধ্যে বাস্তবায়িত হতে হবে। যদিও এই বিনিয়োগের প্রকল্পগুলো এখনও চূড়ান্ত হয়নি, তবে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে এর বাস্তবায়ন।


বিনিয়োগের ভবিষ্যত ও ঝুঁকি

বিশ্লেষকরা বলেছেন যে ট্রেডিং হাউসগুলো তাদের ব্যবসায়িক লক্ষ্য ও প্রয়োজন অনুযায়ী বিনিয়োগের সুযোগ বিবেচনা করবে, শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ানোর লক্ষ্য না রেখে।

মিতসুবিশির সিইও কাতসুয়া নাকানিশি বলেছেন, তাদের কোম্পানি মার্কিন বাজারে প্রবৃদ্ধি এবং শক্তিশালী চাহিদা দেখছে, এবং তারা বর্তমানে আরও প্রকল্প অনুসন্ধান করছে। মিতসুবিশি সম্প্রতি আ্যারিজোনার একটি তামা খনিতে ৩০% অংশীদারিত্ব ক্রয় করার ঘোষণা দিয়েছে।

তবে, কিছু নির্বাহী বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির সঙ্গে বিনিয়োগ সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে ধীরে চলতে চান এবং বাজারের অস্থিতিশীলতা এবং শুল্কের প্রভাবের দিকে লক্ষ্য রাখছেন।


বিনিয়োগের সম্ভাব্য প্রভাব

এছাড়া, কিছু নির্বাহী মার্কিন অর্থনীতি এবং বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়িক পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মারুবেনির সিইও মাসায়ুকি ওমোটো জানিয়েছেন, তারা আগামী বছরে ব্যবসায়িক মন্দার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, কারণ মার্কিন বাজারের ৩০% তাদের রাজস্ব আসে।

মিতসুইয়ের সিএফও তেতসুয়া শিগেতা সতর্কতা জ্ঞাপন করেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পরিবর্তন দ্রুত এবং অনিশ্চিত হতে পারে, তাই আমাদের প্রত্যাশিত পরিবর্তনগুলোর জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।”


এই ধরণের বিনিয়োগ পরিকল্পনা দুটি দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্কের উপর গভীর প্রভাব ফেলবে। তবে, ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তগুলো যথাযথ পরিকল্পনা এবং বাজারের অবস্থার উপর ভিত্তি করে নেওয়া হবে।


জনপ্রিয় সংবাদ

জাপানের ট্রেডিং হাউসগুলো ট্রাম্পের শুল্ক চুক্তি অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধির কথা বলছে

০৩:০৬:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

জাপানের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রে তাদের বিনিয়োগ বৃদ্ধি করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে, যা দুটি দেশের মধ্যে $৫৫০ বিলিয়ন বিনিয়োগ পরিকল্পনার সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি ট্রাম্পের শুল্ক চুক্তির অংশ হিসেবে গৃহীত একটি পদক্ষেপ।


মার্কিন বাজারে বাড়ানো বিনিয়োগ

জাপানের পাঁচটি প্রধান ট্রেডিং হাউস, যেগুলোর কিছু অংশ মার্কিন বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেটের মালিকানাধীন, তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের উপস্থিতি আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। এই পাঁচটি প্রতিষ্ঠান হলো মিতসুবিশি, সুমিতোমো, ইতোচু, মারুবেনি, এবং মিৎসুই।

মার্কিন বাজার ইতোমধ্যে মিতসুবিশি, সুমিতোমো, ইতোচু, এবং মারুবেনির জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাজার হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং মিৎসুইয়ের জন্য এটি দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় বাজার। তবে তারা মার্কিন বাজারে আরও বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করছে।


বাফেটের বিনিয়োগ ও কোম্পানির বক্তব্য

ওয়ারেন বাফেটের প্রতিষ্ঠান বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে মিতসুই ও মিতসুবিশির ১০ শতাংশেরও বেশি শেয়ার ধারণ করে, এবং অন্য তিনটি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। বাফেট বলেছেন, তারা এই শেয়ারগুলি পরবর্তী ৫০ বছরের জন্য বিক্রি করবে না।

সুমিতোমোর সিইও শিংগো উয়েনো গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে এক ডিনার পার্টিতে কথা বলেন। তিনি ট্রাম্পকে জানিয়েছেন, সুমিতোমো সবসময়ই যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগে আগ্রহী এবং ভবিষ্যতে সুযোগ পেলেই তারা বিনিয়োগ বাড়াতে চায়।

ইতোচুর সিওও কিটা ইশী বলেন, তাদের ইতোমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কিছু বিনিয়োগ পরিকল্পনা রয়েছে এবং তারা ভবিষ্যতে আরও সুযোগ খুঁজবে।


জাপানের প্রধানমন্ত্রী তাকািইচির জন্য আশাবাদী মন্তব্য

এই মন্তব্যগুলো জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানাই তাকািইচির জন্য আশাবাদী একটি সংকেত, যিনি ট্রাম্পের সাথে সফল প্রথম সাক্ষাৎকারের পর দুদেশের মধ্যে একটি “নতুন সোনালি যুগ” প্রতিষ্ঠা করতে চান।


যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ পরিকল্পনা ২০২৯ সালের জানুয়ারির মধ্যে বাস্তবায়িত হতে হবে। যদিও এই বিনিয়োগের প্রকল্পগুলো এখনও চূড়ান্ত হয়নি, তবে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে এর বাস্তবায়ন।


বিনিয়োগের ভবিষ্যত ও ঝুঁকি

বিশ্লেষকরা বলেছেন যে ট্রেডিং হাউসগুলো তাদের ব্যবসায়িক লক্ষ্য ও প্রয়োজন অনুযায়ী বিনিয়োগের সুযোগ বিবেচনা করবে, শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ানোর লক্ষ্য না রেখে।

মিতসুবিশির সিইও কাতসুয়া নাকানিশি বলেছেন, তাদের কোম্পানি মার্কিন বাজারে প্রবৃদ্ধি এবং শক্তিশালী চাহিদা দেখছে, এবং তারা বর্তমানে আরও প্রকল্প অনুসন্ধান করছে। মিতসুবিশি সম্প্রতি আ্যারিজোনার একটি তামা খনিতে ৩০% অংশীদারিত্ব ক্রয় করার ঘোষণা দিয়েছে।

তবে, কিছু নির্বাহী বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির সঙ্গে বিনিয়োগ সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে ধীরে চলতে চান এবং বাজারের অস্থিতিশীলতা এবং শুল্কের প্রভাবের দিকে লক্ষ্য রাখছেন।


বিনিয়োগের সম্ভাব্য প্রভাব

এছাড়া, কিছু নির্বাহী মার্কিন অর্থনীতি এবং বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়িক পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মারুবেনির সিইও মাসায়ুকি ওমোটো জানিয়েছেন, তারা আগামী বছরে ব্যবসায়িক মন্দার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, কারণ মার্কিন বাজারের ৩০% তাদের রাজস্ব আসে।

মিতসুইয়ের সিএফও তেতসুয়া শিগেতা সতর্কতা জ্ঞাপন করেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পরিবর্তন দ্রুত এবং অনিশ্চিত হতে পারে, তাই আমাদের প্রত্যাশিত পরিবর্তনগুলোর জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।”


এই ধরণের বিনিয়োগ পরিকল্পনা দুটি দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্কের উপর গভীর প্রভাব ফেলবে। তবে, ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তগুলো যথাযথ পরিকল্পনা এবং বাজারের অবস্থার উপর ভিত্তি করে নেওয়া হবে।