ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও তিনজন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১৮ জনে।
নতুন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে
মঙ্গলবার সকালে প্রকাশিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৯১২ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ফলে ২০২৫ সালে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার ৬৩৪ জনে।
বিভাগভিত্তিক আক্রান্তের পরিসংখ্যান
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, নতুন আক্রান্তদের মধ্যে
- বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৩৮ জন,
- চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৫১ জন,
- ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৩০ জন,
- ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) ১৯৪ জন,
- ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) ১৩১ জন,
- খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৭২ জন,
- রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮৮ জন,
- রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩ জন,
- এবং সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
আগের বছরের তুলনায় পরিস্থিতি
গত বছর (২০২৪ সালে) ডেঙ্গুতে ৫৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তার আগের বছর ২০২৩ সালে ১,৭০৫ জনের মৃত্যু হয়, যা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ডেঙ্গু বছর হিসেবে রেকর্ড হয়।
সেই বছর মোট ৩,২১,১৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয় এবং তাদের মধ্যে ৩,১৮,৭৪৯ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন।
বর্তমান পরিস্থিতির বিশ্লেষণ
চলতি বছরের পরিস্থিতি যদিও এখনো ২০২৩ সালের মতো ভয়াবহ রূপ নেয়নি, তবে সংক্রমণের হার ও হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। বিশেষ করে ঢাকা শহর ও আশপাশের এলাকাগুলোতে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আবহাওয়ার পরিবর্তন, অপর্যাপ্ত মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম, এবং জনসচেতনতার ঘাটতি—এই তিনটি বিষয়ই ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নাগরিকদের মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা, ঘরের আশপাশ পরিষ্কার রাখা এবং দ্রুত চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকার ও নাগরিকদের যৌথ প্রচেষ্টা এখন সময়ের দাবি।
#ডেঙ্গু #বাংলাদেশ #স্বাস্থ্যসংকট #সারাক্ষণরিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















