০৩:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
গুগল মেসেজেসে ‘রিমিক্স’—চ্যাটের ভেতরেই হালকা এআই ফটো এডিট জ্বালানি খাতে দুর্নীতির অভিযোগে ইউক্রেনের আইনমন্ত্রী সাময়িক বরখাস্ত আন্দামান সাগরে রোহিঙ্গা নৌকাডুবি, ২৭ জনের মৃত্যু ও বহু নিখোঁজ এনবিআর বিদেশ থেকে মোবাইল ফোন আনার নিয়ম স্পষ্ট করল গাজীপুরে তিনটি স্থানে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন ১৩ই নভেম্বর ‘লকডাউন’ রুখে দেওয়ার ঘোষণা পুলিশের, কী করবে আওয়ামী লীগ? নির্বাচনের আগে বডি ক্যামেরা কেনা নিয়ে অনিশ্চয়তা, কী বলছে পুলিশ আশুলিয়ায় পার্কিং করা বাসে আগুন, চালক আহত হয়ে প্রাণে বাঁচলেন রমনা থানার সামনে পুলিশের গাড়িতে হঠাৎ আগুন সিলেটে ট্রেন লাইনচ্যুতের পরিকল্পনা: ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতাসহ ৫ জন আটক

সৃষ্টির পথে শান্তির সন্ধান

টিম রবিন্সের নাম বললেই সাধারণত তার অভিনয় ক্যারিয়ার ও স্মরণীয় চরিত্রগুলো মনে আসে, যেমন “শওশ্যাঙ্ক রিডেম্পশন” সিনেমায় এক অভিযুক্ত খুনি অ্যান্ডি ডুফ্রেইনের চরিত্রে তার অভিনয় বা “মিস্টিক রিভার”-এ ডেভ চরিত্রে তার অসামান্য কাজ। তবে হলিউডের বাইরে রবিন্স যে কাজটি করেছেন, সেটি তার জীবনের একটি বড় দিক, যেখানে তিনি “দ্য অ্যাকটরস গ্যাং” থিয়েটার গ্রুপের মাধ্যমে কম সুবিধাপ্রাপ্ত এবং বিশেষ করে কারাবন্দী মানুষদের জন্য থিয়েটার আনতে কাজ করেছেন।

থিয়েটারের প্রতি ভালোবাসা:
১৯৮১ সালে “দ্য অ্যাকটরস গ্যাং” প্রতিষ্ঠার পর থেকেই রবিন্স বলেছেন, থিয়েটার তার জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। “এটা হলো আমার জন্য মানসিক এবং আত্মিকভাবে টিকে থাকার শক্তি,” রবিন্স বলেন। থিয়েটার তার জন্য এমন একটি মাধ্যম যা কখনোই স্থির থাকবে না এবং এটি ক্রমাগত পরিবর্তিত হয়।

শিল্পের স্বাধীনতা:
রবিন্সের জন্য থিয়েটার শুধু একটি শিল্প নয়, বরং এটি স্বাধীনতার একটি হাতিয়ার। “আমার উদ্দেশ্য ছিল শিল্পের মধ্যে স্বাধীনতা খুঁজে পাওয়া।” হলিউডে তার অভিজ্ঞতা যাই হোক, “দ্য অ্যাকটরস গ্যাং” তাকে সৃজনশীলতার স্বাধীনতা দিয়েছে, যেখানে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশের বাইরে গেয়ে সত্যিকার অর্থে মানুষের সাথে সংযোগ স্থাপন করা যায়।

থিয়েটারের মাধ্যমে মুক্তি:
রবিন্স এবং তার গ্রুপের সবচেয়ে বড় সফলতা তাদের “প্রিজন প্রজেক্টে”। এই প্রকল্পের মাধ্যমে, তারা কারাগারে বন্দিদের জন্য থিয়েটার কর্মশালা পরিচালনা করে, যা তাদের অপরাধপ্রবণতা কমাতে সাহায্য করছে। ২০০৬ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে বন্দিরা নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং সমস্যা সমাধানে থিয়েটারকে একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে শিখছে। তাদের ১০ শতাংশ রিসিডিভিজম রেট বর্তমানের তুলনায় অনেক কম।

একটি নিরাপদ জায়গা:
“দ্য অ্যাকটরস গ্যাং”-এর মূল উদ্দেশ্য ছিল একটি নিরাপদ জায়গা তৈরি করা, যেখানে মানুষ নিজেদের সৃজনশীলতা প্রকাশ করতে পারে, এবং যেখানে কারাগারে বসবাসরত মানুষরা তাদের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রণা এবং দ্বন্দ্ব নিয়ে কাজ করতে পারে। এটি সত্যিকার অর্থে তাদের সামাজিক কর্মে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে।

মনে রাখতে হবে মানুষের শেয়ারড মানবতা:
রবিন্সের মতে, “থিয়েটার এমন একটি শক্তি যা মানুষের মধ্যে শেয়ারড মানবতা তৈরি করতে পারে।” এটি তার থিয়েটার প্রযোজনাগুলির একটি মূল দিক। যেমন, “টপসি টারভি” একটি নাটক যেখানে একেবারে বিপরীত চরিত্রগুলো একে অপরকে দেখে এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে নিজেদের সম্পর্কের গুরুত্ব অনুভব করে।

কোভিড-১৯ পরবর্তী থিয়েটার:
কোভিড-১৯ মহামারীর সময় থিয়েটারের বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে রবিন্স ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে, “টপসি টারভি” নাটকটি এটি প্রতিফলিত করে যে, মানুষ যদি একে অপরের প্রতি সহানুভূতি এবং মানবিকতা অব্যাহত রাখে, তবে তারা সমস্ত অস্থিরতা এবং বিভাজন কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে।

টিম রবিন্সের জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষাটি হচ্ছে “যতদিন বাঁচতে পারো, বাঁচো,” যা তার বিভিন্ন কাজের মধ্যে প্রতিফলিত হয়। “দ্য অ্যাকটরস গ্যাং” এর মাধ্যমে, তিনি এক অপরিসীম থিয়েটার জগতের পথ প্রদর্শক, যেখানে জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা, মানবিকতা এবং আনন্দের সন্ধান করা হয়।

#টিমরবিন্স #দ্যঅ্যাকটরসগ্যাং #থিয়েটার #কারাগার #মুক্তিরমাধ্যম

জনপ্রিয় সংবাদ

গুগল মেসেজেসে ‘রিমিক্স’—চ্যাটের ভেতরেই হালকা এআই ফটো এডিট

সৃষ্টির পথে শান্তির সন্ধান

০১:০১:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫

টিম রবিন্সের নাম বললেই সাধারণত তার অভিনয় ক্যারিয়ার ও স্মরণীয় চরিত্রগুলো মনে আসে, যেমন “শওশ্যাঙ্ক রিডেম্পশন” সিনেমায় এক অভিযুক্ত খুনি অ্যান্ডি ডুফ্রেইনের চরিত্রে তার অভিনয় বা “মিস্টিক রিভার”-এ ডেভ চরিত্রে তার অসামান্য কাজ। তবে হলিউডের বাইরে রবিন্স যে কাজটি করেছেন, সেটি তার জীবনের একটি বড় দিক, যেখানে তিনি “দ্য অ্যাকটরস গ্যাং” থিয়েটার গ্রুপের মাধ্যমে কম সুবিধাপ্রাপ্ত এবং বিশেষ করে কারাবন্দী মানুষদের জন্য থিয়েটার আনতে কাজ করেছেন।

থিয়েটারের প্রতি ভালোবাসা:
১৯৮১ সালে “দ্য অ্যাকটরস গ্যাং” প্রতিষ্ঠার পর থেকেই রবিন্স বলেছেন, থিয়েটার তার জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। “এটা হলো আমার জন্য মানসিক এবং আত্মিকভাবে টিকে থাকার শক্তি,” রবিন্স বলেন। থিয়েটার তার জন্য এমন একটি মাধ্যম যা কখনোই স্থির থাকবে না এবং এটি ক্রমাগত পরিবর্তিত হয়।

শিল্পের স্বাধীনতা:
রবিন্সের জন্য থিয়েটার শুধু একটি শিল্প নয়, বরং এটি স্বাধীনতার একটি হাতিয়ার। “আমার উদ্দেশ্য ছিল শিল্পের মধ্যে স্বাধীনতা খুঁজে পাওয়া।” হলিউডে তার অভিজ্ঞতা যাই হোক, “দ্য অ্যাকটরস গ্যাং” তাকে সৃজনশীলতার স্বাধীনতা দিয়েছে, যেখানে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশের বাইরে গেয়ে সত্যিকার অর্থে মানুষের সাথে সংযোগ স্থাপন করা যায়।

থিয়েটারের মাধ্যমে মুক্তি:
রবিন্স এবং তার গ্রুপের সবচেয়ে বড় সফলতা তাদের “প্রিজন প্রজেক্টে”। এই প্রকল্পের মাধ্যমে, তারা কারাগারে বন্দিদের জন্য থিয়েটার কর্মশালা পরিচালনা করে, যা তাদের অপরাধপ্রবণতা কমাতে সাহায্য করছে। ২০০৬ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে বন্দিরা নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং সমস্যা সমাধানে থিয়েটারকে একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে শিখছে। তাদের ১০ শতাংশ রিসিডিভিজম রেট বর্তমানের তুলনায় অনেক কম।

একটি নিরাপদ জায়গা:
“দ্য অ্যাকটরস গ্যাং”-এর মূল উদ্দেশ্য ছিল একটি নিরাপদ জায়গা তৈরি করা, যেখানে মানুষ নিজেদের সৃজনশীলতা প্রকাশ করতে পারে, এবং যেখানে কারাগারে বসবাসরত মানুষরা তাদের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রণা এবং দ্বন্দ্ব নিয়ে কাজ করতে পারে। এটি সত্যিকার অর্থে তাদের সামাজিক কর্মে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে।

মনে রাখতে হবে মানুষের শেয়ারড মানবতা:
রবিন্সের মতে, “থিয়েটার এমন একটি শক্তি যা মানুষের মধ্যে শেয়ারড মানবতা তৈরি করতে পারে।” এটি তার থিয়েটার প্রযোজনাগুলির একটি মূল দিক। যেমন, “টপসি টারভি” একটি নাটক যেখানে একেবারে বিপরীত চরিত্রগুলো একে অপরকে দেখে এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে নিজেদের সম্পর্কের গুরুত্ব অনুভব করে।

কোভিড-১৯ পরবর্তী থিয়েটার:
কোভিড-১৯ মহামারীর সময় থিয়েটারের বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে রবিন্স ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে, “টপসি টারভি” নাটকটি এটি প্রতিফলিত করে যে, মানুষ যদি একে অপরের প্রতি সহানুভূতি এবং মানবিকতা অব্যাহত রাখে, তবে তারা সমস্ত অস্থিরতা এবং বিভাজন কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে।

টিম রবিন্সের জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষাটি হচ্ছে “যতদিন বাঁচতে পারো, বাঁচো,” যা তার বিভিন্ন কাজের মধ্যে প্রতিফলিত হয়। “দ্য অ্যাকটরস গ্যাং” এর মাধ্যমে, তিনি এক অপরিসীম থিয়েটার জগতের পথ প্রদর্শক, যেখানে জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা, মানবিকতা এবং আনন্দের সন্ধান করা হয়।

#টিমরবিন্স #দ্যঅ্যাকটরসগ্যাং #থিয়েটার #কারাগার #মুক্তিরমাধ্যম