দিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লার কাছে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণে ৮ জন নিহত ও কমপক্ষে ২০ জন আহত হওয়ার ঘটনায় ভারত সরকার এটিকে “সন্ত্রাসী হামলা” হিসেবে ঘোষণা করেছে। সরকার জানিয়েছে, অপরাধীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে।
তদন্ত-সংশ্লিষ্ট তিনটি সূত্র বলছে, দিল্লির বিস্ফোরণের সঙ্গে কাশ্মীরে সাম্প্রতিক গ্রেপ্তার হওয়া সাতজনের কোনো যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই সাতজনের কাছ থেকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক তৈরির উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছিল।
বিস্ফোরণের বিবরণ
সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লির লালকেল্লার বাইরে হওয়া বিস্ফোরণটি ২০১১ সালের পর রাজধানীতে প্রথম বড় ধরনের হামলা। ভারতের ৩ কোটির বেশি মানুষের বসবাসের এই নগরীতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকার পরও এমন ঘটনা উদ্বেগ তৈরি করেছে।
সরকার জানিয়েছে, এই ঘটনা কঠোর সন্ত্রাসবাদবিরোধী আইনে তদন্ত করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত কাউকে চিহ্নিত বা গ্রেপ্তার করা হয়নি।
বুধবার রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা এক প্রস্তাবে জানায় —
“দেশের বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক শক্তির দ্বারা সংঘটিত জঘন্য সন্ত্রাসী হামলা এটি। তদন্ত দ্রুত ও পেশাদারভাবে এগিয়ে নিয়ে অপরাধী, সহযোগী এবং পৃষ্ঠপোষকদের আইনের আওতায় আনতে হবে।”

কাশ্মীরে সাতজন গ্রেপ্তার: দুই ডাক্তারসহ
দিল্লি বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের এক পৃথক সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে দুই ডাক্তারসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে কাশ্মীর ছাড়াও দিল্লি সংলগ্ন হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশে অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে উদ্ধার করা হয়:
- ২টি পিস্তল
- ২টি অ্যাসল্ট রাইফেল
- ২,৯০০ কেজি বিস্ফোরক তৈরির রাসায়নিক
কাশ্মীর পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়, তদন্তে একটি “হোয়াইট-কলার টেরর নেটওয়ার্ক” উন্মোচিত হয়েছে, যেখানে পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীরা বিদেশি হ্যান্ডলারের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এই নেটওয়ার্ক পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ ও আনসার গজওয়াত-উল-হিন্দের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর মন্তব্য করার অনুরোধে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
ভারত দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে — পাকিস্তান কাশ্মীরে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন করে, যদিও ইসলামাবাদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে। ১৯৮৯ সাল থেকে কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতায় বহু মানুষ নিহত হয়েছে, যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সহিংসতা কিছুটা কমেছে।
এই বছরের এপ্রিলে হিন্দু পর্যটকদের ওপর হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ভারত দাবি করে, পাকিস্তান-সমর্থিত জঙ্গিরাই এ হামলা চালিয়েছে, যদিও পাকিস্তান তা নাকচ করে। ওই ঘটনার পর দুই দেশের মধ্যে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সামরিক উত্তেজনা তৈরি হয়, যা চার দিনের লড়াইয়ের পর যুদ্ধবিরতিতে গড়ায়।
দিল্লি বিস্ফোরণ ও কাশ্মীর গ্রেপ্তারের সম্ভাব্য যোগসূত্র
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, বিস্ফোরিত গাড়ির চালকের সঙ্গে গ্রেপ্তার সাতজনের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একটি সূত্র বলছে, বিস্ফোরক গাড়ির চালক দুই ডাক্তার গ্রেপ্তারদের একজনের সহকর্মী কি না, সেটিও পরীক্ষা করা হচ্ছে।
দিল্লি পুলিশ ও জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

কাশ্মীরে ব্যাপক অভিযান
দিল্লির বিস্ফোরণের পর কাশ্মীর জুড়ে শত শত স্থানে অভিযান চালায় পুলিশ। প্রায় ৫০০ মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হলেও অধিকাংশকে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
#DelhiBlast #KashmirArrest #TerrorAttack #IndiaSecurity #SaraKhonReport
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















