০৬:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
নদী ভাঙনে বদলে যাচ্ছে উত্তরবাংলার জীবন: মাটি, ঘর আর স্বপ্ন একসঙ্গে হারাচ্ছে মানুষ বাংলাদেশে ইস্পোর্টসের উত্থান: গেমার তরুণরা গড়ছে নতুন ক্যারিয়ার প্রবাসীরা প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন যে পদ্ধতিতে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে ভারত কেন সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে? স্ট্রেঞ্জার থিংস ৫ ইভেন্টে ফটোগ্রাফারকে ‘ইউ স্মাইল’—মিলি ববি ব্রাউনের এক ঝটকা জবাব ভাইরাল অনলাইন স্ক্যাম এখন ডকুমেন্টারির গল্প নয়—রোলিং স্টোন জানালো ঠকবে কি না, বুঝবেন কীভাবে কানাডা–মার্কিন সীমান্তে আরও তেল নিয়ে যেতে এনারব্রিজের ১.৪ বিলিয়ন ডলারের নতুন পরিকল্পনা মাইক্রোসফটকে বিলিয়ন ডলার দিচ্ছে ওপেনএআই—ফাঁস হওয়া তথ্য জানাল এআই দৌড়ের আসল খরচ অপরাধ আর অভিবাসন ইস্যুতে ডান দিকে সরে যাচ্ছে চিলির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছুটির দিনেও বিষাক্ত বাতাসে ঢাকা, রাজধানীবাসীর ‘স্বাভাবিক’ হয়ে যাওয়া অস্বস্তি

অপরাধ আর অভিবাসন ইস্যুতে ডান দিকে সরে যাচ্ছে চিলির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

চিলির ভোটের মাঠে নিরাপত্তা ইস্যুর উত্থান

চিলির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এখনও কিছুটা দূরে, কিন্তু ভোটের হাওয়া ইতিমধ্যে ডান দিকে ঘুরে গেছে। বাড়তে থাকা অপরাধ, মাদকচক্র ও অনিয়মিত অভিবাসনের খবর ভোটারদের মনে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে, যা ডান ও অতিডান ধারা রাজনীতিকদের জন্য বড় সুযোগ হয়ে উঠেছে। তারা আইনশৃঙ্খলা জোরদার, কঠোর সাজা, সীমান্তে কঠিন নজরদারি আর দ্রুত অভিযানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সমর্থন টানছেন, বিশেষ করে শহুরে মধ্যবিত্ত এলাকায়। সাম্প্রতিক জরিপে দেখা যাচ্ছে, আগে যেখানে অনেক ভোটার সামাজিক সংস্কার ও নতুন সংবিধানকে অগ্রাধিকার দিতেন, এখন তাঁদের অধিকাংশের প্রথম চিন্তা অপরাধ দমন ও সীমান্ত নিরাপত্তা।

২০১৯ সালের গণঅসন্তোষের পর যে পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তার অনেকটাই বাস্তবে ধীরে এগোচ্ছে—এমন অনুভূতিও ক্ষোভ বাড়াচ্ছে। করোনা–পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার অসম, মুদ্রাস্ফীতি আর অনিশ্চিত চাকরির বাজার সাধারণ মানুষের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এ অবস্থায় কনজারভেটিভ প্রার্থীরা বেশি কাড়াবিনেরো মোতায়েন, নজরদারি ক্যামেরা ও ডিজিটাল ট্র্যাকিং বাড়ানো, এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে যৌথ অভিযানের কথা বলছেন। বাম ও কেন্দ্রঘেঁষা প্রার্থীরা সতর্ক করছেন—এ রকম ভাষণ অভিবাসীদের, বিশেষ করে ভেনেজুয়েলা ও হাইতি থেকে আসা মানুষদের, সহজেই অপরাধীর তকমা গায়ে লাগিয়ে দিতে পারে। কিন্তু তারাও জানেন, নিরাপত্তা প্রশ্নে দুর্বল ইমেজ নিয়ে ভোটে নামা ঝুঁকিপূর্ণ।

Presidential candidate Jeannette Jara of the Unidad por Chile coalition leads a campaign rally ahead of general elections, in Santiago, Chile, Tuesday, Nov. 11, 2025. (AP Photo/Luis Hidalgo)

অভিবাসন বিতর্ক ও আঞ্চলিক হিসাব

অভিবাসন ইস্যুটি এখন পুরো নির্বাচনের দ্বিতীয় বড় স্তম্ভ হয়ে উঠেছে, যা সরাসরি সমাজের স্থিতিশীলতার আলোচনার সঙ্গে জড়িয়ে আছে। ডানপন্থি প্রার্থীরা বলছেন, আগের সরকারগুলো মানবিক নীতির আড়ালে সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় শিথিলতা দেখিয়েছে, যার সুযোগ নিয়েছে সংগঠিত অপরাধচক্র। তারা কঠোর ভিসা নিয়ম, অপরাধে দোষী প্রমাণিত বিদেশিদের দ্রুত বহিষ্কার এবং উত্তরের সীমান্তে নতুন অবকাঠামো গড়ে তোলার অঙ্গীকার করছেন।

উদারপন্থি ও মধ্যমপন্থি প্রার্থীরা পাল্টা বলছেন, শুধু দরজা বন্ধ করে দিলে চিলি তার মানবাধিকার–পন্থি ভাবমূর্তি ধরে রাখতে পারবে না। তাঁদের প্রস্তাব হলো—মাইগ্র্যান্ট ঘনবসতিপূর্ণ মিউনিসিপ্যালিটিগুলোকে অতিরিক্ত বাজেট দেওয়া, আশ্রয়–আবেদনের দ্রুত নিষ্পত্তি, এবং শ্রমবাজারে অভিবাসী শোষণ ঠেকাতে বিশেষ পরিদর্শন টিম গড়া। মানবাধিকার সংগঠনগুলো সব শিবিরকেই সতর্ক করছে, যেন নির্বাচনী ভাষণে অভিবাসীদের শত্রু হিসেবে আঁকা না হয়; কারণ ইতিমধ্যেই অনলাইন ঘৃণামূলক প্রচার আর দৈনন্দিন অপমানের ঘটনা বেড়েছে। শেষ পর্যন্ত যে–ই জিতুক, এই নির্বাচন চিলির জন্য নিরাপত্তা, অভিবাসন নীতি ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের নতুন ভারসাম্য ঠিক করে দেবে—এ ধারণা এখন দেশজুড়ে আলোচনায়।

Presidential candidate Jose Antonio Kast, left, of the Republican Party and his wife Maria Pia Adriasola wave to supporters at a campaign rally ahead of general elections, in Santiago, Chile, Tuesday, Nov. 11, 2025. (AP Photo/Esteban Felix)

 

Presidential candidate Johannes Kaiser of the National Libertarian Party gestures during a rally ahead of upcoming general elections, in Santiago, Chile, Wednesday, Nov. 12, 2025. (AP Photo/Esteban Felix)

 

A soldier guards the old Mapocho train station, now a cultural center, that will be used as a polling station for the general election in Santiago, Chile, Friday, Nov. 14, 2025. (AP Photo/Esteban Felix)

জনপ্রিয় সংবাদ

নদী ভাঙনে বদলে যাচ্ছে উত্তরবাংলার জীবন: মাটি, ঘর আর স্বপ্ন একসঙ্গে হারাচ্ছে মানুষ

অপরাধ আর অভিবাসন ইস্যুতে ডান দিকে সরে যাচ্ছে চিলির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

০৩:৫০:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

চিলির ভোটের মাঠে নিরাপত্তা ইস্যুর উত্থান

চিলির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এখনও কিছুটা দূরে, কিন্তু ভোটের হাওয়া ইতিমধ্যে ডান দিকে ঘুরে গেছে। বাড়তে থাকা অপরাধ, মাদকচক্র ও অনিয়মিত অভিবাসনের খবর ভোটারদের মনে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে, যা ডান ও অতিডান ধারা রাজনীতিকদের জন্য বড় সুযোগ হয়ে উঠেছে। তারা আইনশৃঙ্খলা জোরদার, কঠোর সাজা, সীমান্তে কঠিন নজরদারি আর দ্রুত অভিযানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সমর্থন টানছেন, বিশেষ করে শহুরে মধ্যবিত্ত এলাকায়। সাম্প্রতিক জরিপে দেখা যাচ্ছে, আগে যেখানে অনেক ভোটার সামাজিক সংস্কার ও নতুন সংবিধানকে অগ্রাধিকার দিতেন, এখন তাঁদের অধিকাংশের প্রথম চিন্তা অপরাধ দমন ও সীমান্ত নিরাপত্তা।

২০১৯ সালের গণঅসন্তোষের পর যে পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তার অনেকটাই বাস্তবে ধীরে এগোচ্ছে—এমন অনুভূতিও ক্ষোভ বাড়াচ্ছে। করোনা–পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার অসম, মুদ্রাস্ফীতি আর অনিশ্চিত চাকরির বাজার সাধারণ মানুষের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এ অবস্থায় কনজারভেটিভ প্রার্থীরা বেশি কাড়াবিনেরো মোতায়েন, নজরদারি ক্যামেরা ও ডিজিটাল ট্র্যাকিং বাড়ানো, এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে যৌথ অভিযানের কথা বলছেন। বাম ও কেন্দ্রঘেঁষা প্রার্থীরা সতর্ক করছেন—এ রকম ভাষণ অভিবাসীদের, বিশেষ করে ভেনেজুয়েলা ও হাইতি থেকে আসা মানুষদের, সহজেই অপরাধীর তকমা গায়ে লাগিয়ে দিতে পারে। কিন্তু তারাও জানেন, নিরাপত্তা প্রশ্নে দুর্বল ইমেজ নিয়ে ভোটে নামা ঝুঁকিপূর্ণ।

Presidential candidate Jeannette Jara of the Unidad por Chile coalition leads a campaign rally ahead of general elections, in Santiago, Chile, Tuesday, Nov. 11, 2025. (AP Photo/Luis Hidalgo)

অভিবাসন বিতর্ক ও আঞ্চলিক হিসাব

অভিবাসন ইস্যুটি এখন পুরো নির্বাচনের দ্বিতীয় বড় স্তম্ভ হয়ে উঠেছে, যা সরাসরি সমাজের স্থিতিশীলতার আলোচনার সঙ্গে জড়িয়ে আছে। ডানপন্থি প্রার্থীরা বলছেন, আগের সরকারগুলো মানবিক নীতির আড়ালে সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় শিথিলতা দেখিয়েছে, যার সুযোগ নিয়েছে সংগঠিত অপরাধচক্র। তারা কঠোর ভিসা নিয়ম, অপরাধে দোষী প্রমাণিত বিদেশিদের দ্রুত বহিষ্কার এবং উত্তরের সীমান্তে নতুন অবকাঠামো গড়ে তোলার অঙ্গীকার করছেন।

উদারপন্থি ও মধ্যমপন্থি প্রার্থীরা পাল্টা বলছেন, শুধু দরজা বন্ধ করে দিলে চিলি তার মানবাধিকার–পন্থি ভাবমূর্তি ধরে রাখতে পারবে না। তাঁদের প্রস্তাব হলো—মাইগ্র্যান্ট ঘনবসতিপূর্ণ মিউনিসিপ্যালিটিগুলোকে অতিরিক্ত বাজেট দেওয়া, আশ্রয়–আবেদনের দ্রুত নিষ্পত্তি, এবং শ্রমবাজারে অভিবাসী শোষণ ঠেকাতে বিশেষ পরিদর্শন টিম গড়া। মানবাধিকার সংগঠনগুলো সব শিবিরকেই সতর্ক করছে, যেন নির্বাচনী ভাষণে অভিবাসীদের শত্রু হিসেবে আঁকা না হয়; কারণ ইতিমধ্যেই অনলাইন ঘৃণামূলক প্রচার আর দৈনন্দিন অপমানের ঘটনা বেড়েছে। শেষ পর্যন্ত যে–ই জিতুক, এই নির্বাচন চিলির জন্য নিরাপত্তা, অভিবাসন নীতি ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের নতুন ভারসাম্য ঠিক করে দেবে—এ ধারণা এখন দেশজুড়ে আলোচনায়।

Presidential candidate Jose Antonio Kast, left, of the Republican Party and his wife Maria Pia Adriasola wave to supporters at a campaign rally ahead of general elections, in Santiago, Chile, Tuesday, Nov. 11, 2025. (AP Photo/Esteban Felix)

 

Presidential candidate Johannes Kaiser of the National Libertarian Party gestures during a rally ahead of upcoming general elections, in Santiago, Chile, Wednesday, Nov. 12, 2025. (AP Photo/Esteban Felix)

 

A soldier guards the old Mapocho train station, now a cultural center, that will be used as a polling station for the general election in Santiago, Chile, Friday, Nov. 14, 2025. (AP Photo/Esteban Felix)