মাটির নিচে নদীর খরা
উত্তরাঞ্চলে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তাতীরের মানুষ প্রতিদিন দেখছেন—তাদের জমি, ঘরবাড়ি আর স্মৃতিভরা উঠোন নদীর ভাঙনে মিলিয়ে যাচ্ছে। তীব্র বন্যা, বরফগলা পানি আর দুর্বল বাঁধ মিলিয়ে নদীভাঙন এমন গতিতে বেড়েছে যে অনেক পরিবার রাতারাতি নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। বাড়ি ভেঙে গেলে তার সঙ্গে হারিয়ে যায় চাষের জমি, কাজের সুযোগ, আর দীর্ঘদিনের প্রতিবেশী সম্পর্ক।
যারা কৃষিকাজ বা মাছধরা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন, তাদের অনেকেই বাধ্য হচ্ছেন শহরে স্বল্প-মজুরির কাজ নিতে। মানসিক চাপও কম নয়—দশকের পুরোনো বাড়ি, পরিবারিক জমি আর পরিচিত পাড়া একদিনেই নদীতে বিলীন হয়ে যায়। উদ্ধার ও পুনর্বাসন সংস্থাগুলোর জন্য পুরো গ্রাম স্থানান্তর করা একটি জটিল ও ব্যয়সাপেক্ষ কাজ।
সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি অঞ্চল
নদীভাঙন শুধু পরিবেশগত সঙ্কট নয়—এটি বদলে দিচ্ছে সমগ্র অঞ্চলের সামাজিক গঠন। চাষের জমি কমে যাওয়ায় খাদ্য সংকট বাড়ছে, গ্রামীণ দারিদ্র্য তীব্র হচ্ছে এবং শহরমুখী অভিবাসন দ্রুত বাড়ছে। নীতিনির্ধারকদের এখন জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ মেরামত, আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা এবং পরিকল্পিত পুনর্বাসন নীতি গ্রহণের চাপ বাড়ছে।
পাশাপাশি স্থানীয়রা নিজেদের মতো করে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন—ছোট সঞ্চয় গোষ্ঠী তৈরি, ধীরে ধীরে স্থানান্তর পরিকল্পনা এবং বিকল্প পেশার সন্ধান। তবে মূল সত্যটি স্পষ্ট—অনেক এলাকায় আর আগের মতো নিরাপদ নয় বাসস্থান। বেঁচে থাকার জন্য মানুষের বাড়ি না বদলানোর উপায়ও নেই।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















