০৬:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
নদী ভাঙনে বদলে যাচ্ছে উত্তরবাংলার জীবন: মাটি, ঘর আর স্বপ্ন একসঙ্গে হারাচ্ছে মানুষ বাংলাদেশে ইস্পোর্টসের উত্থান: গেমার তরুণরা গড়ছে নতুন ক্যারিয়ার প্রবাসীরা প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন যে পদ্ধতিতে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে ভারত কেন সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে? স্ট্রেঞ্জার থিংস ৫ ইভেন্টে ফটোগ্রাফারকে ‘ইউ স্মাইল’—মিলি ববি ব্রাউনের এক ঝটকা জবাব ভাইরাল অনলাইন স্ক্যাম এখন ডকুমেন্টারির গল্প নয়—রোলিং স্টোন জানালো ঠকবে কি না, বুঝবেন কীভাবে কানাডা–মার্কিন সীমান্তে আরও তেল নিয়ে যেতে এনারব্রিজের ১.৪ বিলিয়ন ডলারের নতুন পরিকল্পনা মাইক্রোসফটকে বিলিয়ন ডলার দিচ্ছে ওপেনএআই—ফাঁস হওয়া তথ্য জানাল এআই দৌড়ের আসল খরচ অপরাধ আর অভিবাসন ইস্যুতে ডান দিকে সরে যাচ্ছে চিলির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছুটির দিনেও বিষাক্ত বাতাসে ঢাকা, রাজধানীবাসীর ‘স্বাভাবিক’ হয়ে যাওয়া অস্বস্তি

মাইক্রোসফটকে বিলিয়ন ডলার দিচ্ছে ওপেনএআই—ফাঁস হওয়া তথ্য জানাল এআই দৌড়ের আসল খরচ

ফাঁস হওয়া নথিতে রাজস্ব বণ্টন ও ক্লাউড খরচের ছবি

ওপেনএআই ও মাইক্রোসফটের মধ্যে অর্থের লেনদেন এত বড় আকারের—এটা ধারণা ছিল, কিন্তু কত বড় তা এবার সংখ্যায় ফুটে উঠেছে। টেকক্রাঞ্চের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা ফাঁস নথি বলছে, ২০২৪ সালে মাইক্রোসফট ওপেনএআই থেকে রাজস্ব ভাগাভাগির মাধ্যমে শত শত মিলিয়ন ডলার পেয়েছে, আর ২০২৫ সালের প্রথম তিন প্রান্তিকে সেই অঙ্ক আরও দ্রুত বেড়েছে। এই সম্পর্ক একমুখী নয়; ওপেনএআই শুধু ক্লাউড ভাড়া দেয় না, নিজস্ব বিক্রির একটি অংশ মাইক্রোসফটকে দেয়, আবার বিং ও অ্যাজুর ওপেনএআই সার্ভিস থেকে হওয়া আয়ের একটি অংশ মাইক্রোসফট ওপেনএআইকে ফিরিয়েও দেয়। এভাবে দুই পক্ষের মধ্যে জটিল আর্থিক প্রবাহ তৈরি হয়েছে, যা পুরো এআই ইকোসিস্টেমের ক্ষমতার ভারসাম্য বোঝার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

নথি থেকে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, ওপেনএআই এখন বছরে কয়েক বিলিয়ন ডলার রাজস্ব তুলছে, কিন্তু সেই সঙ্গে “ইনফারেন্স” বা ব্যবহার–পর্যায়ের কম্পিউট খরচও আকাশচুম্বী। প্রতিবার কোনো ব্যবহারকারী চ্যাটজিপিটি বা এপিআই কল চালালে যে কম্পিউট শক্তি খরচ হয়, সেটিই ইনফারেন্স; আর সেই জন্য দেওয়া বিলই এখন কোম্পানির মোট ব্যয়ের বড় অংশ। প্রতিবেদনে উদ্ধৃত বিশ্লেষণে ধারণা করা হচ্ছে, কিছু সময়কালে ওপেনএআই যে রাজস্ব আয় করছে, তার সমান বা তারও বেশি অর্থ শুধু ইনফারেন্সে খরচ হয়ে যেতে পারে। ফলে নতুন প্রশ্ন উঠছে—মূল্য বাড়ানো, আরও বড় গ্রাহক পাওয়া বা সম্পূর্ণ নতুন ব্যবসা ছাড়া এমন ব্যয় কাঠামো কতটা টেকসই।

এআই অবকাঠামো আর ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ

এই তথ্য আরেকটি বিষয়ও পরিষ্কার করছে—উন্নত এআই তৈরির ক্ষমতা এখন কয়েকটি ক্লাউড জায়ান্টের হাতে অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত। ওপেনএআই শুরু থেকেই মূলত মাইক্রোসফট অ্যাজুরের ওপর নির্ভরশীল, পাশাপাশি অন্য কয়েকটি ক্লাউড কোম্পানির সঙ্গে সীমিত চুক্তি আছে। এর ফলে মাইক্রোসফট শুধু রাজস্ব ভাগ থেকে আয় করছে না, একই সঙ্গে দরকারি জিপিইউ, ডেটা সেন্টার ও নেটওয়ার্ক–অবকাঠামোর দরজাও হাতে ধরে রেখেছে। ছোট ও মাঝারি আকারের এআই স্টার্টআপের জন্য এটি আরও কঠিন বাস্তবতা—তাদেরও একই ক্লাউডে ভরসা করতে হয়, কিন্তু দরকষাকষির ক্ষমতা অনেক কম।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে সরকারগুলো আলোচনা শুরু করেছে—উচ্চক্ষমতার কম্পিউট কি আলাদা ধরনের “জাতীয় অবকাঠামো” হিসেবে দেখা উচিত, নাকি এটিকে বাজারের ওপরই ছেড়ে দেওয়া যাবে। কেউ কেউ মনে করেন, এত বিনিয়োগ আর এই মাত্রার হার্ডওয়্যার নিয়ন্ত্রণ কয়েকটি কোম্পানির হাতে থাকলে, নিরাপত্তা–মান মানা ও স্বচ্ছতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে বড় ঝুঁকি তৈরি হয়। আবার অনেকে বলছেন, এ ধরনের প্রকল্পের পরিসর ও প্রযুক্তিগত জটিলতা এত বেশি যে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপও সবসময় সমাধান নয়। আপাতত এতটুকু স্পষ্ট—ওপেনএআই–মাইক্রোসফট অংশীদারিত্ব এআই দুনিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জোটগুলোর একটি, আর এখানকার হিসাবই দেখিয়ে দিচ্ছে, শীর্ষে থাকতে কত বড় খরচ বইতে হচ্ছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

নদী ভাঙনে বদলে যাচ্ছে উত্তরবাংলার জীবন: মাটি, ঘর আর স্বপ্ন একসঙ্গে হারাচ্ছে মানুষ

মাইক্রোসফটকে বিলিয়ন ডলার দিচ্ছে ওপেনএআই—ফাঁস হওয়া তথ্য জানাল এআই দৌড়ের আসল খরচ

০৩:৫৫:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

ফাঁস হওয়া নথিতে রাজস্ব বণ্টন ও ক্লাউড খরচের ছবি

ওপেনএআই ও মাইক্রোসফটের মধ্যে অর্থের লেনদেন এত বড় আকারের—এটা ধারণা ছিল, কিন্তু কত বড় তা এবার সংখ্যায় ফুটে উঠেছে। টেকক্রাঞ্চের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা ফাঁস নথি বলছে, ২০২৪ সালে মাইক্রোসফট ওপেনএআই থেকে রাজস্ব ভাগাভাগির মাধ্যমে শত শত মিলিয়ন ডলার পেয়েছে, আর ২০২৫ সালের প্রথম তিন প্রান্তিকে সেই অঙ্ক আরও দ্রুত বেড়েছে। এই সম্পর্ক একমুখী নয়; ওপেনএআই শুধু ক্লাউড ভাড়া দেয় না, নিজস্ব বিক্রির একটি অংশ মাইক্রোসফটকে দেয়, আবার বিং ও অ্যাজুর ওপেনএআই সার্ভিস থেকে হওয়া আয়ের একটি অংশ মাইক্রোসফট ওপেনএআইকে ফিরিয়েও দেয়। এভাবে দুই পক্ষের মধ্যে জটিল আর্থিক প্রবাহ তৈরি হয়েছে, যা পুরো এআই ইকোসিস্টেমের ক্ষমতার ভারসাম্য বোঝার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

নথি থেকে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, ওপেনএআই এখন বছরে কয়েক বিলিয়ন ডলার রাজস্ব তুলছে, কিন্তু সেই সঙ্গে “ইনফারেন্স” বা ব্যবহার–পর্যায়ের কম্পিউট খরচও আকাশচুম্বী। প্রতিবার কোনো ব্যবহারকারী চ্যাটজিপিটি বা এপিআই কল চালালে যে কম্পিউট শক্তি খরচ হয়, সেটিই ইনফারেন্স; আর সেই জন্য দেওয়া বিলই এখন কোম্পানির মোট ব্যয়ের বড় অংশ। প্রতিবেদনে উদ্ধৃত বিশ্লেষণে ধারণা করা হচ্ছে, কিছু সময়কালে ওপেনএআই যে রাজস্ব আয় করছে, তার সমান বা তারও বেশি অর্থ শুধু ইনফারেন্সে খরচ হয়ে যেতে পারে। ফলে নতুন প্রশ্ন উঠছে—মূল্য বাড়ানো, আরও বড় গ্রাহক পাওয়া বা সম্পূর্ণ নতুন ব্যবসা ছাড়া এমন ব্যয় কাঠামো কতটা টেকসই।

এআই অবকাঠামো আর ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ

এই তথ্য আরেকটি বিষয়ও পরিষ্কার করছে—উন্নত এআই তৈরির ক্ষমতা এখন কয়েকটি ক্লাউড জায়ান্টের হাতে অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত। ওপেনএআই শুরু থেকেই মূলত মাইক্রোসফট অ্যাজুরের ওপর নির্ভরশীল, পাশাপাশি অন্য কয়েকটি ক্লাউড কোম্পানির সঙ্গে সীমিত চুক্তি আছে। এর ফলে মাইক্রোসফট শুধু রাজস্ব ভাগ থেকে আয় করছে না, একই সঙ্গে দরকারি জিপিইউ, ডেটা সেন্টার ও নেটওয়ার্ক–অবকাঠামোর দরজাও হাতে ধরে রেখেছে। ছোট ও মাঝারি আকারের এআই স্টার্টআপের জন্য এটি আরও কঠিন বাস্তবতা—তাদেরও একই ক্লাউডে ভরসা করতে হয়, কিন্তু দরকষাকষির ক্ষমতা অনেক কম।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে সরকারগুলো আলোচনা শুরু করেছে—উচ্চক্ষমতার কম্পিউট কি আলাদা ধরনের “জাতীয় অবকাঠামো” হিসেবে দেখা উচিত, নাকি এটিকে বাজারের ওপরই ছেড়ে দেওয়া যাবে। কেউ কেউ মনে করেন, এত বিনিয়োগ আর এই মাত্রার হার্ডওয়্যার নিয়ন্ত্রণ কয়েকটি কোম্পানির হাতে থাকলে, নিরাপত্তা–মান মানা ও স্বচ্ছতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে বড় ঝুঁকি তৈরি হয়। আবার অনেকে বলছেন, এ ধরনের প্রকল্পের পরিসর ও প্রযুক্তিগত জটিলতা এত বেশি যে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপও সবসময় সমাধান নয়। আপাতত এতটুকু স্পষ্ট—ওপেনএআই–মাইক্রোসফট অংশীদারিত্ব এআই দুনিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জোটগুলোর একটি, আর এখানকার হিসাবই দেখিয়ে দিচ্ছে, শীর্ষে থাকতে কত বড় খরচ বইতে হচ্ছে।