ভারতের রাষ্ট্রীয় তেল শোধনাগারগুলো ২০২৬ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) আমদানির জন্য তাদের প্রথম যৌথ দীর্ঘমেয়াদি টেন্ডার শেভরন, ফিলিপস ৬৬ এবং টোটালএনার্জিস ট্রেডিংকে দিয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত দুটি বাণিজ্যিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ভারতের লক্ষ্য: যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়ানো
ভারত যুক্তরাষ্ট্র থেকে জ্বালানি আমদানি বাড়াতে চাইছে, যাতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে বাণিজ্য ভারসাম্য উন্নত করা যায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০% আমদানি শুল্ক আরোপ করায় এই বাণিজ্য ঘাটতি দুই দেশের সম্পর্কের একটি বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যৌথ টেন্ডারের বিবরণ
তিন রাষ্ট্রীয় শোধনাগার সম্মিলিতভাবে ২০২৬ সালের জন্য প্রায় ৪৮টি ভিএলজিসি (খুব বড় গ্যাসবাহী জাহাজ)–এর সমপরিমাণ, অর্থাৎ প্রায় ২০ লাখ মেট্রিক টন এলপিজি আমদানির পরিকল্পনা করেছে।

দেশটির এলপিজি আমদানি করে প্রধানত ভারত অয়েল, ভারত পেট্রোলিয়াম ও হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম—যারা এটি ভর্তুকি মূল্যে গৃহস্থালি গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করে থাকে।
টেন্ডার অনুযায়ী, বিজয়ী কোম্পানিগুলো প্রতি চারটি কার্গোর মধ্যে একটি কার্গো যেকোনো উৎসের এলপিজি সরবরাহ করার সুযোগও পাবে।
কতটি কার্গো কোন কোম্পানিকে দেওয়া হয়েছে বা কী দামে চুক্তি হয়েছে—তা এখনও জানা যায়নি। ভারতীয় কোম্পানিগুলোসহ শেভরন, ফিলিপস ৬৬ এবং টোটালএনার্জিস—কোনো পক্ষই এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য পাঠানো ইমেইলে তৎক্ষণাৎ সাড়া দেয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্ব বাড়ছে
ভারত ২০২৬ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট রান্নার গ্যাস আমদানির প্রায় ১০% সংগ্রহ করার পরিকল্পনা করছে। এ বছর ভারত সুবিধাজনক মূল্য ব্যবধানের সুযোগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কিছু এলপিজি আমদানি করেছে, বিশেষ করে যখন চীন—ওয়াশিংটনের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধে—আমদানির গতি কমিয়ে দেয়।
ভারত আরও জানিয়েছিল যে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক—এলপিজিসহ—বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা বৃহত্তর বাণিজ্য চুক্তির অংশ।
মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরতা কমানোর কৌশল
যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলপিজি আমদানি বাড়লে ভারতের দীর্ঘদিনের মধ্যপ্রাচ্য নির্ভরতা কমবে।
২০২৪ সালে ভারত প্রায় ৩১ মিলিয়ন টন এলপিজির মধ্যে ৬৫% আমদানি করেছে। রাষ্ট্রীয় শোধনাগারগুলো মোট ২০.৪ মিলিয়ন টনের প্রায় ৯০%–ই আমদানি করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত ও সৌদি আরবের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির মাধ্যমে।
ভারত যখন আমদানির উৎস বৈচিত্র্য করার ঘোষণা দেয়, তখনই বড় উৎপাদক সৌদি আরামকো প্রোপেন ও বিউটেনের সরকারি বিক্রয়মূল্য দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনে।
#ভারত_যুক্তরাষ্ট্র_জ্বালানি_চু
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















