স্ট্রিমিং হিট থেকে হলভর্তি সিঙ্গ–অ্যালং শো
একটি অ্যানিমেটেড কে–পপ সংগীতধর্মী ছবি সীমিত দুদিনের সিঙ্গ–অ্যালং প্রদর্শনেই উত্তর আমেরিকার বক্স অফিসে প্রথম স্থানে উঠে এসে নতুন ইতিহাস গড়েছে। কাহিনিতে দেখা যায়, এক কাল্পনিক মেয়েদের ব্যান্ড স্টেজে গান গাওয়ার পাশাপাশি দানবের সঙ্গে লড়াই করে পৃথিবী রক্ষা করে। রঙিন অ্যানিমেশন, আকর্ষণীয় কোরিওগ্রাফি আর সহজে মুখস্থ হয়ে যাওয়ার মতো গানের কলিতে ছবি দ্রুতই শিশু ও কিশোরদের প্রিয় হয়ে ওঠে। স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রিয় থাকার পর প্রেক্ষাগৃহে সীমিত মুক্তি পাওয়ায়, অনেকের জন্য এটি ছিল একসঙ্গে গেয়ে ওঠার সুযোগ, যেন সিনেমা না দেখে সরাসরি কনসার্টে যোগ দিচ্ছেন।
মুক্তির আগেই ছবিটির সাউন্ডট্র্যাক আন্তর্জাতিক স্ট্রিমিং চার্টে দাপট দেখিয়েছে; কিছু গান তো যুক্তরাষ্ট্রের ডিজিটাল চার্টেও শীর্ষে উঠেছে। বাস্তব বিশ্বের অনেক কে–পপ ব্যান্ড যেখানে এ ধরনের মাইলফলক ছুঁতে সংগ্রাম করে, সেখানে একটি কাল্পনিক অ্যানিমেটেড গ্রুপ তা আংশিকভাবে হলেও করে দেখিয়েছে—এমন মন্তব্য করছেন অনেক ভক্ত। সিঙ্গ–অ্যালং শোগুলোতে দর্শকেরা স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে চুপ করে বসে থাকেননি; বরং হল জুড়ে একসঙ্গে গান গেয়ে, সংলাপ বলে ও চিয়ার করে অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।

স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের নতুন কৌশল ও কে–পপের ভবিষ্যৎ
নেটফ্লিক্স দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের সিনেমাকে খুব সীমিত সময়ের জন্য হলে চালিয়েছে, মূলত পুরস্কার প্রতিযোগিতার নিয়ম মানার জন্য। এবারকার সাফল্য দেখাচ্ছে, যখন কোনো কনটেন্ট প্ল্যাটফর্মে সাংস্কৃতিক ঘটনায় পরিণত হয়, তখন তাকে কেন্দ্র করে স্বল্প সময়ের হলেও প্রেক্ষাগৃহে “ইভেন্ট–স্টাইল” মুক্তি দিয়ে নতুন আয়ের পথ তৈরি করা যায়। নির্দিষ্ট কয়েকটি দিন, সিঙ্গ–অ্যালং ফর্ম্যাট, সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং হ্যাশট্যাগ এবং মার্চেন্ডাইজ—সব মিলিয়ে এটি ছিল সিনেমা ও কনসার্টের মাঝামাঝি এক অভিজ্ঞতা।
কে–পপ ইন্ডাস্ট্রির জন্যও এর প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ। এখানে বাস্তব আইডল গ্রুপের বদলে সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল চরিত্রগুলো দর্শকের মন জয় করেছে, তবু সগৌরবে বহন করছে কোরিয়ান পপের ভিজ্যুয়াল স্টাইল, নাচের ধরন ও আবেগের ঘনত্ব। ভবিষ্যতে বাস্তব শিল্পীরা কীভাবে ভার্চুয়াল প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজের লাইভ শো ও ভক্তসংযোগ সাজাবে, তা নিয়ে এখন থেকেই আলোচনা শুরু হয়েছে। আপাতত অনেকেই এটিকে একটি গেটওয়ে হিসেবে দেখছেন—যেখানে পরিবার–কেন্দ্রিক, অ্যানিমেটেড বিনোদনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে কে–পপের বৃহত্তর দুনিয়ার দিকে টেনে আনা হচ্ছে।
Sarakhon Report 


















