০৪:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
নন-প্রফিট কাঠামোতে যাচ্ছে মাষ্টডন, সিইও পদ ছাড়ছেন প্রতিষ্ঠাতা ইউজেন রখকো ঢাকায় ১০ মাসে ১৯৮ খুন- পুলিশ তথ্য বিশ্বজুড়ে তীব্র ক্ষুধা সংকটের সতর্কতা, তহবিল ঘাটতিতে বিপদে ডব্লিউএফপি দ্য গুড সামারিটান’ ছবিতে জাঁকিয়ে অ্যাকশনে ফিরছেন ডেইজি রিডলি নারীর যৌন হয়রানি : অভিযোগের হিমশৈল, প্রকাশ্যে শুধু চূড়া? দুনিয়া জুড়ে ম্যাচা জ্বর, চাপে জাপানের চা–খাত ও ভোক্তার আস্থা জ্বালানি নিরাপত্তায় ১৯ বিলিয়ন ডলারের পারমাণবিক বাজি ধরল চেক রিপাবলিক স্টার্টআপ ‘প্রজেক্ট প্রমিথিয়াস’-এ সহ–প্রধান নির্বাহী হয়ে এআই দুনিয়ায় ফিরছেন জেফ বেজোস ছেলের মৃত্যুতে অনশন ভাঙলেন সার্বীয় মা, রাস্তায় লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা ঝড়–বন্যা আগাম জানাবে এআই? ডিপমাইন্ডের নতুন আবহাওয়া মডেল নিয়ে জোর আলোচনা

উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় উত্তর কোরিয়াকে সামরিক আলোচনার প্রস্তাব দিল সিউল

সীমান্তে দুর্ঘটনা এড়াতে নতুন প্রস্তাব
দক্ষিণ কোরিয়া কোরীয় উপদ্বীপের অতি সামরিকায়িত সীমান্তে অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘর্ষ ঠেকাতে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে নতুন সামরিক আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে। সিউলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সীমান্তে আকস্মিক ঘটনা সামাল দিতে আবারও কর্মপর্যায়ের যোগাযোগ ও হটলাইন সচল করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথে সাম্প্রতিক গোলাবর্ষণ মহড়া, ড্রোন অনুপ্রবেশ আর প্রচারমূলক বেলুন উড়ানো—এসব কারণে ভুল বোঝাবুঝি ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে বলে সতর্ক করেছে তারা।

২০১৮ সালের আন্তঃকোরীয় সামরিক চুক্তির পর কিছু আস্থা গড়ে উঠেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে একের পর এক পাল্টা পদক্ষেপে সেই আস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। উত্তর কোরিয়া আবার সীমান্তের ভেতরে পাহারাকেন্দ্র স্থাপন করেছে, বেশি সেনা ও ভারী অস্ত্র এগিয়ে এনেছে এবং সীমান্তের কাছেই গোলাবর্ষণ মহড়া চালিয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়া আগের সমঝোতা অনুযায়ী কমিয়ে আনা কিছু নজরদারি কার্যক্রম পুনরায় জোরদার করেছে, তাদের দাবি—নিরাপত্তা পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলে গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সিউলের সংলাপ প্রস্তাবকে সমর্থন করলেও জোটের নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি ‘অটুট’ আছে বলেই জোর দিচ্ছে।

পিয়ংইয়ংয়ের নীরবতা, রাজনৈতিক হিসাব জটিল
এখন পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া এই প্রস্তাব নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। বরং তাদের সরকারি প্রচারমাধ্যমে ব্যস্ততা বাড়ছে নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শনী আর যুক্তরাষ্ট্র–দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ মহড়ার নিন্দায়। বিশ্লেষকদের মতে, কিম জং-উন খুব সহজে এমন কোনো আলোচনায় ফিরতে চাইবেন না, যা তার ‘শক্তি প্রদর্শনের’ সুযোগ সীমিত করে দিতে পারে। সীমান্তে গোলাবর্ষণ, ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ বা সামরিক ইউনিট পুনর্বিন্যাসের মতো নাটকীয় পদক্ষেপ তিনি কৌশলগত চাপ তৈরির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন।

তবু উত্তর কোরিয়ার সামনে আরেকটি বাস্তবতা আছে—একটি বড় ধরনের সংঘাত ছড়িয়ে পড়লে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা ও অর্থনৈতিক চাপ বাড়তে পারে, যা সীমিত বাণিজ্য ও জ্বালানি সরবরাহকে আরও ঝুঁকিতে ফেলবে। দক্ষিণ কোরিয়ার ভেতরে meanwhile সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দারা বারবার সাইরেন, গোলার শব্দ ও নিরাপত্তা অনিশ্চয়তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। পর্যটন, ছোট ব্যবসা আর জমি-বাড়ির দামের ওপর দীর্ঘস্থায়ী উত্তেজনার প্রভাব নিয়েও তারা চিন্তিত।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সীমান্ত এলাকায় এত বেশি আর্টিলারি ও রকেট মোতায়েন থাকায় যে কোনো ‘ছোট’ ঘটনা মুহূর্তে বড় সংঘাতে রূপ নিতে পারে। সিউল মহানগর আর আশপাশের শিল্পাঞ্চল মিলিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রায় অর্ধেক মানুষ এই আঘাতের আওতায় পড়ে যায়। ফলে সীমান্তে দুর্ঘটনা ঠেকাতে সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা পুনরায় চালু করা কূটনৈতিকভাবে ছোট হলেও নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।

জাপান, চীনসহ প্রতিবেশী দেশগুলোও পরিস্থিতি নজরে রেখেছে। তারা জানে, কোরীয় উপদ্বীপে কোনো বড় সংঘাত শুরু হলে তা বাণিজ্য, জাহাজ চলাচল ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার পুরো কাঠামোকেই নাড়িয়ে দিতে পারে। তাই সীমিত পরিসরে হলেও সামরিক সংলাপ শুরু হলে সেটাকে অনেকেই ঝুঁকি কমানোর বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ হিসেবে দেখবেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

নন-প্রফিট কাঠামোতে যাচ্ছে মাষ্টডন, সিইও পদ ছাড়ছেন প্রতিষ্ঠাতা ইউজেন রখকো

উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় উত্তর কোরিয়াকে সামরিক আলোচনার প্রস্তাব দিল সিউল

০২:১৫:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

সীমান্তে দুর্ঘটনা এড়াতে নতুন প্রস্তাব
দক্ষিণ কোরিয়া কোরীয় উপদ্বীপের অতি সামরিকায়িত সীমান্তে অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘর্ষ ঠেকাতে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে নতুন সামরিক আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে। সিউলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সীমান্তে আকস্মিক ঘটনা সামাল দিতে আবারও কর্মপর্যায়ের যোগাযোগ ও হটলাইন সচল করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথে সাম্প্রতিক গোলাবর্ষণ মহড়া, ড্রোন অনুপ্রবেশ আর প্রচারমূলক বেলুন উড়ানো—এসব কারণে ভুল বোঝাবুঝি ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে বলে সতর্ক করেছে তারা।

২০১৮ সালের আন্তঃকোরীয় সামরিক চুক্তির পর কিছু আস্থা গড়ে উঠেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে একের পর এক পাল্টা পদক্ষেপে সেই আস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। উত্তর কোরিয়া আবার সীমান্তের ভেতরে পাহারাকেন্দ্র স্থাপন করেছে, বেশি সেনা ও ভারী অস্ত্র এগিয়ে এনেছে এবং সীমান্তের কাছেই গোলাবর্ষণ মহড়া চালিয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়া আগের সমঝোতা অনুযায়ী কমিয়ে আনা কিছু নজরদারি কার্যক্রম পুনরায় জোরদার করেছে, তাদের দাবি—নিরাপত্তা পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলে গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সিউলের সংলাপ প্রস্তাবকে সমর্থন করলেও জোটের নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি ‘অটুট’ আছে বলেই জোর দিচ্ছে।

পিয়ংইয়ংয়ের নীরবতা, রাজনৈতিক হিসাব জটিল
এখন পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া এই প্রস্তাব নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। বরং তাদের সরকারি প্রচারমাধ্যমে ব্যস্ততা বাড়ছে নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শনী আর যুক্তরাষ্ট্র–দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ মহড়ার নিন্দায়। বিশ্লেষকদের মতে, কিম জং-উন খুব সহজে এমন কোনো আলোচনায় ফিরতে চাইবেন না, যা তার ‘শক্তি প্রদর্শনের’ সুযোগ সীমিত করে দিতে পারে। সীমান্তে গোলাবর্ষণ, ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ বা সামরিক ইউনিট পুনর্বিন্যাসের মতো নাটকীয় পদক্ষেপ তিনি কৌশলগত চাপ তৈরির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন।

তবু উত্তর কোরিয়ার সামনে আরেকটি বাস্তবতা আছে—একটি বড় ধরনের সংঘাত ছড়িয়ে পড়লে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা ও অর্থনৈতিক চাপ বাড়তে পারে, যা সীমিত বাণিজ্য ও জ্বালানি সরবরাহকে আরও ঝুঁকিতে ফেলবে। দক্ষিণ কোরিয়ার ভেতরে meanwhile সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দারা বারবার সাইরেন, গোলার শব্দ ও নিরাপত্তা অনিশ্চয়তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। পর্যটন, ছোট ব্যবসা আর জমি-বাড়ির দামের ওপর দীর্ঘস্থায়ী উত্তেজনার প্রভাব নিয়েও তারা চিন্তিত।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সীমান্ত এলাকায় এত বেশি আর্টিলারি ও রকেট মোতায়েন থাকায় যে কোনো ‘ছোট’ ঘটনা মুহূর্তে বড় সংঘাতে রূপ নিতে পারে। সিউল মহানগর আর আশপাশের শিল্পাঞ্চল মিলিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রায় অর্ধেক মানুষ এই আঘাতের আওতায় পড়ে যায়। ফলে সীমান্তে দুর্ঘটনা ঠেকাতে সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা পুনরায় চালু করা কূটনৈতিকভাবে ছোট হলেও নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।

জাপান, চীনসহ প্রতিবেশী দেশগুলোও পরিস্থিতি নজরে রেখেছে। তারা জানে, কোরীয় উপদ্বীপে কোনো বড় সংঘাত শুরু হলে তা বাণিজ্য, জাহাজ চলাচল ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার পুরো কাঠামোকেই নাড়িয়ে দিতে পারে। তাই সীমিত পরিসরে হলেও সামরিক সংলাপ শুরু হলে সেটাকে অনেকেই ঝুঁকি কমানোর বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ হিসেবে দেখবেন।