মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিলিপাইনের ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি কৃষিপণ্যের ওপর আরোপিত ‘পারস্পরিক’ শুল্ক তুলে দিয়েছেন। জীবনযাত্রার ব্যয় কমানো ও বাণিজ্য আলোচনার অগ্রগতির প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র ও ফিলিপাইনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
শুল্ক প্রত্যাহারে কী পরিবর্তন হলো
এখন থেকে ফিলিপাইনের কৃষিপণ্য যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্তভাবে রপ্তানি করা যাবে। এর ফলে দেশটির যুক্তরাষ্ট্রে মোট ১৪.৫ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির প্রায় অর্ধেক শুল্কমুক্ত হলো। এর আগে এসব কৃষিপণ্যের ওপর ১৯ শতাংশ শুল্ক আরোপিত ছিল।
কোন কোন পণ্যে শুল্ক উঠল
কলা, নারকেল, আম, শুকনো পেয়ারা, কফি, চা, মসলা এবং কিছু সার—এসব পণ্য এখন যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক ছাড়াই প্রবেশ করবে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, “পারস্পরিক বাণিজ্য আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি, কিছু পণ্যের দেশীয় চাহিদা এবং দেশীয় উৎপাদন সক্ষমতা বিবেচনায় কৃষিপণ্যের শুল্ক তুলে নেওয়া হয়েছে।”

ফিলিপাইনের অর্থনীতিতে সম্ভাব্য প্রভাব
ফিলিপাইনের বাণিজ্য দপ্তর জানায় যে ২০২৪ সালে কৃষিপণ্য থেকে আয় ছিল ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি এবং শিল্পপণ্য থেকে আয় ছিল ৫.৮ বিলিয়ন ডলার।
নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত ফ্রেডেরিক গো বলেছেন, “এগুলো আমাদের কৃষক ও গ্রামীণ অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার রপ্তানি সক্ষমতা, কর্মসংস্থান ও সরবরাহ চেইন শক্তিশালী করবে। এটি কৃষি ও রপ্তানি খাতের জন্য বড় জয়।”
সেমিকন্ডাক্টর রপ্তানির ভূমিকা
ফিলিপাইন এখন সেমিকন্ডাক্টর অ্যাসেম্বলি, টেস্টিং ও প্যাকেজিংয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। শুধু এই খাতই যুক্তরাষ্ট্রে দেশের মোট রপ্তানির প্রায় এক-চতুর্থাংশ দখল করে।
এখনো চূড়ান্ত নয় বাণিজ্য চুক্তি
ফিলিপাইনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য চুক্তি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। পোশাক, টেক্সটাইল ও আসবাবপত্রের শুল্ক নিয়ে আলোচনা চলমান। জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্র ফিলিপাইনের বেশিরভাগ পণ্যে ১৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, যা ছিল এপ্রিলে ঘোষণা করা ট্রাম্পের ‘লিবারেশন ডে’-র ১৭ শতাংশের থেকেও বেশি।

অর্থনীতি সংকটে, শুল্ক ছাড়ে কিছুটা স্বস্তি
তৃতীয় প্রান্তিকে ফিলিপাইনের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ৪ শতাংশ, যা বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার নিচে। বন্যা প্রতিরক্ষা তহবিলে বড় দুর্নীতি কেলেঙ্কারি অর্থনীতিকে আরও চাপে ফেলেছে। ভোক্তাচাহিদাই দেশটির প্রধান অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি, কারণ বড়-আকারের উৎপাদনশিল্প সেখানে নেই। মুদ্রা পেসো ডলারের বিপরীতে সর্বনিম্ন ৫৯.১৭-তে নেমেছিল ১২ নভেম্বর; মঙ্গলবার ছিল ৫৮.৯।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















