সারাদেশে শুক্রবারের শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর মাত্র একদিন না যেতেই শনিবার সকালে আবারও সাভারের বাইপাইল এলাকায় হালকা কম্পন অনুভূত হয়েছে। টানা দুই দিনের ভূকম্পনে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় ভূমিকম্প–ঝুঁকি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
গতকালের ভূমিকম্প: সংক্ষিপ্ত সারাংশ
শুক্রবার রিখটার স্কেলে ৫.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে বাংলাদেশে অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয় এবং বহু মানুষ আহত হন।
ঢাকায় ৪ জন, নারায়ণগঞ্জে ১ জন ও কেন্দ্রস্থল নরসিংদীতে ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
ঢাকার সূত্রাপুরের স্বামীবাগ ও কালাবাগানে ভবন হেলে পড়ার ঘটনায় আতঙ্ক আরও বৃদ্ধি পায়।
বহু স্থানে মানুষ রাস্তায় নেমে আসে এবং জরুরি সেবা কর্মীদের মোতায়েন বাড়ানো হয়।
আজকের ভূমিকম্পের মাত্রা ও কেন্দ্র
শনিবার সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে রিখটার স্কেলে ৩.৩ মাত্রার হালকা ভূকম্পন রেকর্ড করে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি)।
কেন্দ্র ছিল আগারগাঁওয়ের বিএমডি সিসমিক সেন্টার থেকে প্রায় ২৯ কিলোমিটার পশ্চিমে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ভূমিকম্প–ঝুঁকির ইতিহাস ও বর্তমান প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশ প্রধান টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষ অঞ্চলে অবস্থিত। দেশে রয়েছে একাধিক সক্রিয় ফল্ট লাইন, যা দীর্ঘদিন ধরে ভূমিকম্প–ঝুঁকি বাড়িয়ে রেখেছে।
১৮৬৯ থেকে ১৯৩০ সালের মধ্যে পাঁচটি বড় ভূমিকম্পে ৭.০ মাত্রার ওপরে কাঁপন রেকর্ড হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দীর্ঘ সময় শক্তিশালী ভূমিকম্প না হওয়াকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা হিসেবে ধরা উচিত নয়।
তাদের মতে, এমন নীরবতা বড় ধরনের ভূমিকম্পেরও পূর্বাভাস হতে পারে।
বর্ধিত সিসমিক কার্যকলাপ
২০২৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত দেশে ৬০টি ভূমিকম্প রেকর্ড হয়েছে।
এর মধ্যে ৩টির মাত্রা ছিল ৪.০-এর ওপরে এবং ৩১টির মাত্রা ৩.০ থেকে ৪.০-এর মধ্যে।
দ্রুত নগরায়ন, অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ এবং দুর্বল কাঠামোগত মান ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলছে।
ঢাকার ঝুঁকি ও পূর্বের উদাহরণ
বিশ্বের ২০টি সবচেয়ে ভূমিকম্প–ঝুঁকিপূর্ণ শহরের মধ্যে ঢাকা অন্যতম।
২০১৩ সালের রানা প্লাজা ধসে ১,১০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়, যা অনিরাপদ ভবন নির্মাণের বিপদের দৃষ্টান্ত।
২০১৮ সালের মূল্যায়নে দেখা যায়—মিরপুর, মোহাম্মদপুর, পল্লবী, রামপুরা, মতিঝিল ও খিলগাঁওয়ের বহু ভবন যথাযথ নকশা ও কাঠামোগত মান ছাড়া নির্মিত।
উচ্চ ঝুঁকির অঞ্চলসমূহ
চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম হিল ট্র্যাক্টস এবং সিলেটের জয়ন্তাপুরকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে ধরা হয়।
এই অঞ্চলের যেকোনো একটিতে বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে ঢাকার ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে।
#ভূমিকম্প #সাভার #বাইপাইল #ঢাকা #বাংলাদেশআবহাওয়া #দুর্যোগঝুঁকি #রিখটারস্কেল
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















