বাংলাদেশ রবিবার ঢাকার টেস্টে আয়ারল্যান্ডকে ২১৭ রানে হারিয়ে দুই ম্যাচের সিরিজ ২–০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে। পুরো ম্যাচজুড়ে আধিপত্য ছিল ব্যাটিং শক্তি, রেকর্ড গড়া পারফরম্যান্স এবং স্পিন আক্রমণের।
বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে ম্যাচ
অনাকাঙ্ক্ষিত ৫০৯ রানের লক্ষ্য নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে আয়ারল্যান্ড অলআউট হয় ২৯১ রানে। পঞ্চম দিনের শেষ বিকেল পর্যন্ত টেনে নেওয়া এই লড়াইয়ে বাংলাদেশকে শেষ চার উইকেট তুলতে লাগে ৫৯.৩ ওভার। টার্ন নিতে থাকা উইকেটে টাইজুল ইসলাম ও হাসান মুরাদের স্পিন জুটি শেষ পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডকে চেপে ধরে।
রেকর্ড ভেঙে এগিয়ে টাইজুল
শেষ ইনিংসেও মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন টাইজুল ইসলাম। প্রথম ইনিংসের চার উইকেটের সঙ্গে দ্বিতীয় ইনিংসে আরও চার শিকার করে ম্যাচে মোট আট উইকেট নেন তিনি। এর ফলে তিনি টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হয়ে যান—তার ঝুলিতে এখন ২৪৯ উইকেট, যা শাকিব আল হাসানকে পেছনে ফেলেছে।
হাসান মুরাদ দ্বিতীয় ইনিংসেও টাইজুলের সঙ্গে সমানতালে ছিলেন। তিনিও নেন চার উইকেট, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণে তার দীর্ঘমেয়াদি সম্ভাবনা শক্তভাবে তুলে ধরে।

আয়ারল্যান্ডের প্রতিরোধ
চতুর্থ ইনিংসে আয়ারল্যান্ডকে ভরসা জুগিয়েছেন কার্টিস ক্যাম্ফার। ২৫৯ বল মোকাবিলা করে অপরাজিত ৭১ রান করে তিনি মিরপুরে অন্যতম দীর্ঘ প্রতিরোধ গড়েছেন। এটি শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে চতুর্থ ইনিংসে কোনো ব্যাটারের সবচেয়ে দীর্ঘ ইনিংস।
হ্যারি টেক্টরও করেন শান্ত এক অর্ধশতক, তবে চারপাশে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পতন থামেনি।
ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের ভিত্তি মজবুত
প্রথম ইনিংসে ৪৭৬ রানের পাহাড় গড়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিম করেন সেঞ্চুরি এবং লিটন দাস খেলেন দুর্দান্ত ১২৮ রানের ইনিংস।
মুমিনুল হক করেন ৬৩ রান, আর শান্ত শুরু এনে দেন শাদমান ইসলাম ও মাহমুদুল হাসান জয়। অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের ছয় উইকেট আয়ারল্যান্ডকে খানিকটা দৃঢ়তা দিলেও বাংলাদেশের রান রোধ করতে পারেনি।
আয়ারল্যান্ডের প্রথম ইনিংস
প্রতিউত্তরে আয়ারল্যান্ড করে ২৬৫ রান। লর্কান টাকার অপরাজিত ৭৫ ও জর্ডান নিলের ৪৯ দলকে কিছুটা এগিয়ে নেয়। কিন্তু টাইজুল ও মুরাদের ধারাবাহিক আক্রমণে ইনিংসটি বারবার ভেঙে পড়ে। এ দুজন মিলে ছয় উইকেট ভাগাভাগি করেন।

দ্বিতীয় ইনিংসের ঘোষণা
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ২৯৭/৪ রানে ইনিংস ঘোষণা দেয়। মুমিনুলের ৮৭, শাদমানের ৭৮ এবং মাহমুদুলের ৬০ রানের ইনিংসে স্কোর বড় হয়।
মুশফিকুর রহিম ৫৩ রানে অপরাজিত থেকে নিজের মাইলফলককে আরও স্মরণীয় করে তোলেন।
মুশফিকের ঐতিহাসিক টেস্ট
এ ম্যাচটি ছিল মুশফিকুর রহিমের ১০০তম টেস্ট—বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম কোনো ক্রিকেটার এই কীর্তি স্পর্শ করলেন।
প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ফিফটি করে তিনি ক্রিকেট ইতিহাসে মাত্র ১১তম ব্যাটার হিসেবে ১০০তম টেস্টে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন।
স্পিনারদের শেষ চাপ
শেষ দুই দিনে টাইজুল, মুরাদ, মেহেদি হাসান মিরাজ ও খালেদ আহমেদের যৌথ আক্রমণে আয়ারল্যান্ড ব্যাটাররা ধীরে ধীরে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। সেশন ধরে চাপ সৃষ্টি করে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত বড় জয়ে মাঠ ছাড়ে।
#Bangladesh_Cricket Test_Series Dhaka_Test Ireland_Tour Cricket_News
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















