বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের জন্য পুনঃতফসিলের সুযোগ আরও বিস্তৃত করেছে। নতুন এই নীতির ফলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খেলাপি হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ হওয়া সব ধরনের ঋণ পুনঃতফসিলের আওতায় আসবে। এর লক্ষ্য হলো আর্থিক সংকটে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা ও অর্থনৈতিক কাঠামো পুনর্গঠনে সহায়তা করা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি) ২৪ নভেম্বর সোমবার এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
পুনঃতফসিলের মেয়াদ ও গ্রেস পিরিয়ড
নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ৩০ নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত যেসব ঋণ শ্রেণিবদ্ধ থাকবে, সেগুলো সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদে পুনঃতফসিল করা যাবে। পাশাপাশি সর্বোচ্চ দুই বছরের গ্রেস পিরিয়ড রাখা যাবে। অর্থাৎ এই সময়ের মধ্যে খেলাপি হওয়া ঋণগুলো নতুন নীতির আওতায় সুবিধা পাবে।
অশ্রেণিবদ্ধ ও পুনর্গঠিত ঋণে বিশেষ ছাড়
বিশেষ পুনর্গঠন সুবিধা:
অশ্রেণিবদ্ধ মেয়াদি ঋণ, এমনকি পূর্বে পুনঃতফসিল করা ঋণও আবার পুনর্গঠন করা যাবে। এর জন্য পূর্বের বিআরপিডি সার্কুলার নং ১৬/২০২২-এ উল্লেখিত মেয়াদের বাইরে অতিরিক্ত দুই বছর পর্যন্ত সময় যোগ করার সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

বিশেষ এক্সিট সুবিধায় নতুন নমনীয়তা
এক্সিট সুবিধার ক্ষেত্রে কয়েকটি শিথিলতা যুক্ত করা হয়েছে:
মেয়াদ বৃদ্ধি:
বিআরপিডি সার্কুলার নং ১৩/২০২৪ অনুযায়ী নির্ধারিত ডাউন পেমেন্ট গ্রহণের পাশাপাশি এক্সিট সুবিধার মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো যাবে।
কিস্তি পরিশোধের নিয়ম:
মাসিক বা ত্রৈমাসিক কিস্তি পরিশোধের নিয়ম অপরিবর্তিত থাকবে। তবে বছরে মোট পরিশোধের পরিমাণ মোট ঋণের কমপক্ষে ২০ শতাংশ হতে হবে।
শ্রেণিবিন্যাস:
এই সময়ে ঋণগুলো ‘এক্সিট (এসএমএ)’ হিসেবে দেখাতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সাধারণ সংরক্ষণ (General Provision) বজায় রাখতে হবে।
প্রভিশন সংক্রান্ত নির্দেশনা:
আগে রাখা নির্দিষ্ট প্রভিশন আদায় ছাড়া আয়ের হিসেবে স্থানান্তর করা যাবে না। তবে সাধারণ সংরক্ষণ বজায় রাখতে আংশিক স্থানান্তর করা যেতে পারে।
নতুন ঋণে নিষেধাজ্ঞা
সব বকেয়া ঋণ পুরোপুরি পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নতুন কোনও ঋণ সুবিধা দেওয়া যাবে না।
অপরিশোধের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা
যদি কোনো গ্রাহক টানা তিন মাসিক কিস্তি বা এক ত্রৈমাসিক কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হন, তবে ঋণ স্বাভাবিক নিয়মে পুনরায় শ্রেণিবদ্ধ করতে হবে।
এই নতুন নীতি কার্যকর হলে খেলাপি ও ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ ব্যবস্থাপনায় ব্যাংকগুলোর নমনীয়তা বাড়বে এবং চাপের মুখে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় কার্যক্রম স্বাভাবিক করার সুযোগ পাবে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















