০৩:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫
দুই দশক পর আবার ভারত বাজারে ব্রিটিশ কসমেটিক ব্র্যান্ড লাশ ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে শান্তি আলোচনার আশা, তেলের দামে নতুন পতন ব্ল্যাক ফ্রাইডে ২০২৫: টেক দুনিয়ার ডিসকাউন্ট দৌড়ে ক্রেতার বাস্তব পরীক্ষা পেশাওয়ারে নিরাপত্তা বাহিনীর সদরদপ্তরে আত্মঘাতী হামলা, নিহত পুলিশ কর্মকর্তা অন্তত ৩ চীনের ‘ঘোস্ট পার্টিকল’ গবেষণায় প্রথম উচ্চ-নির্ভুল ফলাফল রিমোর্সের রূপকথার মতো প্রত্যাবর্তনে মেইদান রেসকোর্সে আলোড়ন সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৯৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ক্ষতিকর সাইবার হামলার শিকার গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২১ নিহত বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর চিফ অব স্টাফ নিহত নাইজেরিয়ার ব্রোঞ্জ শিল্পীরা শতাব্দীপ্রাচীন কৌশল আঁকড়ে ধরে আছেন

জাতীয় অ্যানালিটিক্স প্ল্যাটফর্মে গবেষণা দ্রুততর, ডেটা সুরক্ষিত

সিঙ্গাপুরের জাতীয় অ্যানালিটিক্স প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রাস্ট’ (TRUST) গবেষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে। প্ল্যাটফর্মটি গবেষকদের স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা এবং জীবনযাত্রা–সংক্রান্ত অগণিত জাতীয় ডেটাসেট নিরাপদভাবে ব্যবহার করতে দিচ্ছে, ফলে নতুন অংশগ্রহণকারী সংগ্রহের জটিল প্রক্রিয়া ছাড়াই দ্রুত গবেষণা সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে। ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে চালু হওয়ার পর এটি ইতোমধ্যে প্রায় ৭০টি গবেষণা প্রকল্পে ব্যবহৃত হয়েছে।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে ব্যয়ের অপ্রত্যাশিত চিত্র

একটি স্থানীয় গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভকালীন ডায়াবেটিস (জিডিএম) না থাকা নারীরাই গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে বেশি হাসপাতাল ব্যয় করেছেন। গড়ে এই নারীদের হাসপাতাল খরচ ১,৩০০ ডলারের বেশি হয়েছে, যা গবেষকদের ধারণা মতে আগে শনাক্ত না হওয়া সমস্যার কারণে হতে পারে। অন্যদিকে, জিডিএম–যুক্ত নারীরা নিয়মিত স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের আওতায় থাকায় তাদের স্বাস্থ্য–ঝুঁকি আগে শনাক্ত হয়ে চিকিৎসা দ্রুত শুরু হয়।

এই বিশ্লেষণ করে এ–স্টারের গবেষক দল, যারা নিজেদের সংগ্রহ করা তথ্যের পাশাপাশি ট্রাস্ট প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে জাতীয় ডেটাবেস থেকে পাওয়া অ্যানোনিমাইজড তথ্য ব্যবহার করেন। প্ল্যাটফর্মটি ডেটাকে পরিচয়বিহীন করে গবেষকদের সরবরাহ করে, যাতে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকে।

ট্রাস্ট প্ল্যাটফর্মের ভূমিকা

ট্রাস্ট প্ল্যাটফর্ম গবেষকদের আনুষ্ঠানিক শাসন কাঠামোর অধীনে দ্রুত অ্যানোনিমাইজড ডেটা ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে, যার ফলে নতুন নমুনা সংগ্রহ না করেও গবেষণা করা সহজ হয়ে গেছে। ডেটা ব্যবহারের প্রতিটি ধাপ নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় নিয়ন্ত্রিত থাকে এবং গবেষকদের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডেটা অ্যাক্সেস দেওয়া হয়। কপি–পেস্ট সুবিধা বন্ধ রাখা হয়, এবং ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন ভার্চুয়াল ডেস্কটপ ব্যবহার করে গবেষকদের কাজ সম্পন্ন করতে হয়। প্ল্যাটফর্মে কোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপ বা অননুমোদিত প্রবেশের চেষ্টাও নিবিড়ভাবে নজরদারি করা হয়।

গাস্টো গবেষণা ও নতুন বিশ্লেষণ

এ–স্টারের ড. মুক্কেশ কুমার এবং ড. এভেলিন লুর নেতৃত্বে দলটি ‘গাস্টো’ জন্ম কোহর্টের ১,১৬৬ মা–শিশু জুটির তথ্য বিশ্লেষণ করে। ২০০৯ সাল থেকে পরিচালিত এই দীর্ঘমেয়াদি গবেষণায় গর্ভাবস্থা, জেনেটিক্স, পুষ্টি, বৃদ্ধি, মস্তিষ্কের বিকাশ থেকে শুরু করে সুস্থতার নানা দিকের ডেটা সংগ্রহ করা হচ্ছে। গবেষকেরা বলছেন, এটি সম্ভবত সিঙ্গাপুরে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস–সম্পর্কিত স্বাস্থ্য ব্যয়ের প্রথম বিস্তৃত গবেষণা। ফলাফলে দেখা গেছে, জিডিএম না থাকা নারীদেরও শেষ ধাপে ঘন ঘন স্বাস্থ্য–পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন হতে পারে।

অন্যদিকে, জিডিএম–যুক্ত নারীদের সন্তান জন্মের পর প্রথম বছরে হাসপাতাল, পলিক্লিনিক এবং জরুরি বিভাগে বেশি ব্যয় হয়েছে। গড়ে তারা জিডিএম–বিহীন নারীদের তুলনায় ১,৪০০ ডলার বেশি ব্যয় করেছেন, কারণ সন্তান জন্মের পর তাদের স্বাভাবিক ইনসুলিন কার্যকারিতা ফিরে আসছে কি না তা চিকিৎসকেরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন।

ডেটাসেট ও প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ

২০২৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত ট্রাস্ট প্ল্যাটফর্মে ১৩টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে—এর মধ্যে রয়েছে তিনটি স্বাস্থ্যসেবা ক্লাস্টার, পাঁচটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় এবং এ–স্টার, ডিউক–এনইউএস মেডিকেল স্কুল এবং সিঙ্গাপুর–ইথ সেন্টারের মতো গবেষণা প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে প্ল্যাটফর্মে থাকা ৪৮টি ডেটাসেটে জনসংখ্যাগত, জন্ম–মৃত্যু ও সামাজিক–অর্থনৈতিক তথ্য, ক্লিনিক্যাল ডেটা, পরিধানযোগ্য ডিভাইস থেকে সংগৃহীত জীবনযাত্রা–সংক্রান্ত তথ্য, দীর্ঘমেয়াদি রোগ স্ক্রিনিং ডেটা এবং জাতীয় প্রিসিশন মেডিসিন প্রোগ্রামের জেনোমিক তথ্য অন্তর্ভুক্ত।

ডেটা নিরাপত্তা ও অনুমোদন প্রক্রিয়া

ট্রাস্ট প্ল্যাটফর্ম আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ‘ফাইভ সেফস’ কাঠামো অনুসরণ করে। গবেষকরা ডেটা চাইলে ‘ডেটা অ্যাক্সেস কমিটি’ তাদের আবেদন যাচাই করে। কোনো গবেষণা তখনই অনুমোদিত হয় যখন তা জনস্বার্থে মূল্য যোগ করে, বৈজ্ঞানিক বা ক্লিনিক্যাল গুরুত্ব রাখে এবং সমাজের উপকারে আসতে পারে। কমিটিতে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান, গবেষণা সংস্থা, আইন ও নৈতিকতা বিশেষজ্ঞের পাশাপাশি রোগী অধিকার গোষ্ঠীর দুই সদস্য রয়েছেন।

অনুমোদনের পর গবেষকদের প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অনুমোদন থাকতে হয় এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষায় ডেটায় ব্যক্তিগত পরিচয় মুছে ফেলা হয় ও ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়। ডেটা স্থায়ীভাবে প্ল্যাটফর্মে রাখা হয় না, নির্দিষ্ট সময় পর তা মুছে ফেলা হয়।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

ট্রাস্ট অফিসের পরিচালক কোহ মিংশি জানিয়েছেন যে প্ল্যাটফর্মটি সামনে জলবায়ু পরিবর্তন এবং নগর স্থিতিস্থাপকতার সঙ্গে সম্পর্কিত ডেটাও সরবরাহ করবে, কারণ এসব বিষয় মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। তিনি বলেন, প্রমাণভিত্তিক সিদ্ধান্ত শুধু স্বাস্থ্য খাতেই নয়, জীবনের নানা ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, এবং মানুষের স্বাস্থ্যের নিয়ামক অনেক সময় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বাইরেও অবস্থান করে। তাই বিভিন্ন ক্ষেত্রের গবেষকদের সুবিধার জন্য ডেটার ধরন ও কাঠামো একীভূত করার লক্ষ্য রয়েছে। গবেষকদের ব্যবহারের জন্য প্রক্রিয়াজাত ডেটাসেটগুলোকেও দ্রুত ব্যবহারের উপযোগী করার কাজ চলছে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন যে গাস্টো গবেষণার মতো একটি প্রকল্প কীভাবে শিশুদের অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের মতো সম্পূর্ণ নতুন বিষয়ের দিকেও সম্প্রসারিত হতে পারে, সেটিই দেখায় যে সঠিক বিনিয়োগ ও নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম থাকলে ডেটার বুদ্ধিমান ব্যবহার আরও বিস্তৃত সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। ট্রাস্ট অফিসের লক্ষ্য হচ্ছে ডেটা যেন আরও স্মার্ট, নিরাপদ ও কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যায় এবং গবেষণা যেন সমাজের উপকারে আরও গভীরভাবে অবদান রাখতে পারে।

#গবেষণা  #সিঙ্গাপুর  #স্বাস্থ্যডেটা  #ট্রাস্ট প্ল্যাটফর্ম #এ–স্টার #গাস্টো #জনস্বাস্থ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দুই দশক পর আবার ভারত বাজারে ব্রিটিশ কসমেটিক ব্র্যান্ড লাশ

জাতীয় অ্যানালিটিক্স প্ল্যাটফর্মে গবেষণা দ্রুততর, ডেটা সুরক্ষিত

০১:১৩:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫

সিঙ্গাপুরের জাতীয় অ্যানালিটিক্স প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রাস্ট’ (TRUST) গবেষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে। প্ল্যাটফর্মটি গবেষকদের স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা এবং জীবনযাত্রা–সংক্রান্ত অগণিত জাতীয় ডেটাসেট নিরাপদভাবে ব্যবহার করতে দিচ্ছে, ফলে নতুন অংশগ্রহণকারী সংগ্রহের জটিল প্রক্রিয়া ছাড়াই দ্রুত গবেষণা সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে। ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে চালু হওয়ার পর এটি ইতোমধ্যে প্রায় ৭০টি গবেষণা প্রকল্পে ব্যবহৃত হয়েছে।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে ব্যয়ের অপ্রত্যাশিত চিত্র

একটি স্থানীয় গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভকালীন ডায়াবেটিস (জিডিএম) না থাকা নারীরাই গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে বেশি হাসপাতাল ব্যয় করেছেন। গড়ে এই নারীদের হাসপাতাল খরচ ১,৩০০ ডলারের বেশি হয়েছে, যা গবেষকদের ধারণা মতে আগে শনাক্ত না হওয়া সমস্যার কারণে হতে পারে। অন্যদিকে, জিডিএম–যুক্ত নারীরা নিয়মিত স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের আওতায় থাকায় তাদের স্বাস্থ্য–ঝুঁকি আগে শনাক্ত হয়ে চিকিৎসা দ্রুত শুরু হয়।

এই বিশ্লেষণ করে এ–স্টারের গবেষক দল, যারা নিজেদের সংগ্রহ করা তথ্যের পাশাপাশি ট্রাস্ট প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে জাতীয় ডেটাবেস থেকে পাওয়া অ্যানোনিমাইজড তথ্য ব্যবহার করেন। প্ল্যাটফর্মটি ডেটাকে পরিচয়বিহীন করে গবেষকদের সরবরাহ করে, যাতে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকে।

ট্রাস্ট প্ল্যাটফর্মের ভূমিকা

ট্রাস্ট প্ল্যাটফর্ম গবেষকদের আনুষ্ঠানিক শাসন কাঠামোর অধীনে দ্রুত অ্যানোনিমাইজড ডেটা ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে, যার ফলে নতুন নমুনা সংগ্রহ না করেও গবেষণা করা সহজ হয়ে গেছে। ডেটা ব্যবহারের প্রতিটি ধাপ নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় নিয়ন্ত্রিত থাকে এবং গবেষকদের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডেটা অ্যাক্সেস দেওয়া হয়। কপি–পেস্ট সুবিধা বন্ধ রাখা হয়, এবং ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন ভার্চুয়াল ডেস্কটপ ব্যবহার করে গবেষকদের কাজ সম্পন্ন করতে হয়। প্ল্যাটফর্মে কোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপ বা অননুমোদিত প্রবেশের চেষ্টাও নিবিড়ভাবে নজরদারি করা হয়।

গাস্টো গবেষণা ও নতুন বিশ্লেষণ

এ–স্টারের ড. মুক্কেশ কুমার এবং ড. এভেলিন লুর নেতৃত্বে দলটি ‘গাস্টো’ জন্ম কোহর্টের ১,১৬৬ মা–শিশু জুটির তথ্য বিশ্লেষণ করে। ২০০৯ সাল থেকে পরিচালিত এই দীর্ঘমেয়াদি গবেষণায় গর্ভাবস্থা, জেনেটিক্স, পুষ্টি, বৃদ্ধি, মস্তিষ্কের বিকাশ থেকে শুরু করে সুস্থতার নানা দিকের ডেটা সংগ্রহ করা হচ্ছে। গবেষকেরা বলছেন, এটি সম্ভবত সিঙ্গাপুরে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস–সম্পর্কিত স্বাস্থ্য ব্যয়ের প্রথম বিস্তৃত গবেষণা। ফলাফলে দেখা গেছে, জিডিএম না থাকা নারীদেরও শেষ ধাপে ঘন ঘন স্বাস্থ্য–পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন হতে পারে।

অন্যদিকে, জিডিএম–যুক্ত নারীদের সন্তান জন্মের পর প্রথম বছরে হাসপাতাল, পলিক্লিনিক এবং জরুরি বিভাগে বেশি ব্যয় হয়েছে। গড়ে তারা জিডিএম–বিহীন নারীদের তুলনায় ১,৪০০ ডলার বেশি ব্যয় করেছেন, কারণ সন্তান জন্মের পর তাদের স্বাভাবিক ইনসুলিন কার্যকারিতা ফিরে আসছে কি না তা চিকিৎসকেরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন।

ডেটাসেট ও প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ

২০২৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত ট্রাস্ট প্ল্যাটফর্মে ১৩টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে—এর মধ্যে রয়েছে তিনটি স্বাস্থ্যসেবা ক্লাস্টার, পাঁচটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় এবং এ–স্টার, ডিউক–এনইউএস মেডিকেল স্কুল এবং সিঙ্গাপুর–ইথ সেন্টারের মতো গবেষণা প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে প্ল্যাটফর্মে থাকা ৪৮টি ডেটাসেটে জনসংখ্যাগত, জন্ম–মৃত্যু ও সামাজিক–অর্থনৈতিক তথ্য, ক্লিনিক্যাল ডেটা, পরিধানযোগ্য ডিভাইস থেকে সংগৃহীত জীবনযাত্রা–সংক্রান্ত তথ্য, দীর্ঘমেয়াদি রোগ স্ক্রিনিং ডেটা এবং জাতীয় প্রিসিশন মেডিসিন প্রোগ্রামের জেনোমিক তথ্য অন্তর্ভুক্ত।

ডেটা নিরাপত্তা ও অনুমোদন প্রক্রিয়া

ট্রাস্ট প্ল্যাটফর্ম আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ‘ফাইভ সেফস’ কাঠামো অনুসরণ করে। গবেষকরা ডেটা চাইলে ‘ডেটা অ্যাক্সেস কমিটি’ তাদের আবেদন যাচাই করে। কোনো গবেষণা তখনই অনুমোদিত হয় যখন তা জনস্বার্থে মূল্য যোগ করে, বৈজ্ঞানিক বা ক্লিনিক্যাল গুরুত্ব রাখে এবং সমাজের উপকারে আসতে পারে। কমিটিতে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান, গবেষণা সংস্থা, আইন ও নৈতিকতা বিশেষজ্ঞের পাশাপাশি রোগী অধিকার গোষ্ঠীর দুই সদস্য রয়েছেন।

অনুমোদনের পর গবেষকদের প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অনুমোদন থাকতে হয় এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষায় ডেটায় ব্যক্তিগত পরিচয় মুছে ফেলা হয় ও ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়। ডেটা স্থায়ীভাবে প্ল্যাটফর্মে রাখা হয় না, নির্দিষ্ট সময় পর তা মুছে ফেলা হয়।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

ট্রাস্ট অফিসের পরিচালক কোহ মিংশি জানিয়েছেন যে প্ল্যাটফর্মটি সামনে জলবায়ু পরিবর্তন এবং নগর স্থিতিস্থাপকতার সঙ্গে সম্পর্কিত ডেটাও সরবরাহ করবে, কারণ এসব বিষয় মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। তিনি বলেন, প্রমাণভিত্তিক সিদ্ধান্ত শুধু স্বাস্থ্য খাতেই নয়, জীবনের নানা ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, এবং মানুষের স্বাস্থ্যের নিয়ামক অনেক সময় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বাইরেও অবস্থান করে। তাই বিভিন্ন ক্ষেত্রের গবেষকদের সুবিধার জন্য ডেটার ধরন ও কাঠামো একীভূত করার লক্ষ্য রয়েছে। গবেষকদের ব্যবহারের জন্য প্রক্রিয়াজাত ডেটাসেটগুলোকেও দ্রুত ব্যবহারের উপযোগী করার কাজ চলছে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন যে গাস্টো গবেষণার মতো একটি প্রকল্প কীভাবে শিশুদের অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের মতো সম্পূর্ণ নতুন বিষয়ের দিকেও সম্প্রসারিত হতে পারে, সেটিই দেখায় যে সঠিক বিনিয়োগ ও নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম থাকলে ডেটার বুদ্ধিমান ব্যবহার আরও বিস্তৃত সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। ট্রাস্ট অফিসের লক্ষ্য হচ্ছে ডেটা যেন আরও স্মার্ট, নিরাপদ ও কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যায় এবং গবেষণা যেন সমাজের উপকারে আরও গভীরভাবে অবদান রাখতে পারে।

#গবেষণা  #সিঙ্গাপুর  #স্বাস্থ্যডেটা  #ট্রাস্ট প্ল্যাটফর্ম #এ–স্টার #গাস্টো #জনস্বাস্থ্য