বিলাসবহুল বিউটি সেগমেন্টে নতুন ধাক্কা
প্রায় বিশ বছর আগে ভারতীয় বাজার থেকে সরে গিয়েছিল ব্রিটিশ কসমেটিক ব্র্যান্ড লাশ; এবার আবার সেই বাজারেই ফিরতে যাচ্ছে তারা। বেঙ্গালুরুভিত্তিক এক অংশীদারের সঙ্গে লাইসেন্স চুক্তির মাধ্যমে প্রথম ধাপে অনলাইনে পণ্য বিক্রি চালু করা হবে, পরে ধীরে ধীরে শারীরিক শোরুম খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। এদিকে ভারতের বিলাসবহুল বিউটি মার্কেট গত কয়েক বছরে দ্রুত বদলে গেছে—বর্ধিত মধ্যবিত্ত, বেশি ব্যয়যোগ্য আয় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্কিনকেয়ার নিয়ে চলা ধারাবাহিক আলোচনায় এখানে প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। বড় শহরগুলোর শপিংমলে এখন বিশ্বখ্যাত মেকআপ আর স্কিনকেয়ার ব্র্যান্ডের স্টলে ভিড়, অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো প্রায় সবসময়ই আন্তর্জাতিক পণ্যে অফার ও ক্যাশব্যাক চালু রাখে। এ পরিস্থিতিতে রঙিন বাথ বম্ব, সলিড শ্যাম্পু আর পশুকল্যাণ ও টেকসই প্যাকেজিং নিয়ে গড়ে ওঠা নিজস্ব ব্র্যান্ড ইমেজ নিয়ে নতুন প্রজন্মের ক্রেতার সামনে হাজির হচ্ছে লাশ।
কিন্তু ফেরাটা মোটেও সহজ হবে না। লাশ যখন ভারতীয় বাজার ছেড়েছিল, তখনকার পরিবেশের সঙ্গে বর্তমান অবস্থা জম্মে ভিন্ন। এখন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক অজস্র ব্র্যান্ড অনলাইন আর অফলাইন মিলিয়ে একই গ্রাহকের মনোযোগের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ও শর্ট ভিডিও প্ল্যাটফর্মে বিউটি কনটেন্ট ক্রিয়েটররা যে পণ্যকে একদিনে ‘মাস্ট–হ্যাভ’ বানিয়ে ফেলেন, পরের সপ্তাহেই আবার নতুন ব্র্যান্ড তুলে ধরেন। ফলে যে কোনো আন্তর্জাতিক কোম্পানির জন্য স্থানীয় ত্বকের ধরন, আবহাওয়া ও দামের সংবেদনশীলতা বুঝে দ্রুত রেসিপি ও পণ্য-ধরন মানিয়ে নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, নিজস্ব সুঘ্রাণ, হাতে তৈরি পণ্য আর দোকানের ভেতরের আলাদা অভিজ্ঞতাকে সামনে রেখে প্রথমে দিল্লি, মুম্বাই, বেঙ্গালুরু ও কলকাতার মতো মহানগরে জোর দেবে লাশ; সফল হলে পরের ধাপে দ্বিতীয় সারির শহরগুলোতে যাবে। একইসঙ্গে ভারত যদি সরবরাহ ও উৎপাদনের নতুন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে, তবে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল বহুমাত্রিক করার লক্ষ্যে এটিও কোম্পানির জন্য বড় সুবিধা হতে পারে। তরুণ ভারতীয় ক্রেতারা এখন আয়ুর্বেদিক তেল, দেশি ফেসমাস্ক আর বিদেশি সিরামের মিশ্র ব্যবহারে আগ্রহী; সেই হাইব্রিড সৌন্দর্যচর্চার ভেতরেই নিজেদের জায়গা খুঁজে পেতে চাইছে লাশের এই দ্বিতীয় ইনিংস।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















