ক্রিয়েটরদের জন্য একসঙ্গে স্ট্যাবিলাইজেশন ও ৪কে ভিডিও
ডিজেআই-এর জনপ্রিয় ভ্লগিং ক্যামেরা Osmo Pocket 3 ব্ল্যাক ফ্রাইডে উপলক্ষে প্রায় ৩৭ শতাংশ ছাড়ে প্রায় ৫০৬ ডলারে নেমে এসেছে। সাধারণ সময়ে এ ধরনের গভীর ছাড় খুব কমই দেখা গেছে, তাই নতুন–পুরোনো কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের নজর এখন এই অফারের দিকেই। পকেট সাইজের এই ডিভাইস একসঙ্গে একটি ক্যামেরা, তিন–অক্ষের গিম্বল, টাচস্ক্রিন ও মাইক্রোফোন সেটআপকে এক শরীরে এনেছে। ফলে আলাদা গিম্বল বা বাহ্যিক মাইক ছাড়া এক হাতে শুট করার জন্য এটি বিশেষ আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে ইউটিউব, টিকটক বা রিলস–কেন্দ্রিক নির্মাতাদের কাছে।
Osmo Pocket 3–এর সেন্সর তুলনামূলক বড় হওয়ায় কম আলোতেও পরিষ্কার ফুটেজ পাওয়া যায়, যা পুরোনো পকেট গিম্বলের তুলনায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি। দ্রুত ঘুরিয়ে হরাইজন্টাল বা ভার্টিক্যাল শট নেওয়ার সুবিধা থাকায় একই শুটে ইউটিউবের জন্য ১৬:৯ এবং মোবাইল স্ক্রিনের জন্য ৯:১৬ ভিডিও বানানো সহজ হয়। মুখ–ট্র্যাকিং অটোফোকাস ও সহজ মেনু ডিজাইন নতুন ব্যবহারকারীকেও দ্রুত ক্যামেরা মোড, ফ্রেমরেট বা রেজোলিউশন বদলাতে সাহায্য করে। এক কথায়, আলাদা ক্রু ছাড়াই “ওয়ান–ম্যান ব্যান্ড” ভ্লগের জন্য প্রয়োজনীয় বেশিরভাগ জিনিসই এক ডিভাইসে এসেছে।
অডিও মানেও ফোনের তুলনায় এগিয়ে থাকতে চেয়েছে DJI। বিল্ট–ইন স্টেরিও মাইকের পাশাপাশি ওয়্যারলেস মাইক্রোফোন সংযোগের সুবিধা থাকায় ব্যস্ত সড়ক, ক্যাফে কিংবা ভিড়ের মাঝেও তুলনামূলক পরিষ্কার ভয়েস রেকর্ড করা যায়। স্মার্টফোনের ভালো ভিডিও–সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও অনেক সময় শব্দই হয়ে ওঠে দুর্বলতা; এই ধরনের বিশেষায়িত ক্যামেরা সেই ঘাটতি পুষিয়ে দিতে পারে। ভ্রমণ বা স্ট্রিট ভ্লগিংয়ের ক্ষেত্রে ছোট আকার ও ইউএসবি–সি চার্জিংয়ের কারণে ব্যাগে জায়গা কম নেয়, বড় মিররলেস বডি ও গিম্বলের বদলে হালকা সেটআপ গড়া যায়।
কেন এই ছাড় বড় সংকেত
এই বড় মূল্যছাড় মূলত ক্রিয়েটর হার্ডওয়্যার বাজারের তীব্র প্রতিযোগিতাকে তুলে ধরে। একদিকে স্মার্টফোন নির্মাতারা প্রতি বছরই ক্যামেরা উন্নত করছে; অন্যদিকে মাঝারি দামের গিম্বল, লাইট ও অডিও গিয়ারের সংখ্যাও বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে Osmo Pocket 3–এর দাম কমিয়ে DJI তরুণ নির্মাতাদের কাছে নিজেদের ডিভাইসকে আলাদা করে তুলে ধরতে চাইছে। অনেকের জন্য এটি হতে পারে পুরোনো Osmo বা ছোট অ্যাকশন ক্যামেরা থেকে আপগ্রেডের উপযুক্ত মুহূর্ত।
শুরু করা ক্রিয়েটরদের জন্য বাজেট বরাদ্দ হিসাবেও এই অফার গুরুত্বপূর্ণ। বড় ক্যামেরা–সিস্টেম, লেন্স ও গিম্বলে বিনিয়োগ করার বদলে একটি অল–ইন–ওয়ান ডিভাইসে প্রথম ধাপ নেওয়া অনেকের কাছে বেশি যুক্তিযুক্ত মনে হতে পারে। বিশেষ করে ব্যস্ত শহরে, যেখানে বড় ক্যামেরা বের করা অস্বস্তিকর বা দৃষ্টি আকর্ষণকারী, সেখানে ছোট ডিভাইস নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দ বিকল্প। একই সঙ্গে ঠিক সেটআপে Osmo Pocket 3 ওয়েবক্যাম বা লাইভ–স্ট্রিমিং ডিভাইস হিসেবেও কাজ করতে পারে, ফলে ইউটিউব লাইভ বা টুইচ স্ট্রিমিংও সহজ হয়।
তবে সীমাবদ্ধতাও আছে। সেন্সর পুরোনো পকেট মডেলের চেয়ে উন্নত হলেও, দ্রুত লেন্সযুক্ত বড় মিররলেস ক্যামেরার মতো ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার বা খুব কম আলোয় পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে না। নির্দিষ্ট ফোকাল লেংথ হওয়ায় চলার পথে জুম করতে হলে ডিজিটাল ক্রপ বা বাহ্যিক অ্যাডাপ্টার লাগতে পারে। ব্যাটারির মেয়াদও দীর্ঘ শুটের ক্ষেত্রে আলাদা পরিকল্পনা দাবি করবে। তারপরও, শুধুই ফোনের কাঁপা ফুটেজ থেকে আসা ব্যবহারকারীর জন্য স্ট্যাবিলিটি, নিয়ন্ত্রণ ও অডিও মানের উন্নতি চোখে পড়ার মতো হবে।
ব্ল্যাক ফ্রাইডে ও সাইবার উইকে আরও অনেক অফারের ভিড়ে Osmo Pocket 3–এর এই ছাড় নজর কাড়ছে বিশেষ করে সেই সব নির্মাতাদের, যারা বহুদিন ধরে একটি “প্রপার” ক্যামেরা কিনতে চাইছিলেন। এটি স্থায়ী মূল্যহ্রাস, নাকি সাময়িক স্টক ক্লিয়ার—তা পরের সপ্তাহেই বোঝা যাবে। আপাতত এটুকু স্পষ্ট, tightening বাজেট আর ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতার সময়ে নতুন গল্পবলিয়েদের আকৃষ্ট করতে হার্ডওয়্যার নির্মাতাদের আরও আক্রমণাত্মক হতে হচ্ছে।
Sarakhon Report 


















