০৯:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫
আবুধাবিতে রাশিয়ান কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইউক্রেন শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে ড্রিসকলের বৈঠক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৬৩) লটারির মাধ্যমে এসপি বদলি গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি নয়: নজরুল ইসলাম খান বাহাত্তরের সংবিধান আর চলবে না: মামুনুল হকের মন্তব্য ময়মনসিংহে রেলপথ অবরোধ, ট্রেন চলাচল বন্ধ শাহবাগে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ‘মনগড়া ও অন্যায্য’ বিচার চলছে বলে শীর্ষ যুক্তরাজ্যের আইনজীবীদের অভিযোগ জুলাই আন্দোলনের হত্যা মামলায় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন অব্যাহতি জামায়াতের শো-কজ নোটিশে শাহজাহান চৌধুরী জার্মানির সমর্থনে শক্তিকন্যার গ্র্যাজুয়েশন: সবুজ জ্বালানি রূপান্তরে নতুন নারী নেতৃত্ব

পাকিস্তানের বিমান হামলার অভিযোগে আবারও উত্তপ্ত আফগান সীমান্ত

সামরিক অভিযান আর সীমান্তের ভেতরের বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি
আফগানিস্তানের তালেবান প্রশাসন অভিযোগ করেছে, পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান গত রাতে পূর্বাঞ্চলের তিনটি প্রদেশে একযোগে হামলা চালিয়েছে। কhostসহ কুনার ও পাকতিকা প্রদেশে বোমা পড়ায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই শিশু বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। সম্পূর্ণ ধসে পড়া একটি বাড়ির ধ্বংসস্তূপ থেকে একই পরিবারের কয়েকটি শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়, আহতদের অনেকই গুরুতর অবস্থায় আছেন। তালেবান সরকার এই হামলাকে আফগান সার্বভৌমত্বের “স্পষ্ট লঙ্ঘন” বলে আখ্যা দিয়ে সতর্ক করেছে, এমন হামলা অব্যাহত থাকলে পাল্টা সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।

ডোহায় মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতির পরও সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সীমান্তজুড়ে একাধিক গোলাগুলি ও বিমান হামলার ঘটনা ঘটেছে। আফগান পক্ষের দাবি, পাকিস্তান সীমান্তের ভেতরের গ্রামগুলোকে টার্গেট করে চাপ সৃষ্টি করতে চায় যাতে কাবুল পাকিস্তানবিরোধী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হয়। অপরদিকে ইসলামাবাদ দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে, পাকিস্তানি তালেবান যোদ্ধারা আফগান ভূখণ্ডকে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে ব্যবহার করে সীমান্ত পেরিয়ে হামলা চালায়। দুই পক্ষের এই পারস্পরিক আস্থাহীনতা ও একই সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে ‘কঠোর’ ইমেজ দেখানোর চাপ সীমান্ত পরিস্থিতিকে আরও অস্থির করে তুলেছে।

Pakistan, Afghanistan claim dozens of casualties in border clashes

চুক্তি টিকছে না, কূটনীতিও এগোচ্ছে ধীরে
তুরস্ক ও কাতারের মধ্যস্থতায় আফগান–পাকিস্তান প্রতিনিধিদের যে আলোচনায় বসানো হয়েছিল, সেখানে যৌথ সীমান্ত টহল, তথ্য বিনিময় ও জঙ্গি দমনে সমন্বয়ের নানা প্রস্তাব ওঠে। কিন্তু আলোচনার শেষ পর্যন্ত কোনো সমন্বিত রোডম্যাপ বা নজরদারি কাঠামো ঘোষিত হয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, উভয় সরকার নিজেদের ভেতরের চাপে নরম অবস্থান নিতে পারছে না; ফলে বাস্তবে উত্তেজনা কমানোর চেয়ে শক্ত অবস্থান প্রদর্শনই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। এদিকে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের যুদ্ধবিরতি রক্ষার আহ্বান কাগজে থাকলেও তা মাঠপর্যায়ে প্রতিফলিত হচ্ছে খুব কমই।

সীমান্তের কাছাকাছি বসবাসকারী সাধারণ মানুষের কাছে এই নতুন হামলা আবারও মনে করিয়ে দিয়েছে, কাগুজে শান্তিচুক্তি যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। আগের সংঘাতে যেসব পরিবার ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল, তারা অনেকেই এখনও বাড়ি ফিরতে সাহস পাচ্ছে না; কারণ রাতের অন্ধকারে যে কোনো সময় গোলা বা বোমা পড়তে পারে। মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলো আশঙ্কা করছে, শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় প্রবেশ আরও কঠিন হবে এবং সহায়তার অভাবে শিশু ও বয়স্কদের ঝুঁকি বাড়বে। কে আসলে প্রথম হামলা চালিয়েছে এবং ঠিক কতজন বেসামরিক নিহত হয়েছে—এসব প্রশ্নের নিরপেক্ষ তদন্ত এখনো শুরু হয়নি; ফলে সীমান্তবাসীদের সামনে নিশ্চিত শান্তির চেয়ে অনিশ্চয়তাই বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

আবুধাবিতে রাশিয়ান কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইউক্রেন শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে ড্রিসকলের বৈঠক

পাকিস্তানের বিমান হামলার অভিযোগে আবারও উত্তপ্ত আফগান সীমান্ত

০৭:০৮:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫

সামরিক অভিযান আর সীমান্তের ভেতরের বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি
আফগানিস্তানের তালেবান প্রশাসন অভিযোগ করেছে, পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান গত রাতে পূর্বাঞ্চলের তিনটি প্রদেশে একযোগে হামলা চালিয়েছে। কhostসহ কুনার ও পাকতিকা প্রদেশে বোমা পড়ায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই শিশু বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। সম্পূর্ণ ধসে পড়া একটি বাড়ির ধ্বংসস্তূপ থেকে একই পরিবারের কয়েকটি শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়, আহতদের অনেকই গুরুতর অবস্থায় আছেন। তালেবান সরকার এই হামলাকে আফগান সার্বভৌমত্বের “স্পষ্ট লঙ্ঘন” বলে আখ্যা দিয়ে সতর্ক করেছে, এমন হামলা অব্যাহত থাকলে পাল্টা সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।

ডোহায় মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতির পরও সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সীমান্তজুড়ে একাধিক গোলাগুলি ও বিমান হামলার ঘটনা ঘটেছে। আফগান পক্ষের দাবি, পাকিস্তান সীমান্তের ভেতরের গ্রামগুলোকে টার্গেট করে চাপ সৃষ্টি করতে চায় যাতে কাবুল পাকিস্তানবিরোধী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হয়। অপরদিকে ইসলামাবাদ দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে, পাকিস্তানি তালেবান যোদ্ধারা আফগান ভূখণ্ডকে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে ব্যবহার করে সীমান্ত পেরিয়ে হামলা চালায়। দুই পক্ষের এই পারস্পরিক আস্থাহীনতা ও একই সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে ‘কঠোর’ ইমেজ দেখানোর চাপ সীমান্ত পরিস্থিতিকে আরও অস্থির করে তুলেছে।

Pakistan, Afghanistan claim dozens of casualties in border clashes

চুক্তি টিকছে না, কূটনীতিও এগোচ্ছে ধীরে
তুরস্ক ও কাতারের মধ্যস্থতায় আফগান–পাকিস্তান প্রতিনিধিদের যে আলোচনায় বসানো হয়েছিল, সেখানে যৌথ সীমান্ত টহল, তথ্য বিনিময় ও জঙ্গি দমনে সমন্বয়ের নানা প্রস্তাব ওঠে। কিন্তু আলোচনার শেষ পর্যন্ত কোনো সমন্বিত রোডম্যাপ বা নজরদারি কাঠামো ঘোষিত হয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, উভয় সরকার নিজেদের ভেতরের চাপে নরম অবস্থান নিতে পারছে না; ফলে বাস্তবে উত্তেজনা কমানোর চেয়ে শক্ত অবস্থান প্রদর্শনই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। এদিকে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের যুদ্ধবিরতি রক্ষার আহ্বান কাগজে থাকলেও তা মাঠপর্যায়ে প্রতিফলিত হচ্ছে খুব কমই।

সীমান্তের কাছাকাছি বসবাসকারী সাধারণ মানুষের কাছে এই নতুন হামলা আবারও মনে করিয়ে দিয়েছে, কাগুজে শান্তিচুক্তি যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। আগের সংঘাতে যেসব পরিবার ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল, তারা অনেকেই এখনও বাড়ি ফিরতে সাহস পাচ্ছে না; কারণ রাতের অন্ধকারে যে কোনো সময় গোলা বা বোমা পড়তে পারে। মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলো আশঙ্কা করছে, শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় প্রবেশ আরও কঠিন হবে এবং সহায়তার অভাবে শিশু ও বয়স্কদের ঝুঁকি বাড়বে। কে আসলে প্রথম হামলা চালিয়েছে এবং ঠিক কতজন বেসামরিক নিহত হয়েছে—এসব প্রশ্নের নিরপেক্ষ তদন্ত এখনো শুরু হয়নি; ফলে সীমান্তবাসীদের সামনে নিশ্চিত শান্তির চেয়ে অনিশ্চয়তাই বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠছে।