স্ট্রিমিং রেকর্ড ও গ্র্যামির পর অ্যানিমেশন ক্যাটাগরিতে নজর
নেটফ্লিক্সের অ্যানিমেটেড সিনেমা ‘KPop Demon Hunters’ এ বছর কেবল স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মেই রেকর্ড গড়েনি; এখন তা অস্কারের অ্যানিমেটেড ফিচার ক্যাটাগরিতেও আনুষ্ঠানিকভাবে বিবেচনার তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। সীমিত সময়ের থিয়েটার প্রদর্শন আর গ্লোবাল নেটফ্লিক্স রিলিজ মিলিয়ে ছবি এখন পর্যন্ত প্ল্যাটফর্মের সর্বাধিক দেখা অরিজিনাল মুভি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। একই সঙ্গে, ছবির সাউন্ডট্র্যাক থেকে ‘Huntr/x’-এর গাওয়া গান ‘Golden’ চারটি গ্র্যামি মনোনয়ন পেয়েছে—সং অব দ্য ইয়ার থেকে শুরু করে পপ ডুয়ো/গ্রুপ পারফরম্যান্স পর্যন্ত।
ছবিটি মূলত কেপপ দুনিয়ার পরিচিত ট্রেনিং, বন্ধুত্ব আর ফ্যানডমের গল্পকে ডেমন হান্টিং ও অ্যাকশনের সঙ্গে মিশিয়ে বানানো এক ফ্যান্টাসি অভিযান। উজ্জ্বল রঙের স্টেজ, সিঙ্কড কোরিওগ্রাফি আর আইডলদের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের পরিবর্তে এখানে দেখা যায় অ্যানিমেটেড নায়ক-নায়িকারা, যারা একই সঙ্গে গায়িকা, যোদ্ধা ও কিশোরী। কেবল মূল ফ্যানডমই নয়, কেড্রামা ও কে–পপের বাইরে থাকা কিশোর-তরুণ দর্শকদেরও কাছে গল্পটি সহজবোধ্য হয়ে উঠেছে, কারণ প্লটের কেন্দ্রে আছে বন্ধুত্ব, পরিচয় আর নিজের শক্তি খুঁজে পাওয়া। বিলবোর্ড চার্টে সাউন্ডট্র্যাকের দীর্ঘ সময় থাকা প্রমাণ করছে, গানগুলো একা দাঁড়িয়েও গ্লোবাল প্লেলিস্টে জায়গা করে নিতে পেরেছে।

কে–কনটেন্টের পরবর্তী ধাপের ইঙ্গিত
‘KPop Demon Hunters’–এর সাফল্য নেটফ্লিক্সের জন্য আরও একবার প্রমাণ করছে, কোরিয়ান বা কোরিয়া–প্রাণিত কনটেন্ট এখন তাদের গ্লোবাল কৌশলের কেন্দ্রবিন্দু। আগে যেখানে আন্তর্জাতিক পুরস্কার মঞ্চগুলোতে কেপপকে মূলত লাইভ পারফরম্যান্স আর বয় ব্যান্ডের মাধ্যমে দেখা হতো, সেখানে একটি অ্যানিমেটেড কেপপ গল্প অস্কারের আলোচনায় আসা মানে ধারার নিজস্ব বিবর্তন। প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত এক কেপপ নির্বাহী যেমন বলেছেন, বাস্তব আইডল গ্রুপের মতো এখানে ‘ফ্যান ওয়ার’ বা লেবেল রাজনীতি নেই—বরং দর্শকেরা নির্ভার হয়ে সাউন্ডট্র্যাক আর গল্প উপভোগ করতে পারে। এ ধরনের ব্র্যান্ড তাই গেম, মার্চেন্ডাইজ থেকে শুরু করে স্পিন–অফ সিরিজে রূপ নেওয়ার জন্য অনেক বেশি নমনীয়।
কোরিয়ান বিনোদনশিল্পের বড় চিত্রেও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। বিগ ব্যান্ড থেকে শুরু করে কেড্রামা—সবই ইতিমধ্যে কোরিয়ান সফট পাওয়ারের অংশ হয়ে উঠেছে; এবার তাতে যুক্ত হচ্ছে অ্যানিমেটেড ফিচারের নতুন উপধারা। ভবিষ্যতে হয়তো আরও স্টুডিও এই পথ অনুসরণ করবে—অ্যানিমে, পশ্চিমা সিজি এবং আইডল গল্পের মিশেলে ‘হাইব্রিড’ অ্যানিমেশন তৈরি করে গ্লোবাল দর্শকের কাছে পৌঁছাতে চাবে। আর দর্শকের দিক থেকে দেখা যাচ্ছে, বাস্তব তারকা না, কল্পিত অ্যানিমেটেড চরিত্রেরা গান গাইলেও, ভালো গল্প আর শক্তিশালী মিউজিক থাকলে কেপপের ম্যাজিক ঠিকই গ্লোবাল হয়ে উঠতে পারে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















