০৪:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
 ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিক্রিয়া: আগামী বছরের জি-২০ আমন্ত্রণ না-পাওয়াকে ‘দুঃখজনক’ বলল রামাফোসা খুলনায় ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত, আরেকজন আহত পাকিস্তানের ডিআই খান অভিযানে ২২ সন্ত্রাসী নিহত ২০২৬ সালে বৈশ্বিক এআই খাত কি সন্ধিক্ষণে? সৌদি আরবে ১৭ লাখ প্রবীণের মধ্যে ৯১ শতাংশই জীবনে সন্তুষ্ট ভারত সরকার অনুমোদন দিল ৮১৬ মিলিয়ন ডলারের রেয়ার আর্থ স্থায়ী চুম্বক উৎপাদন কর্মসূচি ‘জীবিত থাকার প্রমাণ নেই’: জেলে মৃত্যু–গুজবের মধ্যে ইমরান খানের অবস্থান নিয়ে ছেলের উদ্বেগ  ইমরানের সঙ্গে সাক্ষাৎ নিশ্চিত করতে ‘শেষ বিকল্প’ বিবেচনায় সিএম আফ্রিদি নতুন বছরের আতশবাজি উপভোগ করুন: বুর্জ খলিফায় প্রবেশের পেইড ও ফ্রি গাইড মেনোপজ চিকিৎসায় যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কতা প্রত্যাহারকে স্বাগত জানালেন আমিরাতের নারীরা

কেন আবার বিশ্বজুড়ে স্বর্ণের দাম বাড়ছে

সপ্তাহজুড়ে স্থির ও প্রায় জমাটবদ্ধ দামের পর স্বর্ণের বাজার আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। দুবাইয়ে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দাম পৌঁছেছে দিরহাম ৫০১-এ, আর বৈশ্বিক বাজারে স্বর্ণ স্থির রয়েছে আউন্সপ্রতি প্রায় ৪,১৫৯ ডলারে। এই উত্থানের পেছনে রয়েছে দুর্বল মার্কিন ডলার ও ডিসেম্বর মাসে ফেডারেল রিজার্ভের সুদ কমানোর প্রত্যাশা।

স্বর্ণের দাম বাড়ছে কেন

মার্কিন ডলার দুর্বল হলে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের জন্য স্বর্ণ কেনা তুলনামূলক সস্তা হয়, ফলে চাহিদা বেড়ে যায়। একই সঙ্গে সুদ কমার সম্ভাবনা বাড়লে বিনিয়োগকারীরা সুদভিত্তিক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ সরিয়ে স্বর্ণে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন। এর ফলে স্বর্ণের দামে দ্রুত ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়।

ফেড কি সত্যিই সুদ কমাতে পারে?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক তথ্য দেখায়, ভোক্তাদের ব্যয় কমছে এবং তাদের আস্থা দুর্বল হচ্ছে। খুচরা বিক্রি খুব সামান্য বেড়েছে এবং ভোক্তা আস্থা এপ্রিলের পর সবচেয়ে বড় পতনের মুখে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, অর্থনীতিকে সচল রাখতে ফেডারেল রিজার্ভ ডিসেম্বরেই সুদ কমাতে পারে।
এছাড়া ফেডের সম্ভাব্য নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে যাঁর নাম সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে—হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা কেভিন হাসেট—তিনিও কম সুদের পক্ষে বলে ধারণা করা হয়। এই প্রত্যাশাই স্বর্ণের দাম বাড়াতে বড় ভূমিকা রেখেছে।

দুবাইয়ের ভোক্তাদের উপর প্রভাব

দুবাইয়ের স্বর্ণ ক্রেতাদের জন্য এর প্রভাব সরাসরি: প্রতি গ্রাম স্বর্ণের দাম বেড়ে গেছে। স্বর্ণ সুদ দেয় না, তাই সুদের হার কমে গেলে অনেকে মূল্য সুরক্ষায় স্বর্ণকেই নিরাপদ মনে করেন। ফলে বাজারে চাহিদা বাড়ে এবং দাম আরও উপরে উঠে যায়।
বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা—মন্দার আশঙ্কা, মুদ্রাস্ফীতি বা আর্থিক অস্থিতিশীলতা—এসব পরিস্থিতিতেও স্বর্ণের প্রতি মানুষের ঝোঁক বাড়ে।

এই বছরের স্বর্ণ বাজারের গতিপথ

নভেম্বরের ওঠানামা সত্ত্বেও ২০২৫ সাল স্বর্ণের জন্য ১৯৭৯ সালের পর সবচেয়ে শক্তিশালী বছর হতে যাচ্ছে। এ বছর স্বর্ণের দাম ইতিমধ্যে ৫৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে। অক্টোবর থেকে দাম আউন্সপ্রতি ৪,০০০ ডলারের ওপরে স্থির রয়েছে, যদিও ৪,৩৮০ ডলারের শিখর থেকে কিছুটা নেমেছে।
ডয়চে ব্যাংক ২০২৬ সালে স্বর্ণের গড় দাম আউন্সপ্রতি ৪,৪৫০ ডলার হবে বলে ধারণা করছে। গোল্ডম্যান স্যাক্সের পূর্বাভাস আরও উঁচু—তারা মনে করছে ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ দাম প্রায় ৪,৯০০ ডলার ছুঁতে পারে।

আগামী দিনে স্বর্ণের দামের সম্ভাবনা

দুবাইয়ের বাসিন্দাদের জন্য মূল বার্তাটি পরিষ্কার: আবারও বৈশ্বিক অর্থনীতি নিরাপত্তার প্রতীক হিসেবে স্বর্ণের দিকে ঝুঁকছে, তাই দাম বাড়ছে।
ক্রেতারা এখন কিনবেন নাকি অপেক্ষা করবেন—তা নির্ভর করবে পরবর্তী কয়েক সপ্তাহের বাজার পরিস্থিতির উপর। ডিসেম্বরের ফেড বৈঠক তাই বিশেষ নজরে রয়েছে।
যদি সুদ কমানোর প্রত্যাশা আরও জোরালো হয়, স্বর্ণের দাম আরও বাড়তে পারে। আর যদি ফেড সুদ অপরিবর্তিত রাখে, কিছুটা স্থিরতা ফিরতে পারে। তবে আপাতত স্বর্ণের ঝিলিক আবারও বিশ্ব অর্থনীতির কেন্দ্রে ফিরে এসেছে।


# স্বর্ণদাম #বাজারবিশ্লেষণ  #দুবাই  #ফেড  #অর্থনীতি

জনপ্রিয় সংবাদ

 ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিক্রিয়া: আগামী বছরের জি-২০ আমন্ত্রণ না-পাওয়াকে ‘দুঃখজনক’ বলল রামাফোসা

কেন আবার বিশ্বজুড়ে স্বর্ণের দাম বাড়ছে

০৩:২০:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫

সপ্তাহজুড়ে স্থির ও প্রায় জমাটবদ্ধ দামের পর স্বর্ণের বাজার আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। দুবাইয়ে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দাম পৌঁছেছে দিরহাম ৫০১-এ, আর বৈশ্বিক বাজারে স্বর্ণ স্থির রয়েছে আউন্সপ্রতি প্রায় ৪,১৫৯ ডলারে। এই উত্থানের পেছনে রয়েছে দুর্বল মার্কিন ডলার ও ডিসেম্বর মাসে ফেডারেল রিজার্ভের সুদ কমানোর প্রত্যাশা।

স্বর্ণের দাম বাড়ছে কেন

মার্কিন ডলার দুর্বল হলে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের জন্য স্বর্ণ কেনা তুলনামূলক সস্তা হয়, ফলে চাহিদা বেড়ে যায়। একই সঙ্গে সুদ কমার সম্ভাবনা বাড়লে বিনিয়োগকারীরা সুদভিত্তিক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ সরিয়ে স্বর্ণে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন। এর ফলে স্বর্ণের দামে দ্রুত ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়।

ফেড কি সত্যিই সুদ কমাতে পারে?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক তথ্য দেখায়, ভোক্তাদের ব্যয় কমছে এবং তাদের আস্থা দুর্বল হচ্ছে। খুচরা বিক্রি খুব সামান্য বেড়েছে এবং ভোক্তা আস্থা এপ্রিলের পর সবচেয়ে বড় পতনের মুখে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, অর্থনীতিকে সচল রাখতে ফেডারেল রিজার্ভ ডিসেম্বরেই সুদ কমাতে পারে।
এছাড়া ফেডের সম্ভাব্য নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে যাঁর নাম সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে—হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা কেভিন হাসেট—তিনিও কম সুদের পক্ষে বলে ধারণা করা হয়। এই প্রত্যাশাই স্বর্ণের দাম বাড়াতে বড় ভূমিকা রেখেছে।

দুবাইয়ের ভোক্তাদের উপর প্রভাব

দুবাইয়ের স্বর্ণ ক্রেতাদের জন্য এর প্রভাব সরাসরি: প্রতি গ্রাম স্বর্ণের দাম বেড়ে গেছে। স্বর্ণ সুদ দেয় না, তাই সুদের হার কমে গেলে অনেকে মূল্য সুরক্ষায় স্বর্ণকেই নিরাপদ মনে করেন। ফলে বাজারে চাহিদা বাড়ে এবং দাম আরও উপরে উঠে যায়।
বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা—মন্দার আশঙ্কা, মুদ্রাস্ফীতি বা আর্থিক অস্থিতিশীলতা—এসব পরিস্থিতিতেও স্বর্ণের প্রতি মানুষের ঝোঁক বাড়ে।

এই বছরের স্বর্ণ বাজারের গতিপথ

নভেম্বরের ওঠানামা সত্ত্বেও ২০২৫ সাল স্বর্ণের জন্য ১৯৭৯ সালের পর সবচেয়ে শক্তিশালী বছর হতে যাচ্ছে। এ বছর স্বর্ণের দাম ইতিমধ্যে ৫৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে। অক্টোবর থেকে দাম আউন্সপ্রতি ৪,০০০ ডলারের ওপরে স্থির রয়েছে, যদিও ৪,৩৮০ ডলারের শিখর থেকে কিছুটা নেমেছে।
ডয়চে ব্যাংক ২০২৬ সালে স্বর্ণের গড় দাম আউন্সপ্রতি ৪,৪৫০ ডলার হবে বলে ধারণা করছে। গোল্ডম্যান স্যাক্সের পূর্বাভাস আরও উঁচু—তারা মনে করছে ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ দাম প্রায় ৪,৯০০ ডলার ছুঁতে পারে।

আগামী দিনে স্বর্ণের দামের সম্ভাবনা

দুবাইয়ের বাসিন্দাদের জন্য মূল বার্তাটি পরিষ্কার: আবারও বৈশ্বিক অর্থনীতি নিরাপত্তার প্রতীক হিসেবে স্বর্ণের দিকে ঝুঁকছে, তাই দাম বাড়ছে।
ক্রেতারা এখন কিনবেন নাকি অপেক্ষা করবেন—তা নির্ভর করবে পরবর্তী কয়েক সপ্তাহের বাজার পরিস্থিতির উপর। ডিসেম্বরের ফেড বৈঠক তাই বিশেষ নজরে রয়েছে।
যদি সুদ কমানোর প্রত্যাশা আরও জোরালো হয়, স্বর্ণের দাম আরও বাড়তে পারে। আর যদি ফেড সুদ অপরিবর্তিত রাখে, কিছুটা স্থিরতা ফিরতে পারে। তবে আপাতত স্বর্ণের ঝিলিক আবারও বিশ্ব অর্থনীতির কেন্দ্রে ফিরে এসেছে।


# স্বর্ণদাম #বাজারবিশ্লেষণ  #দুবাই  #ফেড  #অর্থনীতি