১০:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
২০২৬ সাল থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্মার্টফোন ও স্মার্টওয়াচ ব্যবহার নিষিদ্ধ তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন: সালাহউদ্দিন চীনের হাতে বৈশ্বিক ফার্মাসিউটিক্যাল খাতের নিয়ন্ত্রণ সিঙ্গাপুরের সাহিত্যকে এগিয়ে নিতে নিজের সম্পদ ঝুঁকিতে ফেলছেন এডমন্ড উই মৃত্যুহীন প্রসবের লক্ষ্য: ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে মাতৃস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সাফল্য প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৩২) আমেরিকায় খাদ্যপরামর্শে ফেরত আসছে পুরোনো ‘ফুড পিরামিড’ বিতর্ক সিঙ্গাপুর বায়েনাল ২০২৫: শহরটাই হয়ে ওঠে খোলা একটি আর্ট গ্যালারি হিজাব পরা রেসলিং তারকা নূর ‘ফিনিক্স’ ডায়ানার আগুন থেকে উঠে দাঁড়ানোর গল্প পাকিস্তান আইডলে টপ–১৬–এ রোমাইসা তারিক: “এই শো আমার জীবন পুরো বদলে দিয়েছে”

চীনের হাতে বৈশ্বিক ফার্মাসিউটিক্যাল খাতের নিয়ন্ত্রণ

An employee examines vials of adrenaline hydrochloride injection solution at a China Grand Pharmaceutical and Healthcare Holdings Ltd. facility in Wuhan, China, on Tuesday, June 13, 2017. China Grand Pharma mainly aims to export finished drugs to developing markets and hasn’t faced regulatory actions from the U.S. or European drug quality watchdogs, according to the company. Photographer: Qilai Shen/Bloomberg

বিশ্ব—বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র—ওষুধ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় মূল কাঁচামালের ক্ষেত্রে চীনের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এই নির্ভরতা নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি বাড়াচ্ছে এবং সরবরাহব্যবস্থার বহুমুখীকরণের দাবি আরও জোরালো করছে।

প্রায় ৭০০টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধে ব্যবহৃত অন্তত একটি রাসায়নিকের একমাত্র সরবরাহকারী হলো চীন।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে হয়তো বাণিজ্যবিরোধ কিছুটা শান্ত হয়েছে, কিন্তু সম্পর্ক আবার উত্তপ্ত হলে বেইজিংয়ের হাতে রয়েছে চাপ প্রয়োগের আরও উপায়। এর মধ্যে বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ হলো—ওষুধ তৈরির কাঁচামালের ওপর চীনের কড়াকড়ি নিয়ন্ত্রণ, যা এত দিন ওয়াশিংটনের নজরে বেশি আসেনি।

সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র–চীন অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা পর্যালোচনা কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদনে এই ঝুঁকির ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সেখানে কংগ্রেসকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, ২০২০ সালের আইন দ্রুত সংশোধন করে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনকে (FDA) এমন ক্ষমতা দিতে হবে, যাতে তারা ওষুধ কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে উৎপাদনে ব্যবহৃত উপাদানের উৎস ও পরিমাণ সম্পর্কে বাধ্যতামূলক তথ্য চাইতে পারে। পাশাপাশি, চীনের বাইরে অন্য উৎস থেকে কাঁচামাল ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়ার সুপারিশও করা হয়েছে।

এটি প্রথমবার নয় যে কমিশন এই ঝুঁকি তুলে ধরল। তবে সম্প্রতি চীন গুরুত্বপূর্ণ রেয়ার আর্থ খনিজের রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ কঠোর করার পর যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে দ্রুত নতি স্বীকার করেছিল—তা দেখিয়ে দেয় যে ওষুধ কাঁচামালের ওপর নির্ভরতার মতো গুরুতর ঝুঁকি আর উপেক্ষা করা যাবে না।

বিশাল ও পণ্যায়িত উৎপাদন খাতের কারণে—যার সূচনা হয়েছিল ১৯৫০-এর দশকে—চীন আজ বৈশ্বিক ওষুধ–সরবরাহ শৃঙ্খলে অপ্রতিরোধ্য শক্তি। কী স্টার্টিং ম্যাটেরিয়াল (KSM) নামে পরিচিত যে মৌলিক রাসায়নিক থেকে সক্রিয় ফার্মাসিউটিক্যাল উপাদান (API) তৈরি হয়, সেসব উপাদানের অন্যতম প্রধান উৎপাদক হলো চীন।

America's Medicine Vulnerability: How China's Grip on Drug Ingredients  Threatens Global Health - The Rio Times

তবে যুক্তরাষ্ট্র আসলে কতটা চীনের ওপর নির্ভরশীল—তার সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া কঠিন। বড় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোরও এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের উৎসাহ কম। সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য হিসাব পাওয়া যায় ওষুধের মাননির্ধারক সংস্থা ইউএস ফার্মাকোপিয়ার বিশ্লেষণ থেকে।

এফডিএতে জমা দেওয়া ড্রাগ মাস্টার ফাইল পরীক্ষা করে দেখা যায়, ১৯৮০ সালে চীন ছিল কার্যত অনুপস্থিত। ২০ বছর পর চীনের অংশগ্রহণ দাঁড়ায় ৫ শতাংশে, যেখানে ভারত ছিল ১৯ শতাংশে। তবে গত বছর চীন ৪৫ শতাংশ জমা দিয়ে ভারতকে ছাড়িয়ে যায়। বিষয়টি আরও জটিল হয় কারণ—বিশ্বের বৃহত্তম জেনেরিক ওষুধ সরবরাহকারী ভারতও ব্যাপকভাবে চীনা কাঁচামালের ওপর নির্ভরশীল, যা এফডিএর তথ্যের বাইরে।

ওই অলাভজনক প্রতিষ্ঠান আরও দেখিয়েছে—যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত সক্রিয় ওষুধ উপাদানের অর্ধেকই আসে মাত্র একটি উৎস থেকে। প্রায় ৭০০টি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধে ব্যবহৃত একটি নির্দিষ্ট রাসায়নিক শুধু চীন থেকেই পাওয়া যায়। উদাহরণ হিসেবে অ্যান্টিবায়োটিক অ্যামোক্সিসিলিনকে ধরা যায়। বাইরে থেকে দেখলে মনে হয়—স্পেন থেকে সিঙ্গাপুর পর্যন্ত নানা দেশে এর উপকরণ পাওয়া যায়। কিন্তু এর চারটি প্রধান কাঁচামালের প্রায় সবই আসে চীন থেকে।

মহামারির সময় যে সরবরাহ–সংকট দেখা গিয়েছিল, তা দেখিয়ে দেয়—অত্যধিকভাবে একটি দেশের ওপর নির্ভরতা কত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, বিশেষ করে সেই দেশ যদি যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী হয়। যদিও বাণিজ্যযুদ্ধের চরম পর্যায়েও চীন কখনো ওষুধ রপ্তানি বন্ধের হুমকি দেয়নি। তবুও ভূরাজনীতির বাইরে আরেকটি বিশ্বব্যাপী ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে সরবরাহব্যবস্থা আবারও ভেঙে পড়তে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা পর্যালোচনা কমিশনের সদস্য লিল্যান্ড মিলার বলেন, চীন সক্রিয় ওষুধ উপাদানের একটি “ভীতিকর অংশ” নিয়ন্ত্রণ করে। কমিশনের সরাসরি নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা না থাকলেও তাদের লক্ষ্য হলো—ভারতসহ অন্যান্য মিত্র দেশকে যুক্ত করে এমন একটি সরবরাহব্যবস্থা গড়ে তোলা, যা নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে চীনকে এড়িয়ে চলতে পারবে।

U.S. Supply Chains Deemed Vulnerable to Chinese Exploitation - WSJ

কাজটি কঠিন হবে, কারণ এসব রাসায়নিকের উৎপাদন কম লাভজনক ব্যবসা। ১৯৮০–এর দশকে চীন তার উৎপাদন খাতকে উদারীকরণ করে এবং স্থানীয় জনগণের জন্য কম খরচে ওষুধ সরবরাহকে অগ্রাধিকার দেয়। এক রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একজন নির্বাহী বলেন—যদি যুক্তরাষ্ট্র নিজস্ব সরবরাহ–শৃঙ্খল পুনর্গঠন করতে চায়, তবে তাদের উৎপাদন ব্যয় প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে যাবে। তবুও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওষুধগুলোর ক্ষেত্রে অন্তত সীমিত পরিসরে হলেও এমন উদ্যোগ নিতে হবে।

এ ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত হলো ক্যালিফোর্নিয়ায় খনি–নির্ভর রেয়ার আর্থ উৎপাদক এমপি ম্যাটেরিয়ালসের সঙ্গে পেন্টাগনের চুক্তি। ওই চুক্তিতে ১০ বছরের জন্য মূল্য–সুরক্ষা নির্ধারিত, যেখানে বাজারদর কমে গেলে পার্থক্যটা সরকার পরিশোধ করবে।

ফার্মাসিউটিক্যাল খাতেও হয়তো এমন মডেল গ্রহণ করতে হবে। অনেক খাতেই চীন সরবরাহের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখলেও, যুক্তরাষ্ট্রকে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু ক্ষেত্রে চীনের ওপর নির্ভরতা কমানো ছাড়া উপায় নেই।

লেখক: জুলিয়ানা লিউ ব্লুমবার্গ ওপিনিয়নের এশিয়ান গ্রুপের কলামনিস্ট, কর্পোরেট কৌশল ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে লেখেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

২০২৬ সাল থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্মার্টফোন ও স্মার্টওয়াচ ব্যবহার নিষিদ্ধ

চীনের হাতে বৈশ্বিক ফার্মাসিউটিক্যাল খাতের নিয়ন্ত্রণ

০৮:০০:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫

বিশ্ব—বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র—ওষুধ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় মূল কাঁচামালের ক্ষেত্রে চীনের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এই নির্ভরতা নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি বাড়াচ্ছে এবং সরবরাহব্যবস্থার বহুমুখীকরণের দাবি আরও জোরালো করছে।

প্রায় ৭০০টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধে ব্যবহৃত অন্তত একটি রাসায়নিকের একমাত্র সরবরাহকারী হলো চীন।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে হয়তো বাণিজ্যবিরোধ কিছুটা শান্ত হয়েছে, কিন্তু সম্পর্ক আবার উত্তপ্ত হলে বেইজিংয়ের হাতে রয়েছে চাপ প্রয়োগের আরও উপায়। এর মধ্যে বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ হলো—ওষুধ তৈরির কাঁচামালের ওপর চীনের কড়াকড়ি নিয়ন্ত্রণ, যা এত দিন ওয়াশিংটনের নজরে বেশি আসেনি।

সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র–চীন অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা পর্যালোচনা কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদনে এই ঝুঁকির ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সেখানে কংগ্রেসকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, ২০২০ সালের আইন দ্রুত সংশোধন করে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনকে (FDA) এমন ক্ষমতা দিতে হবে, যাতে তারা ওষুধ কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে উৎপাদনে ব্যবহৃত উপাদানের উৎস ও পরিমাণ সম্পর্কে বাধ্যতামূলক তথ্য চাইতে পারে। পাশাপাশি, চীনের বাইরে অন্য উৎস থেকে কাঁচামাল ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়ার সুপারিশও করা হয়েছে।

এটি প্রথমবার নয় যে কমিশন এই ঝুঁকি তুলে ধরল। তবে সম্প্রতি চীন গুরুত্বপূর্ণ রেয়ার আর্থ খনিজের রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ কঠোর করার পর যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে দ্রুত নতি স্বীকার করেছিল—তা দেখিয়ে দেয় যে ওষুধ কাঁচামালের ওপর নির্ভরতার মতো গুরুতর ঝুঁকি আর উপেক্ষা করা যাবে না।

বিশাল ও পণ্যায়িত উৎপাদন খাতের কারণে—যার সূচনা হয়েছিল ১৯৫০-এর দশকে—চীন আজ বৈশ্বিক ওষুধ–সরবরাহ শৃঙ্খলে অপ্রতিরোধ্য শক্তি। কী স্টার্টিং ম্যাটেরিয়াল (KSM) নামে পরিচিত যে মৌলিক রাসায়নিক থেকে সক্রিয় ফার্মাসিউটিক্যাল উপাদান (API) তৈরি হয়, সেসব উপাদানের অন্যতম প্রধান উৎপাদক হলো চীন।

America's Medicine Vulnerability: How China's Grip on Drug Ingredients  Threatens Global Health - The Rio Times

তবে যুক্তরাষ্ট্র আসলে কতটা চীনের ওপর নির্ভরশীল—তার সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া কঠিন। বড় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোরও এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের উৎসাহ কম। সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য হিসাব পাওয়া যায় ওষুধের মাননির্ধারক সংস্থা ইউএস ফার্মাকোপিয়ার বিশ্লেষণ থেকে।

এফডিএতে জমা দেওয়া ড্রাগ মাস্টার ফাইল পরীক্ষা করে দেখা যায়, ১৯৮০ সালে চীন ছিল কার্যত অনুপস্থিত। ২০ বছর পর চীনের অংশগ্রহণ দাঁড়ায় ৫ শতাংশে, যেখানে ভারত ছিল ১৯ শতাংশে। তবে গত বছর চীন ৪৫ শতাংশ জমা দিয়ে ভারতকে ছাড়িয়ে যায়। বিষয়টি আরও জটিল হয় কারণ—বিশ্বের বৃহত্তম জেনেরিক ওষুধ সরবরাহকারী ভারতও ব্যাপকভাবে চীনা কাঁচামালের ওপর নির্ভরশীল, যা এফডিএর তথ্যের বাইরে।

ওই অলাভজনক প্রতিষ্ঠান আরও দেখিয়েছে—যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত সক্রিয় ওষুধ উপাদানের অর্ধেকই আসে মাত্র একটি উৎস থেকে। প্রায় ৭০০টি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধে ব্যবহৃত একটি নির্দিষ্ট রাসায়নিক শুধু চীন থেকেই পাওয়া যায়। উদাহরণ হিসেবে অ্যান্টিবায়োটিক অ্যামোক্সিসিলিনকে ধরা যায়। বাইরে থেকে দেখলে মনে হয়—স্পেন থেকে সিঙ্গাপুর পর্যন্ত নানা দেশে এর উপকরণ পাওয়া যায়। কিন্তু এর চারটি প্রধান কাঁচামালের প্রায় সবই আসে চীন থেকে।

মহামারির সময় যে সরবরাহ–সংকট দেখা গিয়েছিল, তা দেখিয়ে দেয়—অত্যধিকভাবে একটি দেশের ওপর নির্ভরতা কত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, বিশেষ করে সেই দেশ যদি যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী হয়। যদিও বাণিজ্যযুদ্ধের চরম পর্যায়েও চীন কখনো ওষুধ রপ্তানি বন্ধের হুমকি দেয়নি। তবুও ভূরাজনীতির বাইরে আরেকটি বিশ্বব্যাপী ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে সরবরাহব্যবস্থা আবারও ভেঙে পড়তে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা পর্যালোচনা কমিশনের সদস্য লিল্যান্ড মিলার বলেন, চীন সক্রিয় ওষুধ উপাদানের একটি “ভীতিকর অংশ” নিয়ন্ত্রণ করে। কমিশনের সরাসরি নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা না থাকলেও তাদের লক্ষ্য হলো—ভারতসহ অন্যান্য মিত্র দেশকে যুক্ত করে এমন একটি সরবরাহব্যবস্থা গড়ে তোলা, যা নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে চীনকে এড়িয়ে চলতে পারবে।

U.S. Supply Chains Deemed Vulnerable to Chinese Exploitation - WSJ

কাজটি কঠিন হবে, কারণ এসব রাসায়নিকের উৎপাদন কম লাভজনক ব্যবসা। ১৯৮০–এর দশকে চীন তার উৎপাদন খাতকে উদারীকরণ করে এবং স্থানীয় জনগণের জন্য কম খরচে ওষুধ সরবরাহকে অগ্রাধিকার দেয়। এক রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একজন নির্বাহী বলেন—যদি যুক্তরাষ্ট্র নিজস্ব সরবরাহ–শৃঙ্খল পুনর্গঠন করতে চায়, তবে তাদের উৎপাদন ব্যয় প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে যাবে। তবুও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওষুধগুলোর ক্ষেত্রে অন্তত সীমিত পরিসরে হলেও এমন উদ্যোগ নিতে হবে।

এ ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত হলো ক্যালিফোর্নিয়ায় খনি–নির্ভর রেয়ার আর্থ উৎপাদক এমপি ম্যাটেরিয়ালসের সঙ্গে পেন্টাগনের চুক্তি। ওই চুক্তিতে ১০ বছরের জন্য মূল্য–সুরক্ষা নির্ধারিত, যেখানে বাজারদর কমে গেলে পার্থক্যটা সরকার পরিশোধ করবে।

ফার্মাসিউটিক্যাল খাতেও হয়তো এমন মডেল গ্রহণ করতে হবে। অনেক খাতেই চীন সরবরাহের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখলেও, যুক্তরাষ্ট্রকে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু ক্ষেত্রে চীনের ওপর নির্ভরতা কমানো ছাড়া উপায় নেই।

লেখক: জুলিয়ানা লিউ ব্লুমবার্গ ওপিনিয়নের এশিয়ান গ্রুপের কলামনিস্ট, কর্পোরেট কৌশল ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে লেখেন।