১১:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫

খাদ্যই সম্প্রদায় পুনর্গঠনের শক্তিশালী উপায়

আমি যখন শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে আসি, তখন আমাদের প্রায় কিছুই ছিল না—কিন্তু ছিল প্রতিবেশীদের দয়া। তারা আমাদের খাবার এনে দিত, মাকে কাজ খুঁজে পেতে সাহায্য করত এবং এক অনিশ্চিত নতুন দেশে আমাদের মনে করিয়ে দিত যে আমরা একা নই। জীবনের শুরুতে পাওয়া এই অভিজ্ঞতাগুলো আমার রান্না ও জীবনদর্শনকে গভীরভাবে গড়ে দিয়েছে।

এই বছর যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ঘুরে আমার নতুন পিবিএস বিশেষ অনুষ্ঠানটি নির্মাণের সময় সেই স্মৃতিগুলো আবার ফিরে আসে। লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো থেকে ডেনভারের ‘পে-হোয়াট-ইউ-ক্যান’ ক্যাফে—আমি যেখানেই গেছি, দেখেছি সাধারণ মানুষ অসাধারণ কিছু করছে। খাদ্যদ্রব্যের দাম, বাড়িভাড়া ও দৈনন্দিন উদ্বেগ যখন অনেক পরিবারের সামর্থ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে, তখন মানুষ একে অন্যের পাশে দাঁড়াচ্ছে।

পরিবারগুলোর জন্য এখনো নিরাপত্তা জাল অনেক ফোঁটা
আমেরিকায় খাদ্য-অনিরাপত্তা বাড়ছে। আমি যে প্রতিটি সম্প্রদায়ে গেছি, সেখানে এর চাপ দেখেছি। সম্প্রতি অস্থায়ীভাবে স্ন্যাপ সুবিধা বন্ধ হয়ে গেলে প্রায় ৪২ মিলিয়ন মানুষ তার প্রভাব অনুভব করে। খাদ্যব্যাঙ্কের সারি বেড়ে যায়, আর অভিভাবকেরা বলেন যে বাড়তি প্রতিটি উপকরণ তারা টেনে-টানেই ব্যবহার করছেন।

স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও প্রকৃত চাহিদা কমেনি। বহু পরিবার এখনো দুর্বল নিরাপত্তা জালে ঝুলছে, আর নতুন বিধিনিষেধ আরও লক্ষ মানুষের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে—বিশেষত সেই সহায়তা হারানোর ঝুঁকি, যা তাদের সন্তানদের মর্যাদার সঙ্গে খাওয়াতে সাহায্য করে।

ফলে মানুষ নিজেরাই নিরাপত্তা জাল তৈরি করছে। কলোরাডোতে এক মা বাড়তি লাসানিয়া রান্না করেন, কারণ পাশের ফ্ল্যাটের পরিবারটি কষ্টে আছে। ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রতিবেশীরা ‘বুরিটো নাইট’ আয়োজন করেন যেন তাদের ব্লকের কেউ ক্ষুধার্ত না থাকে। এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাদ্যের দাম বাড়া এবং আয়ের ঘাটতির ফলে এ ধরনের স্বতঃস্ফূর্ত উদারতা বাড়ছে। এসব ছোট উদ্যোগ শুধু খাবার নিয়ে নয়—এগুলো মানুষের মর্যাদা রক্ষার উদ্যোগ। এগুলো বলতে চায়, আমি তোমাকে দেখি। তুমি গুরুত্বপূর্ণ। তুমি এই সমাজের অংশ।

এই বিশ্বাসই আমার পিবিএস অনুষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দু—‘লিডিয়া সেলিব্রেটস আমেরিকা: আ নেশন অব নেবার্স।’

‘আ নেশন অব নেবার্স’ আমাকে যে আমেরিকার সাথে পরিচয় করায়
ডেনভারের ‘সেইম ক্যাফে’-তে অতিথিরা অর্থ দিয়ে, নিজের বাগানের সবজি দিয়ে, বা এক ঘণ্টা স্বেচ্ছাসেবা দিয়েও খাবারের মূল্য দিতে পারে—কোনো প্রশ্ন নেই।

সান ফ্রান্সিসকোর ‘ডিস্ট্রিক্ট ১০ কমিউনিটি মার্কেট’-এ, যা দেশের প্রথম আইনসমর্থিত বিনামূল্যের মুদি দোকান, মানুষ নিজেদের মতো করে খাবার বেছে নেয়—কোনো বাধা বা কাগজপত্রের জটিলতা নয়, বরং সম্মানের পরিবেশে।

লস অ্যাঞ্জেলেসে আমি দেখেছি শেফ ও স্বেচ্ছাসেবীরা জানুয়ারির দাবানলে সবকিছু হারানো পরিবারগুলোর জন্য গরম খাবার রান্না করছেন—চুলায় হাঁড়ি বসানো, চারপাশে সংগীত, আর শোকের মাঝেই আশার স্ফুলিঙ্গ জ্বলছে।

এসব দৃশ্য আমাকে আবার স্মরণ করিয়ে দেয়—খাদ্যই সম্প্রদায় পুনর্গঠনের অন্যতম শক্তিশালী মাধ্যম।

দাম বাড়ুক, বাজেট ভেঙে পড়ুক—তবুও আমরা অসুস্থ প্রতিবেশীর জন্য রান্না করতে পারি, দুই শিফট করা একক অভিভাবকের জন্য খাবার পৌঁছে দিতে পারি, কিংবা যেটুকু আমাদের আছে—ফসল, রুটি বা কেনাকাটা—তা ভাগ করে নিতে পারি। আমরা এখনো অতিরিক্ত একটি চেয়ার টেনে দিতে পারি। আমরা এখনো একে অন্যের সঙ্গে আচরণ করতে পারি মানবিকতা ও দৈনন্দিন সৌজন্যের ভিত্তিতে।

শৈশবে অভাব-জর্জরিত এক ঘনিষ্ঠ সম্প্রদায়ে বড় হওয়ার সময় আমার দাদী বলতেন, “তোমার যদি একটি রুটিও থাকে, তবে তোমার ভাগ করার মতো যথেষ্ট আছে।” এই জ্ঞান আমাকে শরণার্থী শিবির থেকে প্রথম রেস্তোরাঁর রান্নাঘর পর্যন্ত এবং তারপর আমেরিকার অসংখ্য বাড়িতে সঙ্গে রেখেছে।

অবশ্যই নীতিনির্ধারকদের দায়িত্ব আছে—অর্থনৈতিক চাপে থাকা পরিবারগুলোকে সাহায্য করার জন্য কার্যকর খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করা, ছোট কৃষক ও মুদি দোকানগুলোকে সমর্থন করা, আর কোনো শিশুকে যেন ক্ষুধার্ত অবস্থায় স্কুলে যেতে না হয় তা নিশ্চিত করা। এগুলো দীর্ঘমেয়াদি সমাধান, যেগুলোর জন্য নিয়মিত প্রতিশ্রুতি দরকার।

কিন্তু সবচেয়ে ভালো নীতি দিয়েও সেই মানবিক বন্ধন সৃষ্টি করা যায় না, যা তৈরি হয় যখন একজন প্রতিবেশী আরেকজনের পাশে দাঁড়ায়। নেতারা যখন বড় পরিবর্তনের পথে কাজ করেন, তখন একে অন্যের যত্ন নেওয়ার কাজ শুরু হয় আমাদের নিজের রান্নাঘর থেকে।

এই উদারতা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়—আমরা যে আমেরিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখি, সেটাই এই দেশ। আজ সেই স্মরণ আরও জরুরি।

প্রতি বার আমরা খাবার দিই—যত সাধারণই হোক—আমরা আসলে একটি গভীর বার্তা দিই: আমরা একে অন্যের সঙ্গে বাঁধা, আমাদের ভাগ্য জড়িত, এবং একটি জাতি তখনই সবচেয়ে শক্তিশালী হয় যখন সকলের সমান সম্পদ থাকে না—বরং যখন সবার পাশে কেউ থাকে।

এটাই সেই আমেরিকা, যেটিকে আমরা আরও শক্তিশালী করতে পারি
নিজের প্রতিবেশীতেই তাকান। বিশেষভাবে সক্রিয় হয়ে চারপাশের মানুষদের চেনার চেষ্টা করুন। এই সপ্তাহে কারো একটি গরম খাবারের দরকার আছে? কারো দরজায় বন্ধুত্বপূর্ণ নক দিতে পারেন? আপনাকে কোনো ক্যাফে বা বাজার চালাতে হবে না—শুধু যত্নশীল হতে হবে।

‘আ নেশন অব নেবার্স’-এ আমি অসংখ্য মানুষের সঙ্গে দেখা করেছি, যারা অনুমতি, তহবিল বা “সঠিক সময়”-এর জন্য অপেক্ষা করেননি। তারা প্রয়োজন দেখেছেন, আর রান্না করেছেন। সংগঠিত হয়েছেন। স্বাগত জানিয়েছেন। শূন্য থেকে সম্প্রদায় গড়েছেন।

এটাই সেই আমেরিকা, যাকে আমি চিনি। এটাই সেই দেশ, যা আমাকে একদিন স্বাগত জানিয়েছিল। আর এটাই সেই আমেরিকা, যাকে আমরা আরও শক্তিশালী করতে পারি—একটি খাবার, একটি উদ্যোগ, একটি প্রতিবেশীকে কেন্দ্র করে।

লেখক: লিডিয়া বাস্তিয়ানিচ পুরস্কারপ্রাপ্ত পাবলিক টেলিভিশন হোস্ট, শেফ, লেখক ও রেস্তোরাঁতরী। তার নতুন বিশেষ অনুষ্ঠান ‘লিডিয়া সেলিব্রেটস আমেরিকা: আ নেশন অব নেবার্স’ ২৫ নভেম্বর প্রচার শুরু হয়েছে এবং পিবিএসে সম্প্রচার চলমান।

Caption ১৯৫৭ সালের এক ছবিতে দেখা যায় ১০ বছরের লিডিয়া বাস্তিয়ানিচকে। তখন তিনি ক্রোয়েশিয়ার অংশ পুলা শহরে থাকতেন। ১৯৫৮ সালে তার পরিবার আমেরিকায় অভিবাসন করে।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

পারমাণবিক প্রকল্পে প্রজন্মগত বিভাজন

খাদ্যই সম্প্রদায় পুনর্গঠনের শক্তিশালী উপায়

১০:৩৩:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫

আমি যখন শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে আসি, তখন আমাদের প্রায় কিছুই ছিল না—কিন্তু ছিল প্রতিবেশীদের দয়া। তারা আমাদের খাবার এনে দিত, মাকে কাজ খুঁজে পেতে সাহায্য করত এবং এক অনিশ্চিত নতুন দেশে আমাদের মনে করিয়ে দিত যে আমরা একা নই। জীবনের শুরুতে পাওয়া এই অভিজ্ঞতাগুলো আমার রান্না ও জীবনদর্শনকে গভীরভাবে গড়ে দিয়েছে।

এই বছর যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ঘুরে আমার নতুন পিবিএস বিশেষ অনুষ্ঠানটি নির্মাণের সময় সেই স্মৃতিগুলো আবার ফিরে আসে। লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো থেকে ডেনভারের ‘পে-হোয়াট-ইউ-ক্যান’ ক্যাফে—আমি যেখানেই গেছি, দেখেছি সাধারণ মানুষ অসাধারণ কিছু করছে। খাদ্যদ্রব্যের দাম, বাড়িভাড়া ও দৈনন্দিন উদ্বেগ যখন অনেক পরিবারের সামর্থ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে, তখন মানুষ একে অন্যের পাশে দাঁড়াচ্ছে।

পরিবারগুলোর জন্য এখনো নিরাপত্তা জাল অনেক ফোঁটা
আমেরিকায় খাদ্য-অনিরাপত্তা বাড়ছে। আমি যে প্রতিটি সম্প্রদায়ে গেছি, সেখানে এর চাপ দেখেছি। সম্প্রতি অস্থায়ীভাবে স্ন্যাপ সুবিধা বন্ধ হয়ে গেলে প্রায় ৪২ মিলিয়ন মানুষ তার প্রভাব অনুভব করে। খাদ্যব্যাঙ্কের সারি বেড়ে যায়, আর অভিভাবকেরা বলেন যে বাড়তি প্রতিটি উপকরণ তারা টেনে-টানেই ব্যবহার করছেন।

স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও প্রকৃত চাহিদা কমেনি। বহু পরিবার এখনো দুর্বল নিরাপত্তা জালে ঝুলছে, আর নতুন বিধিনিষেধ আরও লক্ষ মানুষের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে—বিশেষত সেই সহায়তা হারানোর ঝুঁকি, যা তাদের সন্তানদের মর্যাদার সঙ্গে খাওয়াতে সাহায্য করে।

ফলে মানুষ নিজেরাই নিরাপত্তা জাল তৈরি করছে। কলোরাডোতে এক মা বাড়তি লাসানিয়া রান্না করেন, কারণ পাশের ফ্ল্যাটের পরিবারটি কষ্টে আছে। ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রতিবেশীরা ‘বুরিটো নাইট’ আয়োজন করেন যেন তাদের ব্লকের কেউ ক্ষুধার্ত না থাকে। এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাদ্যের দাম বাড়া এবং আয়ের ঘাটতির ফলে এ ধরনের স্বতঃস্ফূর্ত উদারতা বাড়ছে। এসব ছোট উদ্যোগ শুধু খাবার নিয়ে নয়—এগুলো মানুষের মর্যাদা রক্ষার উদ্যোগ। এগুলো বলতে চায়, আমি তোমাকে দেখি। তুমি গুরুত্বপূর্ণ। তুমি এই সমাজের অংশ।

এই বিশ্বাসই আমার পিবিএস অনুষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দু—‘লিডিয়া সেলিব্রেটস আমেরিকা: আ নেশন অব নেবার্স।’

‘আ নেশন অব নেবার্স’ আমাকে যে আমেরিকার সাথে পরিচয় করায়
ডেনভারের ‘সেইম ক্যাফে’-তে অতিথিরা অর্থ দিয়ে, নিজের বাগানের সবজি দিয়ে, বা এক ঘণ্টা স্বেচ্ছাসেবা দিয়েও খাবারের মূল্য দিতে পারে—কোনো প্রশ্ন নেই।

সান ফ্রান্সিসকোর ‘ডিস্ট্রিক্ট ১০ কমিউনিটি মার্কেট’-এ, যা দেশের প্রথম আইনসমর্থিত বিনামূল্যের মুদি দোকান, মানুষ নিজেদের মতো করে খাবার বেছে নেয়—কোনো বাধা বা কাগজপত্রের জটিলতা নয়, বরং সম্মানের পরিবেশে।

লস অ্যাঞ্জেলেসে আমি দেখেছি শেফ ও স্বেচ্ছাসেবীরা জানুয়ারির দাবানলে সবকিছু হারানো পরিবারগুলোর জন্য গরম খাবার রান্না করছেন—চুলায় হাঁড়ি বসানো, চারপাশে সংগীত, আর শোকের মাঝেই আশার স্ফুলিঙ্গ জ্বলছে।

এসব দৃশ্য আমাকে আবার স্মরণ করিয়ে দেয়—খাদ্যই সম্প্রদায় পুনর্গঠনের অন্যতম শক্তিশালী মাধ্যম।

দাম বাড়ুক, বাজেট ভেঙে পড়ুক—তবুও আমরা অসুস্থ প্রতিবেশীর জন্য রান্না করতে পারি, দুই শিফট করা একক অভিভাবকের জন্য খাবার পৌঁছে দিতে পারি, কিংবা যেটুকু আমাদের আছে—ফসল, রুটি বা কেনাকাটা—তা ভাগ করে নিতে পারি। আমরা এখনো অতিরিক্ত একটি চেয়ার টেনে দিতে পারি। আমরা এখনো একে অন্যের সঙ্গে আচরণ করতে পারি মানবিকতা ও দৈনন্দিন সৌজন্যের ভিত্তিতে।

শৈশবে অভাব-জর্জরিত এক ঘনিষ্ঠ সম্প্রদায়ে বড় হওয়ার সময় আমার দাদী বলতেন, “তোমার যদি একটি রুটিও থাকে, তবে তোমার ভাগ করার মতো যথেষ্ট আছে।” এই জ্ঞান আমাকে শরণার্থী শিবির থেকে প্রথম রেস্তোরাঁর রান্নাঘর পর্যন্ত এবং তারপর আমেরিকার অসংখ্য বাড়িতে সঙ্গে রেখেছে।

অবশ্যই নীতিনির্ধারকদের দায়িত্ব আছে—অর্থনৈতিক চাপে থাকা পরিবারগুলোকে সাহায্য করার জন্য কার্যকর খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করা, ছোট কৃষক ও মুদি দোকানগুলোকে সমর্থন করা, আর কোনো শিশুকে যেন ক্ষুধার্ত অবস্থায় স্কুলে যেতে না হয় তা নিশ্চিত করা। এগুলো দীর্ঘমেয়াদি সমাধান, যেগুলোর জন্য নিয়মিত প্রতিশ্রুতি দরকার।

কিন্তু সবচেয়ে ভালো নীতি দিয়েও সেই মানবিক বন্ধন সৃষ্টি করা যায় না, যা তৈরি হয় যখন একজন প্রতিবেশী আরেকজনের পাশে দাঁড়ায়। নেতারা যখন বড় পরিবর্তনের পথে কাজ করেন, তখন একে অন্যের যত্ন নেওয়ার কাজ শুরু হয় আমাদের নিজের রান্নাঘর থেকে।

এই উদারতা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়—আমরা যে আমেরিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখি, সেটাই এই দেশ। আজ সেই স্মরণ আরও জরুরি।

প্রতি বার আমরা খাবার দিই—যত সাধারণই হোক—আমরা আসলে একটি গভীর বার্তা দিই: আমরা একে অন্যের সঙ্গে বাঁধা, আমাদের ভাগ্য জড়িত, এবং একটি জাতি তখনই সবচেয়ে শক্তিশালী হয় যখন সকলের সমান সম্পদ থাকে না—বরং যখন সবার পাশে কেউ থাকে।

এটাই সেই আমেরিকা, যেটিকে আমরা আরও শক্তিশালী করতে পারি
নিজের প্রতিবেশীতেই তাকান। বিশেষভাবে সক্রিয় হয়ে চারপাশের মানুষদের চেনার চেষ্টা করুন। এই সপ্তাহে কারো একটি গরম খাবারের দরকার আছে? কারো দরজায় বন্ধুত্বপূর্ণ নক দিতে পারেন? আপনাকে কোনো ক্যাফে বা বাজার চালাতে হবে না—শুধু যত্নশীল হতে হবে।

‘আ নেশন অব নেবার্স’-এ আমি অসংখ্য মানুষের সঙ্গে দেখা করেছি, যারা অনুমতি, তহবিল বা “সঠিক সময়”-এর জন্য অপেক্ষা করেননি। তারা প্রয়োজন দেখেছেন, আর রান্না করেছেন। সংগঠিত হয়েছেন। স্বাগত জানিয়েছেন। শূন্য থেকে সম্প্রদায় গড়েছেন।

এটাই সেই আমেরিকা, যাকে আমি চিনি। এটাই সেই দেশ, যা আমাকে একদিন স্বাগত জানিয়েছিল। আর এটাই সেই আমেরিকা, যাকে আমরা আরও শক্তিশালী করতে পারি—একটি খাবার, একটি উদ্যোগ, একটি প্রতিবেশীকে কেন্দ্র করে।

লেখক: লিডিয়া বাস্তিয়ানিচ পুরস্কারপ্রাপ্ত পাবলিক টেলিভিশন হোস্ট, শেফ, লেখক ও রেস্তোরাঁতরী। তার নতুন বিশেষ অনুষ্ঠান ‘লিডিয়া সেলিব্রেটস আমেরিকা: আ নেশন অব নেবার্স’ ২৫ নভেম্বর প্রচার শুরু হয়েছে এবং পিবিএসে সম্প্রচার চলমান।

Caption ১৯৫৭ সালের এক ছবিতে দেখা যায় ১০ বছরের লিডিয়া বাস্তিয়ানিচকে। তখন তিনি ক্রোয়েশিয়ার অংশ পুলা শহরে থাকতেন। ১৯৫৮ সালে তার পরিবার আমেরিকায় অভিবাসন করে।