রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সতর্ক করেছেন, ইউক্রেনীয় সেনারা সরে না গেলে রাশিয়া সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে পুরো ডনবাস অঞ্চল নিজের নিয়ন্ত্রণে নেবে। কিয়েভ এই দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে।
মস্কোতে সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, ডনবাসের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলকে ‘মুক্ত’ করার লক্ষ্য থেকে রাশিয়া সরে যাবে না। তিনি জানান, আলোচনার পথ খোলা থাকলেও প্রয়োজনে সামরিক উপায়ে অঞ্চল দখলের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পটভূমি
২০২২ সালে রাশিয়া বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরু করে। এর আগের আট বছর ধরে ডনবাসে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ও ইউক্রেনীয় বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল। দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক—এই দুই অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করাকে রাশিয়া যুদ্ধের মূল লক্ষ্য হিসেবে তুলে ধরেছে।

পুতিনের বক্তব্য
ভারত সফরের আগে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন,
“আমরা হয় সশস্ত্র শক্তির সাহায্যে এসব অঞ্চল মুক্ত করব, নয়তো ইউক্রেনীয় সেনারা নিজে থেকেই এলাকা ত্যাগ করবে।”
ইউক্রেনের অবস্থান
কিয়েভ জানিয়েছে, তারা নিজেদের ভূখণ্ড রাশিয়ার কাছে ‘উপহার’ দিতে রাজি নয়। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া যে যুদ্ধ শুরু করেছে, তার পুরস্কার হিসেবে কোনো অঞ্চল তারা মস্কোকে দেবে না।
রাশিয়ার দখলে থাকা অঞ্চল
রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেনের প্রায় ১৯.২ শতাংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে। এর মধ্যে রয়েছে—
ক্রিমিয়া (২০১৪ সালে দখলকৃত),
লুহানস্কের সম্পূর্ণ অঞ্চল,
দোনেৎস্কের ৮০ শতাংশের বেশি অংশ,
খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়ার প্রায় ৭৫ শতাংশ,
এ ছাড়া খারকিভ, সুমি, মাইকোলাইভ ও দনিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলের কিছু অংশ।
এখনও দোনেৎস্কের প্রায় পাঁচ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়ে গেছে।
শান্তিচুক্তি আলোচনায় রাশিয়ার দাবি
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্ভাব্য শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনায় রাশিয়া জানিয়েছে, তারা পুরো ডনবাস অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নিতে চায়। পাশাপাশি ওয়াশিংটনের কাছ থেকে অনানুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে মস্কো।

২০২২ সালে রাশিয়া দাবি করে, লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলে আয়োজিত গণভোটের ভিত্তিতে এসব অঞ্চল এখন রাশিয়ার অংশ। পশ্চিমা দেশগুলো ও ইউক্রেন এসব গণভোটকে ‘প্রহসন’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। আন্তর্জাতিকভাবে অঞ্চলগুলো এখনও ইউক্রেনের ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃত।
মার্কিন দূতদের সঙ্গে পুতিনের বৈঠক
সপ্তাহের শুরুতে ক্রেমলিনে পুতিন মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ ও জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের কিছু প্রস্তাবনা রাশিয়া গ্রহণ করেছে এবং আলোচনা চালিয়ে যাওয়া উচিত।
রুশ রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ জানায়, পুতিন বৈঠকটিকে ‘খুবই কার্যকর’ বলে মন্তব্য করেছেন এবং এটিকে আগস্টে আলাস্কায় তাঁর সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আলোচনা ধারাবাহিকতার অংশ বলে উল্লেখ করেছেন।
# রাশিয়া-ইউক্রেন_যুদ্ধ Donbas# Russia#UkraineWar #Putin #Kyiv# PeaceTalks #Geopolitics #UkraineCrisis
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















