০৯:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
ভারতীয় রুপির ফরওয়ার্ড রেট বৃদ্ধি: সুদ কমানোর আশা কমে যাওয়া ও তারল্য সংকটে বাজারে চাপ মস্কো-নয়াদিল্লির লক্ষ্য রাশিয়ায় ভারতীয় রপ্তানি বাড়ানো ২৬ বছর পর কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্ত পাকিস্তানি নাগরিক বিএনপির তিন নতুন প্রস্তাব নির্বাচন কমিশনের কাছে, নির্বাচনি তফসিলে আপত্তি নেই ডেঙ্গু: আরও ৩ জনের মৃত্যু, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৫৬৫ জন খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা: কারা থাকছেন তাঁর সঙ্গে খালেদা জিয়া রাষ্ট্রের নির্ধারিত ভিভিআইপি সুবিধা পাওয়ার একমাত্র অধিকৃত ব্যক্তি খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে নেওয়া হচ্ছে- মির্জা ফখরুল ৩টি বাসে আগুন: নোয়াখালীর সোনাপুর বিআরটিসি ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতি এইচ-১বি ভিসায় কড়াকড়ি যাচাইয়ের নির্দেশ দিল ট্রাম্প প্রশাসন

চীন নজিরবিহীন যুদ্ধজাহাজ সমাবেশ

পূর্ব এশিয়ার বিস্তীর্ণ জলসীমায় একযোগে বিপুলসংখ্যক নৌ ও কোস্টগার্ড জাহাজ মোতায়েন করেছে চীন। এক পর্যায়ে মোতায়েনকৃত জাহাজের সংখ্যা ১০০–রও বেশি ছাড়ায়। আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দেওয়া এই ব্যাপক সমাবেশকে সাম্প্রতিক বছরগুলোর সবচেয়ে বড় সামুদ্রিক শক্তি প্রদর্শন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

চীনের বাড়তি সামরিক জাহাজ মোতায়েন নিয়ে উদ্বেগ

বছরের এই সময় চীনের সামরিক মহড়ার মৌসুম

তাইওয়ান ইস্যুতে জাপান–চীন সম্পর্কের তীব্র উত্তেজনা

তাইওয়ানের অতিরিক্ত প্রতিরক্ষা বাজেটেও চীনের ক্ষোভ

China announces joint naval, air drills with Russia

পরিস্থিতি: পূর্ব এশিয়ায় বিশাল সামুদ্রিক উপস্থিতি

তাইপের তথ্য অনুযায়ী, চীন দক্ষিণ হলুদ সাগর থেকে পূর্ব চীন সাগর, দক্ষিণ চীন সাগর হয়ে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত একযোগে বিপুলসংখ্যক যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। আঞ্চলিক চারজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও একটি দেশের গোয়েন্দা নথি জানায়, সপ্তাহের শুরুতে জাহাজের সংখ্যা ছিল ১০০–র বেশি, যা বৃহস্পতিবার সকালে কমে দাঁড়ায় ৯০–এর ওপর।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের বড় সমাবেশের সময় সতর্কতা জারি করেছিল তাইওয়ান। এবারের সমাবেশ এর চেয়েও বড় ও বিস্তৃত বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র।

সামরিক মহড়ার মৌসুমে বাড়তি তৎপরতা

তাইওয়ানের ন্যাশনাল সিকিউরিটি ব্যুরোর প্রধান সাই মিং-ইয়েন জানান, বছরের এ সময় সাধারণত চীনের সামরিক মহড়া সবচেয়ে সক্রিয় থাকে। তাঁর ভাষায়, চীন বর্তমানে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে চারটি নৌবহর পরিচালনা করছে এবং তাইওয়ান সেগুলোর ওপর নিবিড় নজর রাখছে।

চীন এখনো কোনো বড় মহড়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। তবে হঠাৎ তৎপরতা বেড়ে যাওয়া পরিস্থিতির ঝুঁকিকে বাড়িয়ে তুলছে, বিশেষত জাপানের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়েনের পর।

PROFILE - Sanae Takaichi, Japan's 1st female premier, takes helm with focus  on economy, security

জাপান–চীন উত্তেজনা: তাইওয়ান ইস্যুর প্রভাব

গত মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি বলেন, চীন যদি তাইওয়ানে হামলা চালায়, টোকিও সামরিক প্রতিক্রিয়া বিবেচনা করতে পারে। এর প্রতিবাদে চীন ১৪ নভেম্বর জাপানি রাষ্ট্রদূতকে তলব করে। এর পরপরই যুদ্ধজাহাজ সমাবেশ বাড়তে থাকে বলে আঞ্চলিক সূত্র জানায়।

সূত্রটির ভাষায়, চীনের এই সমাবেশ সাধারণ প্রতিরক্ষা চাহিদার বাইরে গিয়ে অঞ্চলজুড়ে নতুন ঝুঁকি তৈরি করছে এবং এটি আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া পরিমাপের চেষ্টা হতে পারে।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা ব্যয়ে চীনের ক্ষোভ

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে অতিরিক্ত ৪০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা বাজেট ঘোষণা করার পর চীন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়। বেইজিং তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড দাবি করে এবং সামরিক চাপ অব্যাহত রেখেছে।

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের অফিস জানায়, তারা অঞ্চলজুড়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি রিয়েল-টাইমে পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম এবং জাতীয় নিরাপত্তায় কোনো ঝুঁকি নেই। আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সঙ্গে মিলে তারা একতরফা উসকানি প্রতিরোধের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।

Chinese defense ministry sends delegation to Europe

চীনের নীরবতা

চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং তাইওয়ান বিষয়ক কার্যালয় এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি।

মহড়ার ধরন ও লক্ষ্য

সূত্রগুলোর বরাতে জানা যায়, চীনের নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী যৌথভাবে বিদেশি জাহাজের ওপর নকল হামলা এবং ‘অ্যাক্সেস ডিনায়াল’ কৌশলের অনুশীলন করেছে—যা সংঘর্ষের পরিস্থিতিতে বাইরের শক্তিকে প্রবেশ থেকে বিরত রাখতে ব্যবহৃত হয়।

ধারাবাহিক পর্যবেক্ষক দেশগুলো বলছে, তারা পরিস্থিতিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে; তবে এখনো মনে করছে না যে এই মোতায়েন সরাসরি বড় ধরনের ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। একজন কর্মকর্তা বলেন, এটি বড় আকারের ‘আউটিং’, তবে তা এখনো নিয়মিত মহড়ার মতোই চলছে বলে মনে হচ্ছে।

গোয়েন্দা প্রতিবেদন বলছে, তাইওয়ানের নিকটবর্তী এলাকায় জাহাজের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়েনি।

তাইওয়ানকে ঘিরে চীনের সাম্প্রতিক মহড়া

চীনের সর্বশেষ প্রকাশিত তাইওয়ান–কেন্দ্রিক মহড়ার নাম ছিল ‘স্ট্রেইট থান্ডার–২০২৫’, যা এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হয়। তবে গত ডিসেম্বরে বড় সমাবেশ চলাকালে বেইজিং আনুষ্ঠানিক কিছু ঘোষণা দেয়নি।

 

# ChinaMilitary# TaiwanCrisis #JapanDiplomacy# EastAsiaSecurity # MaritimeTension

জনপ্রিয় সংবাদ

ভারতীয় রুপির ফরওয়ার্ড রেট বৃদ্ধি: সুদ কমানোর আশা কমে যাওয়া ও তারল্য সংকটে বাজারে চাপ

চীন নজিরবিহীন যুদ্ধজাহাজ সমাবেশ

০৭:৫৯:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫

পূর্ব এশিয়ার বিস্তীর্ণ জলসীমায় একযোগে বিপুলসংখ্যক নৌ ও কোস্টগার্ড জাহাজ মোতায়েন করেছে চীন। এক পর্যায়ে মোতায়েনকৃত জাহাজের সংখ্যা ১০০–রও বেশি ছাড়ায়। আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দেওয়া এই ব্যাপক সমাবেশকে সাম্প্রতিক বছরগুলোর সবচেয়ে বড় সামুদ্রিক শক্তি প্রদর্শন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

চীনের বাড়তি সামরিক জাহাজ মোতায়েন নিয়ে উদ্বেগ

বছরের এই সময় চীনের সামরিক মহড়ার মৌসুম

তাইওয়ান ইস্যুতে জাপান–চীন সম্পর্কের তীব্র উত্তেজনা

তাইওয়ানের অতিরিক্ত প্রতিরক্ষা বাজেটেও চীনের ক্ষোভ

China announces joint naval, air drills with Russia

পরিস্থিতি: পূর্ব এশিয়ায় বিশাল সামুদ্রিক উপস্থিতি

তাইপের তথ্য অনুযায়ী, চীন দক্ষিণ হলুদ সাগর থেকে পূর্ব চীন সাগর, দক্ষিণ চীন সাগর হয়ে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত একযোগে বিপুলসংখ্যক যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। আঞ্চলিক চারজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও একটি দেশের গোয়েন্দা নথি জানায়, সপ্তাহের শুরুতে জাহাজের সংখ্যা ছিল ১০০–র বেশি, যা বৃহস্পতিবার সকালে কমে দাঁড়ায় ৯০–এর ওপর।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের বড় সমাবেশের সময় সতর্কতা জারি করেছিল তাইওয়ান। এবারের সমাবেশ এর চেয়েও বড় ও বিস্তৃত বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র।

সামরিক মহড়ার মৌসুমে বাড়তি তৎপরতা

তাইওয়ানের ন্যাশনাল সিকিউরিটি ব্যুরোর প্রধান সাই মিং-ইয়েন জানান, বছরের এ সময় সাধারণত চীনের সামরিক মহড়া সবচেয়ে সক্রিয় থাকে। তাঁর ভাষায়, চীন বর্তমানে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে চারটি নৌবহর পরিচালনা করছে এবং তাইওয়ান সেগুলোর ওপর নিবিড় নজর রাখছে।

চীন এখনো কোনো বড় মহড়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। তবে হঠাৎ তৎপরতা বেড়ে যাওয়া পরিস্থিতির ঝুঁকিকে বাড়িয়ে তুলছে, বিশেষত জাপানের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়েনের পর।

PROFILE - Sanae Takaichi, Japan's 1st female premier, takes helm with focus  on economy, security

জাপান–চীন উত্তেজনা: তাইওয়ান ইস্যুর প্রভাব

গত মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি বলেন, চীন যদি তাইওয়ানে হামলা চালায়, টোকিও সামরিক প্রতিক্রিয়া বিবেচনা করতে পারে। এর প্রতিবাদে চীন ১৪ নভেম্বর জাপানি রাষ্ট্রদূতকে তলব করে। এর পরপরই যুদ্ধজাহাজ সমাবেশ বাড়তে থাকে বলে আঞ্চলিক সূত্র জানায়।

সূত্রটির ভাষায়, চীনের এই সমাবেশ সাধারণ প্রতিরক্ষা চাহিদার বাইরে গিয়ে অঞ্চলজুড়ে নতুন ঝুঁকি তৈরি করছে এবং এটি আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া পরিমাপের চেষ্টা হতে পারে।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা ব্যয়ে চীনের ক্ষোভ

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে অতিরিক্ত ৪০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা বাজেট ঘোষণা করার পর চীন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়। বেইজিং তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড দাবি করে এবং সামরিক চাপ অব্যাহত রেখেছে।

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের অফিস জানায়, তারা অঞ্চলজুড়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি রিয়েল-টাইমে পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম এবং জাতীয় নিরাপত্তায় কোনো ঝুঁকি নেই। আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সঙ্গে মিলে তারা একতরফা উসকানি প্রতিরোধের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।

Chinese defense ministry sends delegation to Europe

চীনের নীরবতা

চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং তাইওয়ান বিষয়ক কার্যালয় এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি।

মহড়ার ধরন ও লক্ষ্য

সূত্রগুলোর বরাতে জানা যায়, চীনের নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী যৌথভাবে বিদেশি জাহাজের ওপর নকল হামলা এবং ‘অ্যাক্সেস ডিনায়াল’ কৌশলের অনুশীলন করেছে—যা সংঘর্ষের পরিস্থিতিতে বাইরের শক্তিকে প্রবেশ থেকে বিরত রাখতে ব্যবহৃত হয়।

ধারাবাহিক পর্যবেক্ষক দেশগুলো বলছে, তারা পরিস্থিতিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে; তবে এখনো মনে করছে না যে এই মোতায়েন সরাসরি বড় ধরনের ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। একজন কর্মকর্তা বলেন, এটি বড় আকারের ‘আউটিং’, তবে তা এখনো নিয়মিত মহড়ার মতোই চলছে বলে মনে হচ্ছে।

গোয়েন্দা প্রতিবেদন বলছে, তাইওয়ানের নিকটবর্তী এলাকায় জাহাজের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়েনি।

তাইওয়ানকে ঘিরে চীনের সাম্প্রতিক মহড়া

চীনের সর্বশেষ প্রকাশিত তাইওয়ান–কেন্দ্রিক মহড়ার নাম ছিল ‘স্ট্রেইট থান্ডার–২০২৫’, যা এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হয়। তবে গত ডিসেম্বরে বড় সমাবেশ চলাকালে বেইজিং আনুষ্ঠানিক কিছু ঘোষণা দেয়নি।

 

# ChinaMilitary# TaiwanCrisis #JapanDiplomacy# EastAsiaSecurity # MaritimeTension