যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন এইচ-১বি ভিসা আবেদনকারীদের ওপর নতুন করে কড়াকড়ি যাচাই শুরু করেছে। বিশেষ করে যেসব আবেদনকারীর অতীত কর্মজীবনে “সেন্সরশিপ”-এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ থাকতে পারে, তাদের ভিসা বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপ মূলত প্রযুক্তি খাতে কাজ করা বিদেশিদের ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে।
ওয়াশিংটনে প্রকাশিত নির্দেশনা অনুযায়ী, ২ ডিসেম্বর পাঠানো একটি অভ্যন্তরীণ স্মারকে সব মার্কিন মিশনকে জানানো হয়েছে যে এইচ-১বি আবেদনকারীদের কর্মজীবনের ইতিহাস খুব ঘনিষ্ঠভাবে যাচাই করতে হবে।
লিংকডইন প্রোফাইল ও রিজুমে দেখে দেখা হবে—তারা ভুল তথ্য, ভুয়া প্রচার, কনটেন্ট মডারেশন, ফ্যাক্ট-চেকিং, অনলাইন সেফটি বা কমপ্লায়েন্স-সংক্রান্ত কাজে যুক্ত ছিলেন কি না।
স্মারকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপের প্রমাণ পাওয়া গেলে অভিবাসন আইনের প্রাসঙ্গিক অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আবেদনকারীকে “অযোগ্য” ঘোষণা করতে হবে।

কেন এইচ-১বি আবেদনকারীদের ওপর বাড়তি নজর
স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলছে, প্রযুক্তিখাতে কর্মরত অনেক বিদেশি—বিশেষত ভারত ও চীন থেকে—এই ভিসার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত হন।
ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোতে বিদেশিদের এমন সব পদে রাখা হচ্ছে, যেখান থেকে তারা অনলাইন মতামত নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখতে পারে।
সেই কারণে এইচ-১বি আবেদনকারীদের ওপর আলাদা করে বাড়তি যাচাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই নীতি নতুন আবেদনকারী ছাড়াও পুনরায় ভিসা আবেদনকারীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
‘আমরা বিদেশি সেন্সর চাই না’
স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক মুখপাত্র বলেন, “আমরা এমন বিদেশিদের সমর্থন করি না যারা যুক্তরাষ্ট্রে এসে আমেরিকানদের মুখ বন্ধ করতে কাজ করবে।”
তিনি আরও দাবি করেন, অতীতে ট্রাম্প নিজেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার অ্যাকাউন্ট বন্ধ হওয়ায় ‘সেন্সরশিপের শিকার’ হয়েছিলেন।
মুখপাত্র বলেন, “রাষ্ট্রপতি চান না অন্য আমেরিকানরা একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হোক।”

ইউরোপ ও সামাজিক মাধ্যম নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসন বিদেশনীতি হিসেবে ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা’কে বড় বিষয় করছে।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ডানপন্থী রাজনীতিবিদদের বক্তব্য দমন করা হচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্র এসব দেশকে সমালোচনা করেছে।
এপ্রিল-মে মাসে মার্কো রুবিও হুমকি দেন—যারা আমেরিকানদের বক্তব্য দমন করবে, তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে।
আগের কড়াকড়ি: ছাত্রভিসা ও নতুন ফি
ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যে ছাত্রভিসা আবেদনকারীদের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিল।
গত সেপ্টেম্বর এইচ-১বি ভিসার ওপর নতুন ফিও আরোপ করা হয়েছে, যা অভিবাসন-সংক্রান্ত বৃহত্তর কঠোর অবস্থানের অংশ।
প্রেক্ষাপট: ট্রাম্প বনাম বাইডেন প্রশাসনের নীতি বিরোধ
ট্রাম্প ও রিপাবলিকানরা বহুবার অভিযোগ করেছেন—বাইডেন প্রশাসন অনলাইনে বক্তব্য নিয়ন্ত্রণে উৎসাহ দিয়েছে, বিশেষ করে ভ্যাকসিন ও নির্বাচন নিয়ে ভুল তথ্য ঠেকাতে নেওয়া উদ্যোগের মাধ্যমে ‘মত প্রকাশের দমন’ হয়েছে বলে তাদের দাবি।
#H1B #USVisa #TrumpAdministration #FreeSpeech #ImmigrationPolicy
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















