উত্তর সুমাত্রায় ভয়াবহ বন্যা-ভূমিধসে ব্যাপক ক্ষতি
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপে ঘূর্ণিঝড়–সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে ধানক্ষেত, ঘরবাড়ি ও অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশটির কৃষিমন্ত্রী আন্দি আমরান সুলাইমান ঘোষণা দিয়েছেন, দুই মাসের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত হাজার হাজার হেক্টর ধানক্ষেত পুনর্গঠন করা হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সময়সীমা বাস্তবসম্মত নয়।
সরকারি উদ্যোগে দ্রুত পুনর্গঠনের অঙ্গীকার
উত্তর সুমাত্রার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে কৃষিমন্ত্রী জানান, সরকার বিনামূল্যে যন্ত্রপাতি ও বীজ সরবরাহ করবে। স্থানীয় ঠিকাদার নিয়োগের অনুমতি দেওয়া হবে এবং সব ব্যয় কেন্দ্রীয় সরকার বহন করবে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, আচেহে ১ লাখ ১৯ হাজার হেক্টর এবং উত্তর সুমাত্রায় ৩৩ হাজার হেক্টর ধানক্ষেত নষ্ট হয়েছে। এই ক্ষতি আচেহের মোট জমির প্রায় ৪০% এবং উত্তর সুমাত্রার প্রায় ৬%।

মৃত্যু ৮৬৭, নিখোঁজ ৫২১ — বিশাল মানবিক বিপর্যয়
বন্যা ও ভূমিধসে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬৭ জনে। নিখোঁজ অন্তত ৫২১ জন, আহত ৪,২০০-এর বেশি। লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি, বিদ্যালয় ও সেতু।
বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা: ‘দুই মাসে সম্ভব নয়’
আইপিবি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিশেষজ্ঞ দ্বি আন্দ্রেয়াস সান্তোসা বলেছেন, আগামী দুই মাস প্রবল বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে, ফলে এখন রোপণ অসম্ভব। মার্চের আগে পুনরায় চাষ শুরু করা যাবে না। তিনি বলেন, সীমিত ক্ষতির ক্ষেত্রে দুই মাস যথেষ্ট, কিন্তু সুমাত্রার বিপর্যয় তার অনেক বড় মাত্রার।

কাঠের বিশাল ধ্বংসাবশেষে পানি–প্রবাহ ব্যাহত হওয়ায় দ্রুত পুনর্গঠন আরও কঠিন হয়ে পড়বে বলেও জানান তিনি।
বিদেশি সাহায্য প্রস্তাব নাকচ জাকার্তার
জাইকা-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা সহায়তার প্রস্তাব দিলেও ইন্দোনেশিয়া সরকার বলছে, তারা নিজেরাই পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম। ক্ষতিগ্রস্ত আচেহ অঞ্চলের অনেক স্থানে এখনো পৌঁছানো যাচ্ছে না, জ্বালানির সংকটও দেখা দিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুগিয়োনো জানান, বিদেশি সহায়তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হলেও আপাতত তা গ্রহণের দরকার নেই।

সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















