চীন সম্প্রতি ফ্র্যাকিং প্রযুক্তিতে যে অগ্রগতি অর্জন করেছে, তা দেশের জ্বালানি নিরাপত্তাকে আরও শক্তিশালী করতে পারে এবং বৈশ্বিক তেলবাজারের শক্তির ভারসাম্য বদলে দিতে সক্ষম। নতুন এই প্রযুক্তি দেশটিকে যুক্তরাষ্ট্রের মতোই শেল বিপ্লবের পথে এগিয়ে নিতে পারে।
চীনের শেল সম্ভাবনা
যুক্তরাষ্ট্র গত শতকের শুরুতে শেল তেল উত্তোলনের মাধ্যমে বিশ্বের সর্ববৃহৎ অপরিশোধিত তেল উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হয়। এই পরিবর্তন আন্তর্জাতিক তেলবাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে এবং ওপেকভুক্ত দেশগুলোর বাজারক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। কারণ বিশ্বের অপ্রচলিত তেলের মজুত, বিশেষ করে শেল শিলা থেকে প্রাপ্ত তেল, প্রচলিত তেলের তুলনায় অনেক বেশি।
মার্কিন জ্বালানি তথ্য প্রশাসন (EIA) অনুযায়ী, চীন বিশ্বের সর্ববৃহৎ পুনরুদ্ধারযোগ্য শেল গ্যাস এবং তৃতীয় সর্ববৃহৎ পুনরুদ্ধারযোগ্য শেল তেল মজুতের অধিকারী। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অপরিশোধিত তেল আমদানিকারক দেশ হিসেবে, চীন যদি বাণিজ্যিকভাবে এই শেল মজুত ব্যবহার করতে পারে, তবে তা ওপেক ও তার মিত্রদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ
চীনের শেল সম্পদ সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় অনেক গভীরে অবস্থান করে। এই গভীর স্তরে পৌঁছে শেল উত্তোলন করা সবসময়ই বড় প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ ছিল। ফলে এতদিন দেশটির শেল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও তার সম্পূর্ণ ব্যবহার সম্ভব হয়নি।

নতুন সফলতা: জিনজিয়াংয়ের জিমসার শেল তেল অঞ্চল
মঙ্গলবার জিনজিয়াংয়ের জিমসার শেল তেল প্রদর্শনী অঞ্চল, যা চীনের প্রথম জাতীয় পর্যায়ের শেল প্রকল্প, বার্ষিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা আগেই অর্জন করে। ১.৭ মিলিয়ন টন অপরিশোধিত তেল উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারিত সময়ের ২২ দিন আগে পূর্ণ হয়েছে। এই সাফল্য চীনের নতুন গভীর-স্তর ফ্র্যাকিং প্রযুক্তির সক্ষমতার উল্লেখযোগ্য প্রমাণ বলে বিবেচিত হচ্ছে।
চীনের এই প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ভবিষ্যতে দেশটির শেল বিপ্লবকে ত্বরান্বিত করতে পারে। এটি শুধু নিজেদের জ্বালানি নিরাপত্তাকেই মজবুত করবে না, বরং বৈশ্বিক তেলবাজারে ওপেকের প্রভাবকেও নতুনভাবে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















