দোহায় বহুপক্ষীয় নিরাপত্তা পরিকল্পনা
১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গাজায় একটি প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী গঠনের বিস্তারিত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের নেতৃত্বে আয়োজিত এই বৈঠকে ২৫টিরও বেশি দেশের সামরিক ও কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন। আয়োজকরা বলছেন, এটি গাজায় দীর্ঘ সংঘাতের পর নিরাপত্তা ও পুনর্গঠন ব্যবস্থার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
এই উদ্যোগটি একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির পরবর্তী পর্যায়ের অংশ, যা কয়েক মাসের সহিংসতা থামিয়েছে এবং ব্যাপক ধ্বংসের পর একটি আপাত শান্ত পরিবেশ তৈরি করেছে। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই বাহিনীর মূল লক্ষ্য হবে নিরাপত্তা বজায় রাখা, মানবিক সহায়তার পথ সুরক্ষিত করা এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার জন্য স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করা। এটি সরাসরি যুদ্ধ পরিচালনার জন্য নয়, যা আন্তর্জাতিক সমর্থন পাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে।

সম্মেলনে বাহিনীর আইনি কাঠামো, নেতৃত্ব পদ্ধতি এবং মোতায়েনের শর্তাবলি নিয়ে আলোচনা হবে। গাজায় বিদ্যমান স্থানীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার সঙ্গে এই বাহিনীর সমন্বয় কীভাবে হবে, সেটি একটি বড় প্রশ্ন হিসেবে উঠে এসেছে। কূটনীতিকদের মতে, এসব বিষয় সমাধান না হলে বাহিনীর কার্যকারিতা সীমিত হতে পারে।
বাহিনীর কাঠামো ও আন্তর্জাতিক অবদান
মোতায়েন ও তদারকির প্রস্তুতি
দোহায় আলোচনায় অংশগ্রহণকারী দেশগুলো বাহিনীর সদস্যসংখ্যা, রসদ সরবরাহ, চিকিৎসা সহায়তা এবং আবাসন ব্যবস্থার মতো বাস্তব বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। বেশ কয়েকটি দেশ সেনা বা সহায়ক জনবল দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তার ওপর। কর্মকর্তারা বলছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালের জানুয়ারিতেই প্রাথমিক মোতায়েন শুরু হতে পারে।

যদিও যুক্তরাষ্ট্র সংগঠনের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে, তবুও এই বাহিনীকে বহুজাতিক হিসেবে পরিচালনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, একজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা সমন্বয় দায়িত্বে থাকতে পারেন, তবে দৈনন্দিন কার্যক্রমে বিভিন্ন দেশের সেনা ও বিশেষজ্ঞরা অংশ নেবেন। প্রকৌশল, চিকিৎসা ও পুনর্গঠন সহায়তা এই মিশনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে।
এই পরিকল্পনার পেছনে রয়েছে ২০২৫ সালের নভেম্বরে গৃহীত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাব, যেখানে গাজায় স্থিতিশীলতা ও অন্তর্বর্তী প্রশাসনিক ব্যবস্থার জন্য আন্তর্জাতিক কাঠামোর অনুমোদন দেওয়া হয়। এই কাঠামোর আওতায় একটি তদারকি বোর্ড বাহিনীর সঙ্গে কাজ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সমালোচকরা সতর্ক করছেন, রাজনৈতিক সমাধান স্পষ্ট না হলে এই বাহিনী দীর্ঘমেয়াদে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।

সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















