সিরিয়া ছেড়ে পালানোর এক বছরেরও বেশি সময় পর মস্কোতে নিঃশব্দ, বিলাসী কিন্তু নিঃসঙ্গ জীবন কাটাচ্ছেন ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। ফাঁস হওয়া তথ্য ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের অনুসন্ধান বলছে, নির্বাসনে থেকেও তিনি রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণ দূরে রাখা হয়েছেন এবং আবার মনোযোগ দিচ্ছেন চক্ষু চিকিৎসা শাস্ত্রে।
নির্বাসনের ঠিকানা ও জীবনযাপন
প্রতিবেদন অনুযায়ী, আসাদ বর্তমানে মস্কোর পশ্চিমে অভিজাত ও সুরক্ষিত আবাসিক এলাকা রুবলিওভকার আশপাশে বসবাস করছেন। এলাকাটি রাশিয়ার রাজনৈতিক ও আর্থিক অভিজাতদের জন্য পরিচিত। বিপুল সম্পদ ও কড়া নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও তার জীবনযাপন বেশ বিচ্ছিন্ন। মস্কোর ক্ষমতাকেন্দ্রে তাকে রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বহীন হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

চিকিৎসাবিদ্যায় ফিরে দেখা
পরিবারঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, আসাদ রুশ ভাষা শেখার পাশাপাশি আবার চক্ষু চিকিৎসা নিয়ে পড়াশোনায় মন দিয়েছেন। লন্ডনে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই চক্ষু চিকিৎসক ক্ষমতায় আসার আগেও চিকিৎসাবিদ্যায় গভীর আগ্রহী ছিলেন। নির্বাসনের জীবনে সেই পুরনো আগ্রহেই যেন আশ্রয় খুঁজছেন তিনি।
রাজনীতি ও গণমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা
রুশ কর্তৃপক্ষ তাকে যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও গণমাধ্যমে উপস্থিতি থেকে কঠোরভাবে বিরত রেখেছে। ইরাকে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতও সম্প্রতি নিশ্চিত করেছেন, নিরাপত্তার মধ্যেই থাকলেও আসাদের প্রকাশ্যে আসার কোনো অনুমতি নেই।

হঠাৎ পতন ও পলায়ন
২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে দামেস্কের দিকে বিরোধী বাহিনীর অগ্রযাত্রার মুখে আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হন। রাতারাতি রাশিয়ার সহায়তায় দেশ ছাড়েন তিনি। চৌদ্দ বছরের গৃহযুদ্ধে ছয় লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু এবং প্রায় এক কোটি চৌদ্দ লাখ মানুষের বাস্তুচ্যুতি ঘটে। সূত্রগুলো জানায়, পালানোর আগে তিনি ঘনিষ্ঠ মিত্র বা পরিবারের অনেক সদস্যকেও সতর্ক করেননি। ফলে সরকার পতনের সময় তাদের অনেককেই প্রাণ বাঁচাতে হুড়োহুড়ি করে পালাতে হয়।
নির্বাসনের নীরব অধ্যায়
মস্কোতে নিরাপদ আশ্রয় পেলেও আসাদের এই অধ্যায় যেন সম্পূর্ণ নীরব। রাজনীতির মঞ্চ থেকে সরে গিয়ে চিকিৎসাবিদ্যার বই আর নিঃসঙ্গতার মাঝেই কাটছে এক সময়ের প্রভাবশালী শাসকের দিন।

সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















