অনলাইন প্রতারণার শিকার মানুষদের নতুন করে টার্গেট করছে সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র। এবার তারা নিজেকে তুলে ধরছে আইন পেশার প্রতিনিধি হিসেবে। বিজ্ঞাপনে দাবি—হারানো অর্থের ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত উদ্ধার সম্ভব।
মালয়েশিয়ার এমসিএ পাবলিক সার্ভিসেস অ্যান্ড কমপ্লেইন্টস ডিপার্টমেন্টের প্রধান দাতুক সেরি মাইকেল চং জানান, এই প্রতারকরা আইনজীবীদের প্রতি মানুষের স্বাভাবিক আস্থাকেই হাতিয়ার করছে। নিজেদের আইন ফার্ম বলে পরিচয় দিয়ে তারা অনলাইন স্ক্যামের শিকারদের নতুন করে ফাঁদে ফেলছে।
ভরসার পেশাকে ঢাল বানিয়ে প্রতারণা
সংবাদ সম্মেলনে চং বলেন, “আমি এমন বহু মামলা দেখেছি। বাস্তবে কারও এক পয়সাও ফেরত আসেনি।” তার অভিজ্ঞতায়, ৯৫ শতাংশ সফলতার দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। বরং এই বিজ্ঞাপনই তাকে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন করছে।
তিনি জানান, অনেক ভুক্তভোগী শেষ পর্যন্ত সুদখোর মহাজনের কাছ থেকে টাকা ধার করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে তারা আরও গভীর সংকটে পড়ছেন। গত দুই বছরে এমন অন্তত দুটি গুরুতর মামলার সঙ্গে কাজ করেছে তার দপ্তর।
এক ঘটনায়, অনলাইন স্ক্যামে ১,৫০০ রিঙ্গিত হারানো এক নারী এই ভুয়া আইনি সেবার বিজ্ঞাপনে সাড়া দিয়ে শেষ পর্যন্ত ১২ লাখ রিঙ্গিত ঋণের বোঝায় পড়েন। আরেক ঘটনায়, ৩ লাখ ৯০ হাজার রিঙ্গিত হারানো এক ব্যক্তি পরে আরও ৩৩ হাজার রিঙ্গিত খুইয়েছেন।
চীনা সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে ‘হুকিং’ কৌশল
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তান শ্রী মুহাম্মদ শাফি আবদুল্লাহ বলেন, তার অভিজ্ঞতায় এসব প্রতারণা মূলত চীনা সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করেই পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “অনেক ক্লায়েন্টই জানতে চান—সফলতার হার কত? ৮০ শতাংশের বেশি শুনলেই তারা আগ্রহী হন।” শাফির মতে, ৯৫ শতাংশ অর্থ উদ্ধারের দাবি আসলে একটি ‘হুকিং মেথড’। আকর্ষণীয় গল্প দিয়ে মানুষকে টেনে এনে ধীরে ধীরে সর্বস্বান্ত করা হয়।
তিনি আরও জানান, এই চক্র বিভিন্ন নাম ব্যবহার করে। যেমন ‘ক্রস বর্ডার ল’—শুনতে আন্তর্জাতিক ও শক্তিশালী মনে হলেও বাস্তবে তার কোনো ভিত্তি নেই। বিজ্ঞাপনে ‘রিঙ্গিত’ শব্দ ব্যবহারের দিকেই তিনি ইঙ্গিত করেন। তার ভাষায়, “আন্তর্জাতিক আইন ফার্ম হলে তারা কেন শুধু মালয়েশিয়ানদের লক্ষ্য করবে?”
এই প্রতারণা ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখন তৎপর। তবে সতর্ক না হলে আইন পেশার নামেই আরও বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















