২০২৬ সালের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠনটির দাবি, ওই নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীরা আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে নির্বাচন ব্যবস্থার ন্যায্যতা ও সংস্কারের উদ্যোগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
নির্বাচন কমিশনে আইনি নোটিশ
বুধবার নির্বাচন কমিশনের কাছে এ দাবির পক্ষে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি রিফাত রশিদ। তিনি বলেন, ২০২৪ সালের তথাকথিত ‘ডামি নির্বাচনে’ অংশ নেওয়া কোনো প্রার্থী যেন আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন, সে জন্য নির্বাচন কমিশনকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে কমিশনে আইনি নোটিশও জমা দেওয়া হয়েছে।
রাজধানীর নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন রিফাত রশিদ। বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিল, যারা ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিল।
আদালত ও রাজপথে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
রিফাত রশিদ বলেন, যদি ২০২৪ সালের নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়, তবে তারা আদালতের দ্বারস্থ হবেন এবং একই সঙ্গে রাজপথে আন্দোলনে নামবেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের জনগণ ইতোমধ্যে ওই প্রার্থীদের প্রত্যাখ্যান করেছে, তাই তাদের আসন্ন নির্বাচন থেকে দূরে রাখা উচিত।
নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ
বর্তমান নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। রিফাত রশিদের দাবি, দেশের নির্বাচন পরিবেশ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়। জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া অনেকেই এখন প্রাণনাশের হুমকির মুখে রয়েছেন এবং বিদেশে পালিয়ে থাকা ব্যক্তিরা হত্যার ষড়যন্ত্র করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সমন্বয়কদের বক্তব্য
সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক হাসিব আল ইমরান বলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বাইরে থেকেও কিছু প্রার্থী সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। তবে তার অভিযোগ, তারা জুলাই আন্দোলনের সময় সংঘটিত গণহত্যাকে সমর্থন করেছিলেন।
এই কারণে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ওই নির্বাচনে যারা অংশ নিয়েছেন, তাদের কাউকেই ২০২৬ সালের নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া উচিত নয়। এ দাবির বাস্তবায়নে নির্বাচন কমিশনকে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে, যাতে কোনো অবস্থাতেই তারা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন।
নির্বাচনের সময়সূচি
উল্লেখ্য, গত ১১ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ বিষয়ক গণভোট একসঙ্গে আয়োজনের সময়সূচি ঘোষণা করে। ঘোষিত সূচি অনুযায়ী, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
নির্বাচন সূচি অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৯ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই চলবে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২০ জানুয়ারি।
ভোটের প্রচার শুরু হবে ২২ জানুয়ারি থেকে এবং ভোটগ্রহণ শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগে, অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে সাতটায় প্রচার শেষ হবে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















