হলিউডে বহু বছর ধরে রাজনীতি ছিল যেন পাশ কাটিয়ে যাওয়ার বিষয়। বড় বাজেট, তারকাবহুল ছবি আর জাঁকজমকপূর্ণ বিপণনের ভিড়ে সমসাময়িক রাজনৈতিক বাস্তবতা প্রায়ই আড়ালেই থেকেছে। তবে দুই হাজার পঁচিশ সাল এসে সেই সমীকরণ বদলে দিয়েছে। নানা ঘরানার নির্মাতারা এবার সরাসরি সময়ের অস্থিরতা, ক্ষমতা, প্রযুক্তি আর রাজনৈতিক টানাপোড়েনকে তুলে ধরছেন রুপালি পর্দায়।
সময়ের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠছে সিনেমা
চলতি বছরের আলোচিত ছবিগুলোর দিকে তাকালেই বোঝা যায়, নির্মাতারা আর শুধু অতীত বা কল্পনার জগতে আটকে নেই। মহামারি-পরবর্তী বাস্তবতা, সামাজিক মাধ্যমে ভুয়া তথ্যের বিস্তার, প্রযুক্তির অদৃশ্য ক্ষমতা এবং রাজনৈতিক বিভাজন—সবই সিনেমার গল্পে ঢুকে পড়েছে। দর্শকের কাছে এসব ছবি কখনো অস্বস্তিকর, কখনো স্বস্তিদায়ক হলেও একটি বিষয় স্পষ্ট, হলিউড এখন সময়কে ব্যাখ্যা করতে চাইছে।
ভিন্ন ঘরানায় একই প্রশ্ন
ভৌতিক গল্প থেকে শুরু করে সুপারহিরো কিংবা রহস্যঘেরা কাহিনি—সবখানেই রাজনৈতিক ইঙ্গিত স্পষ্ট। কোথাও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ছায়া, কোথাও জাতীয়তাবাদ আর ক্ষমতালোভী নেতাদের সমালোচনা, আবার কোথাও প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলা রাজনৈতিক লড়াইয়ের গল্প। নির্মাতারা সরাসরি ভাষণের বদলে রূপক, ইতিহাস আর কল্পনার আশ্রয় নিচ্ছেন, যাতে দর্শক নিজের মতো করে অর্থ খুঁজে নিতে পারেন।

বাণিজ্যিক সাফল্য ও দ্বন্দ্ব
চমকপ্রদ বিষয় হলো, এসব রাজনৈতিক ইঙ্গিতপূর্ণ ছবির অনেকগুলো বক্স অফিসে সফল। সমালোচকদের প্রশংসার পাশাপাশি দর্শকও হলমুখী হচ্ছেন। তবে এর মধ্যেই তৈরি হচ্ছে এক ধরনের দ্বন্দ্ব। যেসব স্টুডিও এসব ছবি মুক্তি দিচ্ছে, তারাই আবার বাস্তব রাজনীতির প্রশ্নে অনেক সময় সতর্ক অবস্থান নিচ্ছে। লাভ, বিনিয়োগ আর ক্ষমতার সমীকরণে সিনেমার বার্তা যেন দ্বিমুখী হয়ে উঠছে।
ভবিষ্যতের ইঙ্গিত
এই প্রবণতা কি স্থায়ী হবে, নাকি মুনাফার চাপে আবার নীরবতায় ফিরবে হলিউড—সে প্রশ্নের উত্তর এখনও স্পষ্ট নয়। তবে দুই হাজার পঁচিশ সালকে অনেকেই দেখছেন এক মোড় ঘোরানো সময় হিসেবে। যেখানে জনপ্রিয় বিনোদনের আড়াল ভেঙে রাজনীতি আবারও গল্পের কেন্দ্রে ফিরে এসেছে।
#হলিউড #সিনেমা #রাজনীতি #চলচ্চিত্রবিশ্লেষণ #বিশ্বসংস্কৃতি #সময়েরগল্প
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















