যুক্তরাষ্ট্রে নভেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি প্রত্যাশার চেয়ে কিছুটা কমেছে। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, এক বছর আগের তুলনায় ভোক্তা মূল্য বেড়েছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ, যা সেপ্টেম্বরের ৩ শতাংশের নিচে এবং অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাসের চেয়েও কম। তবে এই পরিসংখ্যান ঘিরে বড় প্রশ্ন উঠেছে, কারণ দীর্ঘ সরকারি শাটডাউনের কারণে তথ্য সংগ্রহে বড় ধরনের ঘাটতি ছিল বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা
শাটডাউনের প্রভাব ও তথ্য ঘাটতি
নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলা সরকারি শাটডাউনের সময় শ্রম দপ্তরের কর্মীরা মাঠপর্যায়ে অনেক পণ্যের দাম সংগ্রহ করতে পারেননি। ফলে ভোক্তা মূল্য সূচক তৈরিতে বিকল্প পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে, যা প্রকৃত মূল্যস্ফীতি কম দেখাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অক্টোবর মাসের পূর্ণাঙ্গ মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদন না থাকায় টানা দুই মাসের পরিবর্তন বিশ্লেষণ করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থা বোঝা আরও জটিল হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই প্রতিবেদনকে খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়া ঠিক হবে না। অনেকের মতে, এটি সাময়িকভাবে মূল্যস্ফীতি কমানোর ইঙ্গিত দিলেও বড় অংশই পরিসংখ্যানগত গোলমাল। বিশেষ করে আবাসন খরচের ক্ষেত্রে অক্টোবরের তথ্য না থাকায় ভাড়া বৃদ্ধির হার বাস্তবের চেয়ে কম দেখাতে পারে। সাধারণ সময়ে এমন হঠাৎ কমে যাওয়া খুবই অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

বাজারের প্রতিক্রিয়া
প্রতিবেদন প্রকাশের পর ট্রেজারি বন্ডের সুদের হারে বড় পরিবর্তন দেখা যায়নি। তবে শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। প্রধান সূচক গুলো বেড়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের আংশিক স্বস্তির ইঙ্গিত দেয়। খাদ্য ও জ্বালানি বাদ দিয়ে মূল মূল্যস্ফীতি ও প্রত্যাশার নিচে ছিল।
ফেড ও নীতিনির্ধারকদের দুশ্চিন্তা
ফেডারেল রিজার্ভের নীতিনির্ধারকদের সামনে এখনো বিভক্ত মত রয়েছে। একদল মনে করেন মূল্যস্ফীতি বড় ঝুঁকি, অন্যদের দুশ্চিন্তা শ্রমবাজার নিয়ে। ফেড চেয়ারম্যান আগেই সতর্ক করেছিলেন যে শাটডাউনের কারণে নভেম্বরের তথ্য বিকৃত হতে পারে। আগামী বৈঠকের আগে আরও একটি মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদন পাওয়া যাবে, সেটিকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।
শুল্ক, দাম ও ভোক্তাদের চাপ
এ বছর জুড়ে শুল্ক নীতি মূল্যস্ফীতি আলোচনার কেন্দ্রে ছিল। অনেক প্রতিষ্ঠান শুল্কের বাড়তি খরচ ভোক্তাদের ওপর চাপিয়েছে। তামাক ও ব্যবহৃত গাড়ির মতো পণ্যে দাম বাড়ার প্রবণতা স্পষ্ট। জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে অসন্তোষ বাড়ায় স্থানীয় নির্বাচন ও সরকারের অর্থনৈতিক বার্তাতেও এর প্রভাব পড়ছে।

আগামী মাসের অপেক্ষা
অর্থনীতিবিদ ও বিনিয়োগকারীরা এখন জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির পরিসংখ্যানের দিকে তাকিয়ে আছেন। বছরের শুরুতে অনেক প্রতিষ্ঠান নতুন করে দাম সমন্বয় করে। তখনই স্পষ্ট হবে, নভেম্বরের এই কম মূল্যস্ফীতি বাস্তব প্রবণতা নাকি তথ্য ঘাটতির ফল।
#যুক্তরাষ্ট্রের_মূল্যস্ফীতি #মার্কিন_অর্থনীতি #মূল্যস্ফীতি_সংবাদ #শাটডাউন_প্রভাব #ফেডারেল_রিজার্ভ #ভোক্তা_দাম #বিশ্ব_অর্থনীতি
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















