ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে আগামী দুই বছরে নব্বই বিলিয়ন ইউরো আর্থিক সহায়তার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ইউক্রেন। রুশ সম্পদ ব্যবহারের বিষয়ে ঐকমত্য না হলেও এই ঋণ দেশটির অর্থনৈতিক ও যুদ্ধকালীন সক্ষমতা ধরে রাখতে বড় সহায়তা দেবে বলে মনে করছে কিয়েভ।
ব্রাসেলসে ইইউ নেতাদের শীর্ষ বৈঠকের পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, এই সহায়তা ইউক্রেনের স্থিতিশীলতা ও প্রতিরোধক্ষমতা জোরদার করবে। তাঁর মতে, কঠিন বাস্তবতায় এই সিদ্ধান্ত দেশটির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইইউর ভেতরে দীর্ঘ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ ব্যবহার করে ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনা। তবে রাজনৈতিক ও আইনি জটিলতার কারণে সেই উদ্যোগে ঐকমত্য হয়নি। শেষ পর্যন্ত ইইউ নিজেই ঋণ নিয়ে ইউক্রেনকে সহায়তা দেওয়ার পথে হাঁটে।
ইউক্রেনের অর্থনৈতিক সংকট ও যুদ্ধের বাস্তবতা
ইইউ নেতারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, আর্থিক সহায়তা না পেলে আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়েই ইউক্রেনের তহবিল ফুরিয়ে যেতে পারে। এতে যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার বিরুদ্ধে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে, যা ইউরোপের নিরাপত্তার জন্যও ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া ও পুতিনের মন্তব্য
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, রুশ সম্পদ ব্যবহার করা হলে তা প্রকাশ্য লুটপাটের শামিল হতো। তাঁর দাবি, এর পরিণতি ভয়াবহ হতে পারত এবং ইউরোজোনের ওপর আস্থা নষ্ট হতো। তিনি আরও বলেন, অনেক দেশ ইউরোপে তাদের স্বর্ণ ও বৈদেশিক মুদ্রার মজুত রাখে, তাই এমন পদক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর।

বেলজিয়াম ও জার্মানির ভূমিকা
ইউরোপে জব্দ করা রুশ সম্পদের বড় অংশ বেলজিয়ামে থাকায় দেশটি সম্ভাব্য আর্থিক ও আইনি ঝুঁকি নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেরৎস রুশ সম্পদভিত্তিক ঋণের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিলেও শেষ পর্যন্ত সমাধান হয়নি। তবু তিনি বলেন, বর্তমান সিদ্ধান্ত ইউক্রেনের জন্য ভালো এবং রাশিয়ার জন্য অস্বস্তিকর।
সমঝোতার মূল্যায়ন
ইউক্রেনের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই কিসলিৎসিয়া বলেন, সবকিছু নিখুঁত না হলেও কার্যকর সমাধান বের করাই ছিল জরুরি। ইউরোপীয় নেতারা দীর্ঘ আলোচনার পর একটি বাস্তবসম্মত পথ খুঁজে পেয়েছেন বলে তিনি মনে করেন।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ঋণ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ থাকবে এবং ইইউ যদি সমাধানে পৌঁছাতে না পারত, তবে তা প্রতীকী বিপর্যয় হতো।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















