মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক মাদকচক্রের বিরুদ্ধে বড় সাফল্যের দাবি করেছে দেশটির পুলিশ। রাজধানী কুয়ালালামপুর ও আশপাশের এলাকায় ধারাবাহিক অভিযানে জব্দ করা হয়েছে প্রায় ১৮ টনের বেশি মাদক। বাজারমূল্যে যার দাম প্রায় একশ তিপ্পান্ন কোটি রিঙ্গিতেরও বেশি। এটিকে দেশটির ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ মাদক জব্দ এর ঘটনা হিসেবে দেখছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ক্লাং ভ্যালিতে একযোগে অভিযান
পুলিশ জানায়, গত ষোল ডিসেম্বর ক্লাং ভ্যালির বিভিন্ন এলাকায় একযোগে অভিযান চালানো হয়। এ সময় তিনজন স্থানীয় পুরুষ ও তিনজন বিদেশি নারীসহ মোট ছয়জনকে আটক করা হয়। অভিযানের সময় একটি তিনতলা বাংলোতে গড়ে তোলা বড় ধরনের মাদক প্রক্রিয়াজাতকরণ ল্যাবের সন্ধান পাওয়া যায়। পাশাপাশি আরও কয়েকটি বাড়ি ও বাণিজ্যিক স্থাপনাকে মাদক সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছিল।
বিভিন্ন স্থানে বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার
মালয়েশিয়ার মাদক অপরাধ তদন্ত বিভাগের প্রধান হুসেইন ওমর খান জানান, প্রথম অভিযানে চেরাস এলাকার একটি বাড়ি থেকে তরল আকারের সন্দেহজনক মাদক উদ্ধার করা হয়। পরবর্তী অভিযানে কোকেনের গুঁড়া ও তরল কোকেন সহ বিপুল পরিমাণ মাদক এবং আধুনিক প্রক্রিয়াজাতকরণ সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। আর একটি শিল্প এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে কেটামিনের গুঁড়া ও তরল আকারের বড় চালান উদ্ধার করে পুলিশ।
তার ভাষ্য অনুযায়ী, মোট জব্দের মধ্যে রয়েছে এমডিএমএ, কোকেন ও কেটামিন মিলিয়ে প্রায় আঠারো টনের বেশি মাদক। এই মাদক দিয়ে প্রায় ছয় কোটি আশি লাখ মানুষের কাছে সরবরাহ করা সম্ভব ছিল বলে ধারণা পুলিশের।
চক্রের কাঠামো ও আন্তর্জাতিক সংযোগ
তদন্তে উঠে এসেছে, আটক স্থানীয় একজন এই চক্রের গুদাম তত্ত্বাবধায়ক ও সহকারী রসায়নবিদ হিসেবে কাজ করতেন। বাকি দুজন স্থানীয় সহযোগী বিভিন্ন বাড়ি ও ব্যবসায়িক স্থাপনা পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। আটক তিন বিদেশি নারী ছিলেন মূল অভিযুক্তদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের মানুষ। পুলিশ বলছে, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে এই চক্র আন্তর্জাতিক বাজার লক্ষ্য করে কার্যক্রম চালাচ্ছিল এবং এর আগেও বিদেশে মাদকের চালান পাঠানো হয়েছে।
আইনি ব্যবস্থা ও পুলিশের বার্তা
আটক স্থানীয় তিনজনের শরীরে মাদক সেবনের আলামত পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনে মামলা করা হয়েছে এবং সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অভিযানে ছয়টি যানবাহন জব্দ করা হয়েছে। পুলিশ স্পষ্ট করে জানিয়েছে, মাদক কারবারির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। মাদককে দেশের এক নম্বর শত্রু হিসেবে উল্লেখ করে তারা জনসাধারণের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















