ইউক্রেন যুদ্ধ চতুর্থ বছরে প্রবেশের মুখে ইউরোপীয় দেশগুলো দ্রুত কোনো শান্তিচুক্তির পথে এগোনোর চাপের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। ইউরোপীয় কর্মকর্তারা বলছেন, কেবল সময় বাঁচানোর জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তা বা ইউক্রেনের মতামত উপেক্ষা করা হলে তা দীর্ঘমেয়াদে আরও বড় অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। ২০২৬ সালের রাজনৈতিক সময়সূচি ও অর্থনৈতিক চাপের কারণে আলোচনা বাড়লেও, এর গতি নিয়ে সতর্কতা বাড়ছে।
ইউরোপীয় কূটনীতিকদের মতে, আলোচনার মূল সমস্যা নীতিগত নয়, বরং প্রক্রিয়াগত। অধিকাংশ দেশই ভবিষ্যতে আলোচনার পক্ষে থাকলেও তারা জোর দিচ্ছে যে ইউক্রেনকে সিদ্ধান্তের কেন্দ্রেই থাকতে হবে। কিছু বড় শক্তির মধ্যে সমান্তরাল আলোচনা ইউক্রেনকে পর্যবেক্ষকের ভূমিকায় নামিয়ে আনতে পারে—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকেই।

জার্মানি ও ফ্রান্সের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা স্পষ্ট করেছেন, কোনো চুক্তিতে কার্যকর নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকলে তা টেকসই হবে না। অতীতে দুর্বল পর্যবেক্ষণ ও প্রয়োগের কারণে যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ার অভিজ্ঞতা এখনও ইউরোপীয় নীতিনির্ধারকদের মনে গভীরভাবে রয়েছে।
ন্যাটোর ভেতরেও মতভেদ স্পষ্ট হচ্ছে। কিছু দেশ দ্রুত উত্তেজনা কমানোর পক্ষে, আবার মধ্য ও পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো মনে করছে—ইউক্রেনকে শক্ত অবস্থানে রেখে আলোচনায় যেতে হলে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে। তাদের আশঙ্কা, এখনই ছাড় দিলে ভবিষ্যতে আগ্রাসন আরও উৎসাহিত হবে।
দেশীয় রাজনীতিও আলোচনায় প্রভাব ফেলছে। জ্বালানি ব্যয় বৃদ্ধি, বাজেট সংকোচন এবং ভোটারদের ক্লান্তি ইউরোপের অনেক দেশে নতুন প্রশ্ন তুলছে। তবুও অধিকাংশ সরকার ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছে।

ইউক্রেনের নেতৃত্ব বারবার বলেছে, সীমান্ত ও জবাবদিহির মতো মূল বিষয় স্থগিত রেখে কোনো অন্তর্বর্তী চুক্তি তারা গ্রহণ করবে না। তাদের মতে, বাধ্যতামূলক নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ছাড়া শান্তি মানেই অনিশ্চয়তা।
এই প্রেক্ষাপটে ইউরোপ এখন দ্রুততার চেয়ে সতর্কতাকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে। অনেক রাজধানীর দৃষ্টিতে, ত্রুটিপূর্ণ দ্রুত শান্তির চেয়ে ধীর কিন্তু নিরাপদ সমাধানই কম ঝুঁকিপূর্ণ।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















