চিকিৎসাবিজ্ঞানের দ্রুত অগ্রগতির এই সময়ে অনেক সময়ই বড় অর্জনগুলোকে স্বাভাবিক ধরে নেওয়া হয়। নিয়মিত নতুন আবিষ্কার হবে, রোগের নতুন চিকিৎসা আসবে—এমন প্রত্যাশাই গড়ে উঠেছে। দুই হাজার পঁচিশ সালেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। জিনভিত্তিক চিকিৎসার সফল পরীক্ষায় এমন সব রোগের চিকিৎসার আশা জেগেছে, যেগুলোর আগে কোনো কার্যকর সমাধান ছিল না। বিজ্ঞানী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছিল নতুন আশাবাদ।
কিন্তু এই উজ্জ্বল সাফল্যের আড়ালেই একই বছরে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো জনস্বাস্থ্যের অগ্রযাত্রাকে পিছিয়ে দিতে শুরু করেছে। হোয়াইট হাউস ও দেশটির শীর্ষ স্বাস্থ্য সংস্থা স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগ এমন কিছু নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিয়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের মৌলিক কাঠামোতেই আঘাত হেনেছে।
বৈশ্বিক স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে বড় ধাক্কা
বছরের শুরুতেই ভেঙে দেওয়া হয় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার কাঠামো। এর ফলে বন্ধ হয়ে যায় শিশুদের টিকাদানসহ জীবনরক্ষাকারী বহু বৈশ্বিক স্বাস্থ্য কর্মসূচি। দীর্ঘদিন ধরে যেসব উদ্যোগ বিশ্বের নানা প্রান্তে রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রেখে আসছিল, সেগুলো হঠাৎ করেই অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে।
গবেষণায় কাটছাঁট, থমকে যাওয়ার শঙ্কা
এরপর বড় ধাক্কা আসে জাতীয় স্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানে। বাজেট ও জনবল কমিয়ে দেওয়া হয় এমন একটি প্রতিষ্ঠানে, যেখান থেকে উদ্ভাবিত হয়েছে এমআরএনএ কোভিড টিকা ও ক্যানসারের ইমিউনোথেরাপির মতো যুগান্তকারী চিকিৎসা। গবেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে ভবিষ্যতের চিকিৎসা উদ্ভাবনের গতি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

টিকা নিয়ে সন্দেহ, বাড়ছে ঝুঁকি
এদিকে নতুন কোনো বৈজ্ঞানিক তথ্য না থাকা সত্ত্বেও রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা টিকার নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে মানুষের মধ্যে টিকা নিয়ে ভয় বাড়তে পারে এবং সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব আবারও মাথাচাড়া দিতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের আশঙ্কা
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, এই বছরের পিছু হটার সিদ্ধান্তগুলোর প্রভাব বহু বছর ধরে অনুভূত হবে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতি যেখানে মানুষের জীবন বাঁচানোর নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছিল, সেখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ সেই অগ্রযাত্রাকেই প্রশ্নের মুখে ফেলছে।
#জনস্বাস্থ্য #চিকিৎসাবিজ্ঞান #টিকা #গবেষণা #স্বাস্থ্যনীতি #বিশ্বস্বাস্থ্য
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















